Advertisement
E-Paper

নির্যাতিতা থেকে মুকুটজয়ী, হাঁটা থামাননি কাশ্মীরি কন্যা

নুসরত পরভিন। ৩৬ বছর বয়সি এই কাশ্মীরি কন্যা কয়েক দিন আগেই মালয়েশিয়ায় এক আন্তর্জাতিক সৌন্দর্য প্রতিযোগিতায় বিজেতার মুকুট জিতে নিয়েছেন। তিনিই এ বছরের ‘মিসেস ইন্ডিয়া ইন্টারন্যাশনাল’।

সাবির ইবন ইউসুফ

শেষ আপডেট: ২৯ অক্টোবর ২০১৮ ০৪:১৩
নুসরত পরভিন।

নুসরত পরভিন।

মুকুটের আড়ালে লুকিয়ে রয়েছে বহু বেদনা। বঞ্চনার বেদনা, নির্যাতনের বেদনা।

মুকুটের আড়ালে লুকিয়ে রয়েছে অনেক বছরের লড়াই। মেয়েকে একা একা বড় করার লড়াই। হাল না ছাড়ার লড়াই।

মুকুটের আড়ালে লুকিয়ে রয়েছে অফুরন্ত সাহস।

লড়াই চালিয়ে যাওয়ার সাহস। কোনও প্রশিক্ষণ ছাড়াই আন্তর্জাতিক সৌন্দর্য প্রতিযোগিতায় অংশ নেওয়ার সাহস। সোশ্যাল মিডিয়ায় ব্যঙ্গ-বিদ্রুপের শিকার হয়েও এগিয়ে যাওয়ার সাহস।

আরও পড়ুন: #মিটু জিনিসটা খায় না মাখে, সেটাই অজানা ওঁদের

নুসরত পরভিন। ৩৬ বছর বয়সি এই কাশ্মীরি কন্যা কয়েক দিন আগেই মালয়েশিয়ায় এক আন্তর্জাতিক সৌন্দর্য প্রতিযোগিতায় বিজেতার মুকুট জিতে নিয়েছেন। তিনিই এ বছরের ‘মিসেস ইন্ডিয়া ইন্টারন্যাশনাল’।

সাফল্যের এই পথটা আদপেই মসৃণ ছিল না। ‘‘সত্যিই বলতে কী, কখনও ভাবিইনি সৌন্দর্য প্রতিযোগিতায় নাম দেব। বিদেশে গিয়ে স্টেজে র‌্যাম্পে হাঁটব,’’ আনন্দবাজারকে বললেন নুসরত।

জন্ম কুলগামে। বাবা ছিলেন সেনাবাহিনীতে। কিশোরীবেলা থেকেই মহারাষ্ট্রে থাকতেন নুসরতরা। সেখানেই ভালবেসে বিয়ে এক মরাঠি ছেলেকে। একটি মেয়েও হয় তাঁদের। ‘‘মাধ্যমিক পাশ করে বিয়ে করার ঝোঁকে পড়াশোনা ছেড়ে দিই। তার পর শুধু স্বামী-সংসার নিয়েই মজে ছিলাম। যে ছেলেটিকে ভালবেসে বিয়ে করেছিলাম, কিছু দিন পরেই তার স্বরূপ বেরিয়ে পড়ল। হেনস্থা, মারধর, সবই চলত। তবু চোখে ঠুলি পরেছিলাম। চমক ভাঙল, যে দিন স্বামী দ্বিতীয় বৌ ঘরে নিয়ে এল। মেয়ের মুখের দিকে তাকিয়ে ঠিক করলাম, বাঁচতে হবে। মেয়ের জন্য। নিজের জন্যও।’’ একটানা কথাগুলো বলে দম নেওয়ার জন্যই থামলেন নুসরত।

আরও পড়ুন: অনীক থেকে অ্যানি, বিয়ে করলেন সাগ্নিককে

ক্লাস টেন পাশ এক গৃহবধূ থেকে ‘মিসেস ইন্টারন্যাশনাল’। দীর্ঘ এই পথ চলায় পাশে পেয়েছেন মেয়েকে। ‘‘ওই আমাকে সব সময়ে বলে, হাল ছাড়বে না কখনও। ওর উৎসাহেই সৌন্দর্য প্রতিযোগিতায় নাম দিয়েছিলাম।’’ সে খবর প্রকাশিত হতেই সোশ্যাল মিডিয়ায় নিন্দার ঝড় ওঠে— এক জন রক্ষণশীল মুসলিম পরিবারের মেয়ে ও বধূ হয়ে সেজেগুজে লোকজনের সামনে দাঁড়াতে লজ্জা করবে না!

প্রতিযোগিতার চূড়ান্ত পর্যায়ে র‌্যাম্পে হাঁটার সময়ে তিন বার হোঁচট খেয়ে পড়ে গিয়েছিলেন। ‘‘হিল পরার অভ্যেস নেই তো,’’ হেসে বললেন নুসরত। ‘‘উঠে দাঁড়িয়ে বিচারকদের ইকবালের সেই কবিতাটি শুনিয়ে দিই— যারা লড়াই করতে নামে, তারাই যুদ্ধক্ষেত্রে পড়ে যায়। যারা চলে না, তারা আর পড়ে যাবে কী করে!’’

Domestic Abuse Beauty Peasant Kashmir
Advertisement

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy