সেনা বাহিনীর ধারণা, কাশ্মীরে নাইট ভিশন ডিভাইস’ লাগানো স্নাইপার রাইফেল ব্যবহার করছে জঙ্গিরা। ছবি: সংগৃহীত।
সপ্তাহখানেক আগের কথা। কাশ্মীরের তিনটি এলাকায় জঙ্গিদের সঙ্গে সংঘর্ষে জড়ায় বাহিনী। তার মধ্যে পুলওয়ামার মিদুরায় সিআরপিএফ শিবিরে হামলার ঘটনা চিন্তা বাড়িয়েছিল বাহিনীর। কারণ ওই হামলায় স্নাইপার রাইফেল ব্যবহার করে অনেক দূর থেকে এক এসএসবি জওয়ানকে খুন করা হয়েছিল বলে জানিয়েছিলেন বাহিনীর কর্তারা।
গত কাল শ্রীনগরের শহরতলি এলাকায় এ ভাবেই দূর থেকে গুলি করে খুন করা হয়েছে সিআইএসএফের অ্যাসিস্ট্যান্ট সাব ইনস্পেক্টর রাজেন্দ্র প্রসাদকে। ত্রালেও একই ধরনের হামলার শিকার হয়েছেন এক সেনা। বাহিনীর কর্তারা জানাচ্ছেন, ১৮ সেপ্টেম্বরও পুলওয়ামায় নেওয়া এলাকায় দূর থেকে ছোড়া গুলিতে এক সিআরপিএফ জওয়ান আহত হয়েছিলেন। কিন্তু তখন বিষয়টিকে খুব বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়নি।
বাহিনীর কর্তাদের ধারণা, এই ধরনের হামলায় ‘নাইট ভিশন ডিভাইস’ লাগানো স্নাইপার রাইফেল ব্যবহার করা হচ্ছে। এই ধরনের হামলায় প্রশিক্ষিত হামলাকারী বা স্নাইপার দীর্ঘক্ষণ একটি জায়গায় লুকিয়ে লক্ষ্যবস্তুর অপেক্ষা করে। স্নাইপার রাইফেলে প্রায় ৫০০-৬০০ মিটার দূর থেকে লক্ষ্যভেদ করা যায়। তার ফলে অনেক দূর থেকে হঠাৎ হামলা চালিয়ে সরে পড়তে পারে হামলাকারী। সাম্প্রতিক অতীতে নিয়ন্ত্রণরেখার ওপার থেকে স্নাইপার হামলা চালিয়ে কয়েক জন ভারতীয় জওয়ানকে খুন করেছে পাক বাহিনী।
আরও পড়ুন: নির্যাতিতা থেকে মুকুটজয়ী, হাঁটা থামাননি কাশ্মীরি কন্যা
বাহিনী সূত্রে খবর, জইশ ই মহম্মদ জঙ্গিগোষ্ঠীর অন্তত চার জন প্রশিক্ষিত স্নাইপার উপত্যকায় সক্রিয় রয়েছে বলে মনে করছেন গোয়েন্দারা। স্নাইপাররা সাধারণত দু’জনের দল গড়ে কাজ করে। এক জন লক্ষ্যবস্তু স্থির করে। অন্য জন লক্ষ্যভেদ করে। এ ক্ষেত্রেও চার জন জঙ্গি দু’টি দল গড়ে কাজ করছে বলে মত গোয়েন্দাদের। তাঁদের মতে, জঙ্গি স্নাইপারদের হাতে মার্কিন এম-ফোর কার্বাইন আছে। গোয়েন্দারা জানান, আফগানিস্তানে মার্কিন বাহিনীর সঙ্গে লড়াইয়ের সময়ে এই ধরনের কিছু অস্ত্র ছিনিয়ে নিতে পেরেছিল তালিবান। তখন জইশ জঙ্গিরাও তালিবানের সঙ্গে হাত মিলিয়ে লড়ত। কাজেই সেই সূত্রে তাদের হাতে ওই অস্ত্র এসে থাকতে পারে। আবার পাক সেনার কম্যান্ডো বাহিনীও এই অস্ত্র ব্যবহার করে। পাক সেনা জইশ জঙ্গিদের এই হামলার জন্য দস্তুরমতো প্রশিক্ষণের ব্যবস্থা করেছে বলে ধারণা গোয়েন্দাদের।
এই পরিস্থিতিতে বাহিনীর শিবিরে নিরাপত্তা নিয়ে নয়া নির্দেশিকা জারি হয়েছে। ভিআইপিদের নিরাপত্তা নিয়েও ফের ভাবতে হচ্ছে বাহিনীর কর্তাদের। তবে কি কৌশল নেওয়া হবে তা নিয়ে মুখ খুলতে নারাজ তাঁরা।