(বাঁ দিকে) কর্নেল সোফিয়া কুরেশি এবং মধ্যপ্রদেশের মন্ত্রী বিজয় শাহ (ডান দিকে)। —ফাইল চিত্র।
কর্নেল সোফিয়া কুরেশিকে নিয়ে কুমন্তব্য করা মধ্যপ্রদেশের সেই মন্ত্রী বিজয় শাহকে ফের ভর্ৎসনা করল সুপ্রিম কোর্ট। ওই মন্তব্যের জন্য তাঁকে জনসমক্ষে ক্ষমা চাইতে বলেছিল শীর্ষ আদালত। কিন্তু তাঁর ক্ষমা চাওয়ার ধরন দেখে অসন্তুষ্ট সুপ্রিম কোর্ট। মন্ত্রী আদালতের ধৈর্যের পরীক্ষা নিচ্ছেন বলেও মন্তব্য করেছে বিচারপতি সূর্য কান্ত এবং বিচারপতি জয়মাল্য বাগচীর বেঞ্চ।
ভারত-পাকিস্তান সংঘর্ষ পরবর্তী সময়ে ভারতের সাফল্য ব্যাখ্যা করার সময় কর্নেল সোফিয়াকে ‘সন্ত্রাসবাদীদের বোন’ বলেছিলেন বিজয়। ওই মন্তব্যের জন্য পরে ক্ষমাও চান মধ্যপ্রদেশের মন্ত্রী তথা বিজেপি নেতা। তবে তাঁর ক্ষমা চাওয়ার ধরনে আগেই অসন্তোষ প্রকাশ করেছিল শীর্ষ আদালত। সর্বসমক্ষে ক্ষমা না চাওয়ার জন্য ফের তাঁকে ভর্ৎসনা করল দুই বিচারপতির বেঞ্চ। মন্ত্রীর আচরণে তাঁর উদ্দেশ্য এবং আন্তরিকতা নিয়েও প্রশ্ন উঠে যাচ্ছে বলে মনে করছে সুপ্রিম কোর্ট।
বিচারপতি কান্ত এবং বিচারপতি বাগচীর বেঞ্চের মন্তব্য, “এই ভাবে ক্ষমা চাওয়ার মানে কী? প্রথম দিনেই তো তিনি এই বিবৃতি দিয়েছিলেন। আমরা জনসমক্ষে ক্ষমা চাওয়ার কথা বলছি। তার নথি কোথায় আছে? তিনি আমাদের ধৈর্যের পরীক্ষা নিচ্ছেন।” মধ্যপ্রদেশের মন্ত্রীর আইনজীবী সোমবার আদালতে জানান, তাঁর মক্কেল সর্বসমক্ষে ক্ষমা চেয়েছেন। সেটি অনলাইনে শেয়ার করা হয়েছিল এবং আদালতেও তা জমা দেওয়া হবে। সে কথা শুনে অসন্তুষ্ট বেঞ্চের প্রশ্ন, “অনলাইনে ক্ষমা চাওয়া আবার কী? তাঁর (মন্ত্রীর) উদ্দেশ্য এবং আন্তরিকতা নিয়ে আমাদের মনে সন্দেহ জাগতে শুরু করেছে। আপনি ক্ষমা চাওয়ার নথি আদালতে জমা দিন। সেটি আমাদের দেখতে হবে।”
পহেলগাঁও হত্যালীলার পরবর্তী সময়ে ভারত এবং পাকিস্তান সংঘাতের আবহে পর পর কয়েক দিন ভারতীয় সেনা ও বিদেশ মন্ত্রক যৌথ ভাবে সাংবাদিক বৈঠক করেছিল। প্রত্যেক বৈঠকেই বিদেশসচিব বিক্রম মিস্রীর পাশে উপস্থিত ছিলেন ভারতীয় সেনার কর্নেল সোফিয়া এবং বায়ুসেনার উইং কমান্ডার ব্যোমিকা সিংহ। সাংবাদিক বৈঠকে ভারতের সামরিক বাহিনীর প্রতিনিধিত্ব করেন তাঁরা। সীমান্তে সংঘর্ষ চলাকালীন কোন দিন কী কী হচ্ছে, ভারত কী পদক্ষেপ করছে, পাকিস্তানই বা কী ভাবে আক্রমণের চেষ্টা চালাচ্ছে, তার বিস্তারিত বর্ণনা দিতেন এই দু’জন।
আগে এই মামলাটি সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতি কান্ত এবং বিচারপতি এন কোটিশ্বর সিংহের বেঞ্চে শুনানি হয়েছে। ওই সময়েও মন্ত্রীর ক্ষমা চাওয়ার ধরন নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিল শীর্ষ আদালত। মন্ত্রীর ক্ষমা চাওয়াকে ‘কুমিরের কান্না’ বলেও মন্তব্য করেছিল আদালত। বিচারপতি কান্ত সেই সময় জানিয়েছিলেন, অনেকেই আইনের হাত থেকে বাঁচতে ‘কুমিরের কান্না’ কেঁদে থাকেন।