Indian Railways

তুমুল ভাড়া, নিন্দার মুখে ‘সুবিধা ট্রেন’

জয়পুর-বেঙ্গালুরু ও মুম্বই-পটনা রুটে ওই ট্রেনের এসি-টু টিয়ারের ভাড়া গিয়ে ঠেকেছে যথাক্রমে ১১,২৩০ ও ৯৩৯৫ টাকায়।

Advertisement

ফিরোজ ইসলাম 

কলকাতা শেষ আপডেট: ০৩ ডিসেম্বর ২০২৩ ০৬:০০
Share:

—প্রতীকী ছবি।

বিশেষ রুটে টিকিটের উত্তুঙ্গ চাহিদার সময় ‘কিছুটা’ বাড়তি ভাড়ায় নিশ্চিত আসনের ব্যবস্থা করতে ‘সুবিধা এক্সপ্রেস’ চালু করেছিল রেল।

Advertisement

ওই ব্যবস্থায় ‘ফ্লেক্সি ফেয়ার’-এর ধাঁচে চাহিদা বৃদ্ধির সঙ্গে টিকিটের দামও বাড়ে। বিশেষ ওই ট্রেন চালিয়ে কিঞ্চিৎ ‘লাভের কড়ি’ রেলের ঘরে আনাও ওই পরিকল্পনার উদ্দেশ্য ছিল। ২০১৫ সালে ওই ট্রেন চালানোর জন্য নীতিগত ছাড়পত্র দেয়। কিন্তু, চলতি বছরে দীপাবলি এবং ছট পুজোর মরসুমে কিছু রুটে ওই ট্রেনের ভাড়া কম খরচের উড়ানের ভাড়াকেও ছাপিয়ে গিয়েছে। যা নিয়ে ঘরে-বাইরে সমালোচনার মুখে পড়ছে রেল।

জয়পুর-বেঙ্গালুরু ও মুম্বই-পটনা রুটে ওই ট্রেনের এসি-টু টিয়ারের ভাড়া গিয়ে ঠেকেছে যথাক্রমে ১১,২৩০ ও ৯৩৯৫ টাকায়। জয়পুর-বেঙ্গালুরু সুবিধা ট্রেনের এসি-টু টিয়ারের এক পিঠের ভাড়া ফেব্রুয়ারির প্রথম সপ্তাহ পর্যন্ত ১১,২৩০ টাকা দেখাচ্ছে। বেঙ্গালুরু-জয়পুরের একাধিক উড়ানের টিকিটের মূল্য সাত হাজার টাকার কাছাকাছি। রেলের নীতি অনুযায়ী, সুবিধা এক্সপ্রেসের টিকিটে মূল ভাড়ার ৩০০ শতাংশ বা ৩ গুণ পর্যন্ত অতিরিক্ত ভাড়া ধার্য করার সুযোগ রয়েছে। কিন্তু সেই ভাড়া কী ভাবে ওই অঙ্কে পৌঁছল, তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সমালোচনার মুখে পড়তে হয়েছে রেলকে। উড়ানের টিকিটের মূল্যকে ছাপিয়ে যাওয়া ওই ভাড়া নিয়ে সরব হতে দেখা গিয়েছে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী তথা প্রাক্তন রেলমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কেও।

Advertisement

ভাড়া নিয়ে সমালোচনা অস্বস্তি বাড়িয়েছে রেলের। তড়িঘড়ি দেশের বিভিন্ন প্রান্তে চালানো সুবিধা এক্সপ্রেস ট্রেনের ভাড়া যে সর্বত্র আকাশ ছোঁয়া হয়নি তা জানিয়ে বিবৃতি দিতে হয়েছে রেলকে। ভাড়া নির্ধারণের পদ্ধতির ফাঁকফোকর গলে কী ভাবে ওই ট্রেনের ভাড়া রকেটের মতো আকাশ ছুঁয়ে ফেলল, তা খতিয়ে দেখছে রেল। ভবিষ্যতে ওই পদ্ধতি পুনর্বিবেচনার ইঙ্গিত দিচ্ছে রেলের একটি সুত্র।

পূর্ব রেল জানিয়েছে, উৎসবের মরসুমে হাওড়া এবং শিয়ালদহ থেকে নিউ জলপাইগুড়িগামী দু’টি সুবিধা এক্সপ্রেস চালানো হয়েছিল। ওই দু’টি ট্রেনে ১৩৭৮ জন যাত্রীর কাছ থেকে পূর্ব রেলের ২২ লক্ষ ১৫ হাজার ৩৬৩ টাকা আয় হয়েছে। রেলের দাবি, ওই দুই ট্রেনে যাত্রী পিছু ১৬০৭ টাকা ভাড়া নেওয়া হয়েছে। ওই হার কলকাতা-বাগডোগরা উড়ানের টিকিটের গড়পড়তা ভাড়ার চেয়ে অনেকটা কম বলে জানানো হয়েছে রেলের পক্ষ থেকে। তবে, উৎসবের মরসুমে উত্তরবঙ্গগামী ট্রেনের টিকিটের চাহিদা বাড়লেও তা মূলত দার্জিলিং মেল, পদাতিক, কাঞ্চনকন্যা, বন্দে ভারত এক্সপ্রেসের মতো নিয়মিত ট্রেনের ক্ষেত্রেই ঘটেছে বলে জানিয়েছে রেলের অন্য একটি সূত্র। অল্প সময়ের বিজ্ঞপ্তিতে বিশেষ দিনে চালানো সুবিধা এক্সপ্রেসের খবর যাত্রীদের কাছে সে ভাবে না পৌঁছনোয় অনেকেই ওই ট্রেনের সুবিধা নিতে পারেননি বলে অভিযোগ।

ট্রেনের আসন সংখ্যার চেয়ে চাহিদা অনেক কম থাকাতেই টিকিটের দাম বেশি বাড়েনি বলে জানাচ্ছে ওই সূত্র। আসনের তুলনায় চাহিদা বাড়লে এ ক্ষেত্রেও টিকিটের দাম উড়ান ভাড়ার সঙ্গে পাল্লা দিত না, এমন সম্ভাবনা অবশ্য খারিজ করেননি রেলের আধিকারিকদের ওই সূত্র।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন