কাটিগড়ার কুড়কুড়ি থেকে ৭ ফেব্রুয়ারি অপহৃত হয়েছিল ফিসারি কর্মী আব্দুল শুকুর। ১৩ তারিখ রাতে লক্ষ্মীপুরের লাবকপারে বিছানা থেকে নিখোঁজ হয় তিন বছরের শিশু সামসুল হক। দু’জনেরই খোঁজ মিলল গত রাতে। পুলিশের দাবি, সামসুলকে শিলচর রেল স্টেশনে অপহরণকারীদের খপ্পড় থেকে উদ্ধার করা হয়েছে। ধরা পড়েছে অপহরণকারী চক্রের এক চাঁই। অন্য দিকে লাগাতার পুলিশি অভিযানে ব্যতিব্যস্ত হয়ে আব্দুল শুকুরকে ছেড়ে পালিয়েছে অপহরণকারীরা। গত কাল রাত ৩টায় তিনি নিজেই বাড়ি পৌঁছন।
পুলিশ সুপার রাকেশ রৌশন জানান, শুকুর অপহরণে জড়িত সন্দেহে ৬ জনকে আটক করা হয়েছিল। ৪ জনকে গ্রেফতার করা হয়। ধৃতদের নাম রাকেশ বৈষ্ণব, রঞ্জিত নমঃশূদ্র, প্রদীপ বৈষ্ণব ও সজল বৈষ্ণব। সবাই কাটিগড়ার বাসিন্দা। তবে মূল অভিযুক্ত রাজেশ বৈষ্ণব ওরফে কালা এখনও পুলিশের ধরাছোঁয়ার বাইরে। সে ধৃত রাকেশের ভাই। ৪ মাস আগেও এক অপহরণ মামলায় রাকেশের বিরুদ্ধে অভিযোগ রয়েছে বলে তিনি জানিয়েছেন। পুলিশ সুপারের দাবি, শীঘ্র তাকেও গ্রেফতার করা হবে।
বাড়ি ফিরে আব্দুল শুকুর পুলিশকে জানিয়েছেন, অপহরণকারীরা তাঁকে বেশি দূর নিয়ে যায়নি। দিগরখালের পাহাড়চূড়ায় এ দিক থেকে সে দিকে জায়গা বদল করেছে। পুলিশ দেখলেই তাঁকে নিয়ে অন্য জায়গায় সরে যেত তারা। লক্ষ্মীপুরের নিখোঁজ শিশু উদ্ধারের ঘটনায় পুলিশ সুপার জানান, দরজা ভেঙে ঘরে ঢুকে দুষ্কৃতীরা বাবা-মার সামনে থেকে সামসুলকে তুলে নিয়ে গিয়েছিল। সঙ্গে নিয়ে যায় অপহৃতের বাবা শাহরুল হকের মোবাইল ফোন। সেটি থেকেই ঘরে থাকা অন্য মোবাইলে ফোন করে মুক্তিপণ দাবি করা হয়।
মোবাইলের সূত্র ধরে পুলিশ অপরাধীদের ধরে ফেলে বলেই শাহরুলের মোবাইল ব্যবহার করছিল তারা। তবু শেষরক্ষা হয়নি। পুলিশ সব জায়গায় সতর্কবার্তা পৌঁছে দেওয়ায় শিলচর রেল স্টেশনে সামসুলকে দেখেই রেল পুলিশের সন্দেহ হয়। বিষয়টি আঁচ করে সামসুলকে ফেলে পালাতে চেয়েছিল অপহরণকারীরা। পুলিশ সামসুলকে উদ্ধার করে। পরে তাকে সঙ্গে নিয়েই গ্রেফতার করে সোনাবাড়িঘাটের রবিজুল বড়ভুঁইঞাকে।
জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, অপহরণের মূল অভিযুক্ত দেওয়ানের রাজীব চাষা। এলাকারই আরেক শিশু অপহরণ মামলায় তাকে জেলে পাঠানো হয়েছিল। সেখান থেকে সে পালিয়ে যায়। রাজীবকে গ্রেফতারের ব্যাপারেও পুলিশ আশাবাদী। চতুর্দিকে জাল বিছানো হয়েছে বলে এসপি জানিয়েছেন।