রক্ত ঝরাতে পারি, জেটলিকে হুমকি দিলেন স্বামী

মুখে লাগাম কষছেন না সুব্রহ্মণ্যম স্বামী। আমলাদের পরে এ বার সরাসরি বিঁধলেন অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলিকেই।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৫ জুন ২০১৬ ০৯:৩২
Share:

মুখে লাগাম কষছেন না সুব্রহ্মণ্যম স্বামী। আমলাদের পরে এ বার সরাসরি বিঁধলেন অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলিকেই।

Advertisement

একের পর এক আমলাকে স্বামী নিশানা করায় সঙ্ঘ ও বিজেপি হস্তক্ষেপ করেছিল। বিরত থাকতে বলা হয়েছিল তাঁকে। তার পর আজ সুব্রহ্মণ্যম স্বামী নতুন কোনও আমলার বিরুদ্ধে তোপ দাগেননি বটে, কিন্তু জেটলির প্রতি ক্ষোভ উগরে দিয়েছেন টুইটারে। মুখ্য অর্থনৈতিক উপদেষ্টা অরবিন্দ সুব্রহ্মণিয়নের অপসারণের দাবি তোলার পর জেটলি স্বামীকে সংযত থেকে শৃঙ্খলা মেনে চলার পরামর্শ দিয়েছিলেন। আজ তার জবাব দিয়ে স্বামী লেখেন, ‘‘অযাচিত ভাবে যাঁরা শৃঙ্খলা ও সংযমের পরামর্শ দিচ্ছেন, তাঁরা বোঝেন না আমি শৃঙ্খলা ভাঙলে রক্তপাত হবে।’’

স্বামীকে রাজ্যসভায় আনার পরেই কপ্টার-ঘুষ কাণ্ডে সরাসরি সনিয়া গাঁধীর নাম করে আক্রমণ করেছিলেন তিনি। তখন বিজেপি শিবিরের অনেকেই খুশি হয়েছিলেন। কিন্তু সেই সময়ই কংগ্রেস-সহ অন্য বিরোধীরা সতর্ক করে বলেছিল, অচিরেই বন্দুকের নল কংগ্রেস থেকে বিজেপির দিকে ঘুরতে শুরু করবে। অনেকেই মনে করছেন, স্বামী আসলে অরুণ জেটলিকে সরিয়ে নিজে অর্থমন্ত্রী হতে চান। কেননা, কখনও রিজার্ভ ব্যাঙ্কের গভর্নর, কখনও মুখ্য অর্থনৈতিক উপদেষ্টা, কখনও বা কেন্দ্রের অর্থ বিষয়ক সচিবকে নিশানা করে জেটলিকেই বিপাকে ফেলার কাজ করছেন তিনি। বিজেপি নেতারা সেটি হাড়ে হাড়ে টের পাচ্ছেন। গোটা বিষয়টি যে ভাবে এগোচ্ছে, তাতে বিজেপির নেতাদের অনেকেই ক্ষুব্ধ।

Advertisement

স্বামী আজ শুধু রক্তপাতের কথাই টেনে আনেননি, মোদী সরকারের মন্ত্রীদের পোশাক নিয়েও কটাক্ষ করে টুইট করেছেন তিনি। গত কালই বেজিং সরকারি সফরে গিয়ে বেশ কয়েকটি অনুষ্ঠানে যোগ দিয়েছেন অরুণ জেটলি। কোট ও টাই পরিহিত অর্থমন্ত্রীর সেই ছবি সংবাদ মাধ্যমে দেখা গিয়েছে। আর সকালেই স্বামীর টুইট, ‘‘বিজেপির উচিত মোদী সরকারের মন্ত্রীদের বলা যে বিদেশে থাকার সময় তাঁরা যেন ভারতের ঐতিহ্যবাহী ও আধুনিক পোশাক পরেন। কেননা, কোট আর টাইয়ে তাঁদের ওয়েটারের মতো দেখায়।’’

বিজেপির একাধিক নেতা আজ বলেন, ‘‘দলের শৃঙ্খলা সবার উপরে। বিজেপিরই এক সাংসদ যদি একের পর এক আমলার বিরুদ্ধে মুখ খুলে সরকারকে ব্যতিব্যস্ত করেন, তা হলে ভবিষ্যতে দলের আরও নেতাও অনায়াসে নিজেদের মতো মন্তব্য করতে শুরু করবেন।’’ বিজেপি যখন বিরোধী দল, তখন দলের অনেক নেতাকেই বেসুরো বাজতে দেখা যেত। মোদী ক্ষমতায় আসার পরে অতি উৎসাহে কেউ কেউ কোনও মন্তব্য করেছেন বা হিন্দুত্বের জিগির তুলতে চেয়েছেন ঠিকই, কিন্তু নিজের দলের নেতাদের নিশানা করেননি তাঁরা। ফলে এ বারও স্বামীর উপরে পুরোপুরি রাশ টানার কথাই বলছেন দলের এই নেতারা।

গত কাল জেটলির বিরুদ্ধে ক্ষোভ জানিয়ে স্বামী বলেছিলেন, ‘‘প্রয়োজন হলে আমি নরেন্দ্র মোদী কিংবা অমিত শাহের সঙ্গে কথা বলে নেব। অরুণ জেটলি কী বললেন, তাতে কী এসে গেল?’’ বিজেপি নেতারা জানেন, স্বামীর পিছনে আসলে সঙ্ঘের মদত রয়েছে। যদিও সঙ্ঘের কিছু নেতা আজ দাবি করেন, স্বামীকে রাজ্যসভায় নিয়ে আসার জন্য আরএসএসের ভূমিকা ছিল ঠিকই, কিন্তু আমলা ও বিজেপি নেতাদের বিরুদ্ধে সরব হওয়ার পিছনে সঙ্ঘের হাত নেই। এই নেতাদের দাবি, সরকারি নিয়োগে তাঁরা নাক গলান না। তাই মুখ্য অর্থনৈতিক উপদেষ্টা অরবিন্দ সুব্রহ্মণিয়ন কিংবা নীতি আয়োগের ভাইস চেয়ারম্যান অরবিন্দ পানগড়িয়ার নিয়োগের সময়েও সঙ্ঘ আপত্তি তোলেনি।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন