Sukhendu Sekhar Roy

‘বাংলা ভাগের চক্রান্ত’, সুখেন্দুর তির বিজেপিকে

সুখেন্দুশেখর বলেন, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের কাছে বিভিন্ন সময়ে যে সব আবেদন জমা পড়েছে, তাতে দেখা যাচ্ছে অন্তত ২০টি রাজ্যের দাবি উঠেছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৩ অক্টোবর ২০২২ ০৮:৫৯
Share:

সুখেন্দুশেখর রায়। — ফাইল চিত্র।

একুশের বিধানসভা ভোটে পরাজয়ের পর বিজেপি বাংলাকে কব্জা করতে দ্বিমুখী কৌশল নিয়েছে বলে আক্রমণ শানালেন তৃণমূল কংগ্রেসের জাতীয় মুখপাত্র সুখেন্দুশেখর রায়। শনিবার এই মর্মে মোদী-শাহের দলকে তোপ দেগে তাঁর দাবি, “প্রথমত বাংলার ভৌগোলিক অখণ্ডতাকে ভাঙার চেষ্টা হচ্ছে। বিহারের পূর্ণিয়া, কিষানগঞ্জ, কাটিহারের সঙ্গে আলিপুরদুয়ার, উত্তর দিনাজপুর, জলপাইগুড়ির কিছু অংশকে জুড়ে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল গড়ার চেষ্টা চলছে। দ্বিতীয়ত, কাজের বদলে খাদ্য, প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার মতো বিভিন্ন কেন্দ্রীয় প্রকল্পে রাজ্যকে তার বরাদ্দ না দিয়ে অর্থনৈতিক অবরোধ তৈরিকরা হচ্ছে।”

Advertisement

সুখেন্দুশেখর বলেন, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের কাছে বিভিন্ন সময়ে যে সব আবেদন জমা পড়েছে, তাতে দেখা যাচ্ছে অন্তত ২০টি রাজ্যের দাবি উঠেছে। যেমন— মণিপুরে কুকিল্যান্ড, তামিলনাড়ুতে কঙ্গুনাড়ু, কর্নাটকে তুলুনাড়ু, উত্তরপ্রদেশে অওয়ধ প্রদেশ, পূর্বাঞ্চল, বুন্দেলখন্ড এবং পশ্চিমাঞ্চল, রাজস্থানে ভরতপুর। মহারাষ্ট্র থেকে বিদর্ভ অঞ্চল বার করে এনে পৃথক রাজ্যের দাবিও দীর্ঘ দিনের। সুখেন্দুশেখরের কথায়, “উত্তরপ্রদেশ, মধ্যপ্রদেশ, মহারাষ্ট্র, গোয়া, অসম, মেঘালয়ের মতো বিজেপিশাসিত রাজ্যগুলি ভেঙে পৃথক রাজ্য গড়ার দাবি নিয়ে কেন্দ্র নীরব। কিন্তু রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে তারা বাংলা এবং বিহার নিয়ে চক্রান্ত করছে বলে আমাদের কাছে খবর।” সেই সঙ্গে তাঁর এও দাবি, “বিজেপির এই ষড়যন্ত্র বাংলার মানুষ রুখে দেবে। ঠিক যে ভাবে ঔপনিবেশিক শাসকরা বঙ্গভঙ্গের সিদ্ধান্ত থেকে সরে যেতে বাধ্য হয়েছিল।”

তৃণমূলের এই দু’টি অভিযোগেরই জবাব দিয়েছে বিজেপি। দলীয় সাংসদ লকেট চট্টোপাধ্যায়ের বক্তব্য, “রাজ্য ভাগের কোনও প্রশ্নই উঠছে না। বিভিন্ন দুর্নীতিতে যখন তৃণমূলের নাভিশ্বাস উঠে যাচ্ছে, তখন রাজনৈতিক অস্তিত্ব টিকিয়ে রাখতে এই সব পরিকল্পিত মিথ্যা প্রচার করছে তৃণমূল। উত্তরবঙ্গ তথা দার্জিলিং পশ্চিমবঙ্গের মুকুট। একজন বাঙালি হিসাবে কখনওই চাইব না তা আলাদা হোক।”

Advertisement

কেন্দ্রীয় প্রকল্পের রূপায়ণ নিয়ে সম্প্রতি দু’বার মোদী সরকারের পর্যবেক্ষক দল পশ্চিমবঙ্গ ঘুরে এসেছে। তারা চিঠি দিয়ে রাজ্যকে নিজেদের অসন্তোষ জানিয়েছে। কেন্দ্রের অভিযোগ, প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় বহু ক্ষেত্রে দুর্নীতি হচ্ছে। কেন্দ্রের লোগো ব্যবহার করা হচ্ছে না। রাজ্যের আধিকারিকদের ঘুষ দিতে হচ্ছে উপভোক্তাদের। এর জবাবে রাজ্যের পঞ্চায়েত মন্ত্রক একটি দীর্ঘ রিপোর্ট পাঠিয়েছে কেন্দ্রকে। পনেরোটি জেলা ধরে ধরে রাজ্য সরকার দেখিয়েছে, তারা কোথায় কী পদক্ষেপ করেছে। সুখেন্দুবাবুর অভিযোগের উত্তরে আজ লকেট বলেছেন, “কেন্দ্রীয় যোজনায় রাজ্যকে অর্থ না বরাদ্দের পিছনে কোনও রাজনৈতিক ষড়যন্ত্র নেই। রাজ্য বহু ক্ষেত্রে হিসাবের খতিয়ান দিতে পারছে না। এক খাতের টাকা অন্য খাতে খরচ করছে, এমন নজিরও রয়েছে। সঠিক নিয়ম মেনে বরাদ্দ খরচ না করা হলে কেন্দ্র মেনে নেবে কেন?”

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন