মুগা থেকে নকল কার্টিলেজ তৈরি করে গেঁটে বাত মুক্তির স্বপ্ন বাঙালি বিজ্ঞানীর

আইআইটি-র বায়োসায়েন্স ও বায়োইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক বিমানবাবু বলেন, “বর্তমানে গ্রাফ্টিং পদ্ধতির চিকিৎসা খুবই ব্যয়সাপেক্ষ। আমরা প্রাকৃতিক প্রোটিন রেশমকে কার্টিলেজের বিকল্প ও বায়োঅ্যাক্টিভ গ্লাসকে প্রাকৃতিক ট্যিসুর বিকল্প হিসেবে ব্যবহার করেছি। ওই মুগা রেশম অসমে প্রচুর হারে মেলে।” বিমানবাবু জানান, তাঁরা মুগা থেকে সিল্ক কম্পোজিট ম্যাট তৈরি করেন।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

গুয়াহাটি শেষ আপডেট: ১২ অগস্ট ২০১৭ ১৬:৪১
Share:

বাঙালি গবেষক বিমান মণ্ডল।— নিজস্ব চিত্র।

আর শুধুই শাড়ি তৈরির কাজে সীমাবদ্ধ থাকবে না অসমের মুগা। এ বার বাতের ব্যথা নিরাময়, গাঁটের বেদনা সারাতেও বড় ভরসা হতে চলেছে রেশম। সিল্ক প্রোটিন আর বায়োঅ্যাকটিভ গ্লাস ফাইবারের মিশ্রণে নকল কার্টিলেজের স্তর তৈরি করে ফেলেছেন আইআইটি গুয়াহাটির অধ্যাপক ও বাঙালি গবেষক বিমান মণ্ডল। বিমানবাবুর দাবি, তার সাহায্যে হাড়ের কোষের পুনর্গঠন ও ছিঁড়ে যাওয়া টিস্যু সারিয়ে তোলা সম্ভব হবে।

Advertisement

গেঁটে বাত এখন কেবল বয়স্কদের মধ্যেই সীমাবদ্ধ নেই। ৪০ বছরের আগেই অনেকের ব্যথা শুরু হয়ে যাচ্ছে। বিমানবাবু জানান, জয়েন্টগুলির কার্টিলেজ ক্ষতিগ্রস্ত হওয়ার পরে বিনা চিকিৎসাতেই পড়ে থাকে। তাই ব্যথাও স্থায়ী হয়ে যায়। টিস্যুর বিকল্প না থাকায় চিকিৎসাও সীমাবদ্ধ। অস্টিও-আর্থ্রাইটিস ভারতের সবচেয়ে বেশি হওয়া হাড়ের রোগ। ইংল্যান্ডে ইউনিভার্সিটি কলেজ লন্ডনের পরীক্ষাগারে স্বাভাবিক কার্টিলেজের বিকল্প তৈরির চেষ্টা করেছে।

আরও পড়ুন: ফের ব্লু হোয়েল! কিশোরের আত্মহত্যার চেষ্টা ইনদওরে

Advertisement

আরও পড়ুন: এ বার জোনহা ফলসে সেলফির বলি দুই কলেজ ছাত্র

আইআইটি-র বায়োসায়েন্স ও বায়োইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের অধ্যাপক বিমানবাবু বলেন, “বর্তমানে গ্রাফ্টিং পদ্ধতির চিকিৎসা খুবই ব্যয়সাপেক্ষ। আমরা প্রাকৃতিক প্রোটিন রেশমকে কার্টিলেজের বিকল্প ও বায়োঅ্যাক্টিভ গ্লাসকে প্রাকৃতিক ট্যিসুর বিকল্প হিসেবে ব্যবহার করেছি। ওই মুগা রেশম অসমে প্রচুর হারে মেলে।” বিমানবাবু জানান, তাঁরা মুগা থেকে সিল্ক কম্পোজিট ম্যাট তৈরি করেন। অতি উচ্চ বিদ্যুৎ ব্যবহার করে তা থেকে অতিসূক্ষ্ণ তন্তু বের করা হয়। এর পরে কাপড় বোনার মতো করেই প্রথমে হাড়ের স্তরের উপরে নকল কার্টিলেজের স্তর তৈরি করা হয়। সব মিলিয়ে তা হাড়-কার্টিলেজের স্বাভাবিক সহাবস্থানের নকল গড়ে ফেলে। যে সব হাড়ের কোষ নষ্ট হয়েছে, সেখানে রোগীর শরীর থেকেই সুস্থ কোষ নিয়ে লাগিয়ে দেওয়া হয়।

বিমানবাবু জানান, সময়ের সঙ্গে সঙ্গে স্বাভাবিক টিস্যু ওই রেশম তন্তুর স্থান নিয়ে নেবে। কিন্তু পুরো পরীক্ষাটি গবেষণাগারে সফল হলেও আসল মানবশরীরে তা পরীক্ষা করা বাকি। বিমানবাবুর দাবি, পরীক্ষা সফল হলে বাতের স্থায়ী চিকিৎসার খরচ অনেক কমে আসবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন