—ফাইল চিত্র।
রাফাল চুক্তির ফাইল আইনত গোপন নথি। সেই নথি ফাঁস হয়ে গেলেও তাকে রাফাল মামলায় হাতিয়ার করা যাবে না বলে সুপ্রিম কোর্টে যুক্তি দিয়েছিল কেন্দ্র। আজ সুপ্রিম কোর্টের বিচারপতিরা তথ্যের অধিকার আইনের কথা স্মরণ করে দিয়ে বললেন, আরটিআই-তে দুর্নীতি ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের প্রশ্নে স্পর্শকাতর তথ্যও জানাতে হয়।
রাফাল চুক্তির ফাইলের কিছু নথি ফাঁস হওয়ায় দেখা গিয়েছে, ফ্রান্সের সঙ্গে দর কষাকষিতে প্রধানমন্ত্রীর দফতর নাক গলিয়েছিল। প্রতিরক্ষা মন্ত্রক থেকেই তাতে আপত্তি ওঠে। সেই নথিকে হাতিয়ার করেই নতুন করে রাফাল-এ দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। এর আগে সুপ্রিম কোর্ট রাফাল তদন্তের দাবি নাকচ করে দিলেও যশবন্ত সিনহা, অরুণ শৌরি, প্রশান্ত ভূষণরা সেই রায় পুনর্বিবেচনার আর্জি জানিয়েছেন। কেন্দ্রের যুক্তি, অফিশিয়াল সিক্রেট অ্যাক্ট অনুযায়ী ওই নথি গোপন। এর সঙ্গে দেশের নিরাপত্তার প্রশ্ন জড়িত।
আজ বিচারপতি কে এম জোসেফ বলেন, ‘‘তথ্যের অধিকার আইন বলছে, দুর্নীতি ও মানবাধিকার লঙ্ঘনের মামলায় স্পর্শকাতর সংগঠনের গোপন তথ্যও জানাতে হয়।’’ কেন্দ্রের অ্যাটর্নি জেনারেল কে কে বেণুগোপাল যুক্তি দেন, দেশের নিরাপত্তার প্রশ্ন সবার উপরে। কিন্তু বিচারপতি জোসেফ বলেন, ‘‘আরটিআই বিপ্লব এনে ফেলেছে। ২০০৯-এ কেন্দ্রই বলেছে, সরকারি ফাইলের নোটিং-ও তথ্যের অধিকার আইনে প্রকাশ করা যায়। এখন আর পিছু হটা উচিত নয়।’’
দিল্লি দখলের লড়াই, লোকসভা নির্বাচন ২০১৯
রাফাল রায় পুনর্বিবেচনা নিয়ে রায় অবশ্য মুলতুবি রেখেছে সুপ্রিম কোর্ট। কেন্দ্রের কথা শুনে প্রধান বিচারপতি রঞ্জন গগৈ বলেন, ‘‘আপনারা বলছেন, এই নথি দেশের সুরক্ষায় প্রভাব ফেলবে এবং এতে নাক গলানো উচিত নয়। কিন্তু তথ্যের অধিকার আইনের প্রেক্ষিতে তা বিবেচনা করতে হবে।’’ আইনজীবী প্রশান্ত ভূষণ বলেন, ‘‘যখন মানুষ জানে যে নথিতে কী রয়েছে, তখন কোর্ট তাতে নজর দেবে না— এমন দাবি কী করে করছে কেন্দ্র? যখন নথি ফাঁস হয়েছে, তখন সরকার এফআইআর করেনি কেন? সরকার নিজেই ১০টি প্রতিরক্ষা চুক্তির তথ্য আদালতকে জানিয়েছে। রাফাল-এর ক্ষেত্রেই দাম গোপন রাখা হয়েছে।’’
আরও পড়ুন: মুম্বইয়ে ভেঙে পড়ল ফুটব্রিজ, চাপা পড়ে মৃত্যু অন্তত ৬ জনের
বিরোধীদের অভিযোগ ছিল, সিএজি রিপোর্টে রাফাল চুক্তিকে ছাড় দেওয়া হয়েছে বলে আদালতকে ভুল পথে চালিত করেছিল কেন্দ্র। কেন্দ্রের যুক্তি ছিল, সুপ্রিম কোর্ট তাদের বক্তব্য বুঝতে ভুল করেছে। আজ আবার সিএজি রিপোর্ট জমা দেওয়ার ক্ষেত্রে ভুল হল। অ্যাটর্নি জেনারেল নিজেই জানালেন, জমা করা নথিতে সিএজি রিপোর্টের প্রথম তিন পৃষ্ঠা নেই।
আরও পড়ুন: আজ-হারেও সব ‘দোষ’ নেহরুর! মাসুদ নিয়ে বিজেপি-কংগ্রেসের নতুন বিতর্কের চিত্রনাট্য