‘ঘুম ভেঙে উঠে পড়ুন, ভোট দিন ভেবেচিন্তে’। কয়েক বছর আগে একটি বেসরকারি সংস্থার এই প্রচার সারা দেশে আলোড়ন ফেলেছিল।
ভোটারদের সচেতন করে তুলতে বছরভর নানা প্রচার চালায় নির্বাচন কমিশনও। এ বার কমিশনের সচেতন করে তোলার লক্ষ্য ‘প্রস্পেক্টিভ ভোটার’ বা দেশের ভাবী ভোটারকুল। ভোট দিতে যাওয়ার ঠিক আগে নির্বাচন নিয়ে সচেতন করে তুলতে অভিনব পন্থা বেছে নিয়েছে কমিশন। সারা দেশের ১৫ থেকে ১৭ বছরের বা নবম থেকে দ্বাদশ শ্রেণির ছেলেমেয়েদের মধ্যে ক্যুইজ প্রতিযোগিতা করবে কমিশন। আগামী ২৫ জানুয়ারি ‘ভোটার দিবস’-এ জয়ী প্রতিযোগীদের হাতে পুরস্কারও তুলে দেওয়া হবে।
কমিশনের কর্তারা জানাচ্ছেন, এই প্রতিযোগিতা অন্যান্য ক্যুইজের থেকে খানিকটা পৃথক। এখানে ভাবী ভোটারদের নির্বাচন প্রক্রিয়া সম্পর্কে সাধারণ জ্ঞান বাড়ানোই মূল লক্ষ্য। সেই জন্য এই প্রতিযোগিতায় যাবতীয় প্রশ্ন থাকবে নির্বাচনকে কেন্দ্র করেই। যাতে প্রথম বার ভোট দিতে যাওয়ার আগে তারা দেশের ভোট প্রক্রিয়া সম্পর্কে একটি সম্যক ধারণা পায়। একই সঙ্গে ভোট দিতে যাওয়ার ব্যাপারে তাদের উৎসাহ তৈরি হয়। কমিশনের এক কর্তার কথায়, ‘‘সারা দেশে গত লোকসভা নির্বাচনেও ভোট দেওয়ার শতকরা হার ক্রমশ কমছে। সেই জন্যই ভাবী ভোটারদের মধ্যে ভোট নিয়ে উৎসাহ তৈরি করতে চায় কমিশন।’’ তবে প্রশ্নের মধ্যে কোথাও কোনও রাজনৈতিক বিতর্ক যাতে না-থাকে, সে-দিকে সতর্ক নজর রাখা হচ্ছে বলে জানান ওই কর্তা।
কী ভাবে হবে ওই প্রতিযোগিতা?
কমিশন সূত্রের খবর, সারা দেশের সব স্কুলকেই এই প্রতিযোগিতার আওতায় আনার চেষ্টা চালানো হচ্ছে। সেই জন্য এই প্রতিযোগিতা হবে চারটি ধাপে। প্রথম ধাপে মহকুমা এলাকায় একটি স্কুলের সব পড়ুয়াকে নিয়ে প্রতিযোগিতা হবে। এক-একটি দলে দু’জন করে পড়ুয়া থাকবে। স্কুলের সফল দলগুলি যোগ দেবে মহকুমা স্তরে। সেখানে সফল প্রতিযোগীদের দলকে জেলা স্তরের প্রতিযোগিতায় যোগ দিতে হবে।
জেলা স্তরের প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন টিম রাজ্য স্তরের ক্যুইজে যোগ দেবে। রাজ্য স্তরে ২৩টি দল নিজেদের মধ্যে প্রতিযোগিতায় যোগ দেবে। একই ভাবে দেশের বিভিন্ন রাজ্যে এই ক্যুইজ প্রতিযোগিতা শুরু হয়েছে। সেখানকার জয়ীদের নিয়ে প্রতিযোগিতা হবে জাতীয় স্তরে।
নির্বাচন কমিশনের এক কর্তা বলেন, ‘‘রাজ্য স্তরে যারা জয়ী হবে, ২৫ জানুয়ারি ভোটার দিবসের অনুষ্ঠানে আমরা তাদের পুরস্কার দেব। একই ভাবে নির্বাচন কমিশনের অনুষ্ঠানে ওই দিনই জাতীয় স্তরের জয়ী দলকে পুরস্কৃত করা হবে।’’