China

অরুণাচলের কাছে যুদ্ধমহড়া বাড়াল বেজিং

অরুণাচলে নিয়ন্ত্রণ রেখার ও-পারে চিনা সেনার গতিবিধি বাড়ছে। নিয়ন্ত্রণ রেখার কাছেই পিএলএ-র মহড়া, সমরসজ্জা ক্রমেই বৃদ্ধি পাচ্ছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

গুয়াহাটি শেষ আপডেট: ২০ অক্টোবর ২০২১ ০৭:০০
Share:

চিনা সেনা। ফাইল চিত্র।

অরুণাচলে নিয়ন্ত্রণ রেখার ও-পারে চিনা সেনার গতিবিধি বাড়ছে। নিয়ন্ত্রণ রেখার কাছেই পিএলএ-র মহড়া, সমরসজ্জা ক্রমেই বৃদ্ধি পাচ্ছে। আজ সরকারি ভাবেই এ কথা মেনে নিল সেনাবাহিনী।

Advertisement

গত বছর লাদাখের সংঘর্ষের পরেই ভারতীয় সেনার নবগঠিত অ্যাভিয়েশন ব্রিগেডের অধীনে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখা বরাবর ইজরায়েলি হেরন ড্রোন উড়ছে দিনে-রাতে। সেই ড্রোন থেকে পাওয়া ছবি, হেলিকপ্টারে লাগানো সেন্সর, গ্রাউন্ড রেডার ও কৃত্রিম উপগ্রহ থেকে পাওয়া ছবি থেকেই জানা গিয়েছে চিনাদের শক্তিবৃদ্ধির নির্দিষ্ট তথ্য। ইস্টার্ন কম্যান্ডের কম্যান্ডিং অফিসার লেফটেন্যান্ট জেনারেল মনোজ পাণ্ডে আজ রূপায় বলেন, “সীমান্তের ও-পারে চিনের প্রচুর সেনা মোতায়েন করা, সীমান্তের কাছে তৈরি নতুন গ্রামগুলিকে সামরিক ঘাঁটি হিসেবে ব্যবহার করা, সংবেদনশীল এলাকায় সামরিক প্রস্তুতি অবশ্যই চিন্তার কথা। কিন্তু ভারতীয় সেনাও নিয়ন্ত্রণ রেখা বরাবর পর্যাপ্ত শক্তি বৃদ্ধি করেছে। গুরুত্বপূর্ণ স্থানে মোতায়েন করা হয়েছে প্রয়োজনীয় সামরিক সম্ভার ও বাড়ানো হচ্ছে পরিকাঠামো। সেই সঙ্গে, ১৩৪৬ কিলোমিটার দীর্ঘ চিন-অরুণাচল নিয়ন্ত্রণ রেখা বরাবর উচ্চ প্রযুক্তির নজরদারি পরিকাঠামো মোতায়েনেও বিশেষ জোর দেওয়া হচ্ছে।”

অরুণাচলের সাংসদ তাপির গাও আজ দাবি করেন, অক্টোবরের প্রথম সপ্তাহে তাওয়াং সেক্টরে দু’দেশের সেনার কথা কাটাকাটির পরে ফের ১৩ অক্টোবর দিবাং উপত্যকার অ্যান্ড্রেলা ভ্যালিতে চিনারা ভারতীয় সেনার পাঁচ মালবাহককে মারধর করে। এক জনের অবস্থা আশঙ্কাজনক হওয়ায় তাঁকে সেনা কপ্টারে হাসপাতালে নিতে হয়। যদিও ঘটনার কথা প্রকাশ করেনি সেনাবাহিনী।

Advertisement

সীমান্তে অনুপ্রবেশের চেষ্টা ও হাতাহাতি প্রসঙ্গে পাণ্ডে আজ জানান, লাদাখের সংঘর্ষের পরে নিয়ন্ত্রণ রেখা বরাবর পিএলএ টহলও অনেকটাই বাড়িয়েছে। ফলে প্রায়ই নিয়ন্ত্রণরেখা পার করা ও দু’দেশের সেনার মুখোমুখি হওয়ার ঘটনাও বেড়েছে। ভারতীয় সেনা নির্দিষ্ট নীতি ও নিয়ম মেনে চলছে। অবাঞ্ছিত পরিস্থিতি তৈরি হলেও তা প্রটোকল মেনেই সামাল দেওয়া হচ্ছে। তিনি আরও জানান, চিনারা শুধু সীমান্তের কাছে বেশি করে সেনা মোতায়েনই করছে না, নিয়ন্ত্রণ রেখার ও-পারে বিভিন্ন ধরণের সমর সরঞ্জামও মোতায়েন করছে। গুরুত্বপূর্ণ এলাকাগুলিতে দীর্ঘ সময় ধরে চালাচ্ছে যুদ্ধ মহড়া। অনুশীলনের পরেও তাদের রিজ়ার্ভ ব্যাটেলিয়ন ওই সব এলাকা ছেড়ে যাচ্ছে না।

সেনা সূত্রের খবর, লাদাখের ঘটনার পরে নতুন অনেক সরঞ্জাম কেনা হয়। ইজরায়েল থেকে জরুরি ভিত্তিতে চারটি হেরন এমকে-২ ড্রোন কেনা হচ্ছে। সেগুলিকে সশস্ত্র করা ও উপগ্রহের সঙ্গে যোগাযোগ স্থাপনে ‘চিতা প্রকল্প’ শুরু করতেও আগ্রহী সেনাবাহিনী।

৫ মাউন্টেন ডিভিশনের জিওসি মেজর জেনারেল জুবিন এ মিনওয়াল্লা জানান, বর্তমান বালিপাড়া-চারদুয়ার-তাওয়াং সড়কের পাশাপাশি কালাকতাং থেকে শেরগাঁও, রূপা হয়ে তাওয়াং পর্যন্ত ১৮০ কিলোমিটার দীর্ঘ বিকল্প সড়ক তৈরি হচ্ছে। ফলে সীমান্ত পর্যন্ত পণ্য ও সেনা গতিবিধি সুগম হবে। বিআরও সূত্রে জানানো হয়, নেচিফু ও সে লা-র সুড়ঙ্গপথ আগামী বছরই চালু হয়ে যাবে। অরুণাচলের সঙ্গে রেল, বিমান ও জলপথে যোগাযোগ বাড়ানোর বিভিন্ন প্রকল্পও হাতে নেওয়া হচ্ছে। বাড়ানো হচ্ছে অ্যাডভান্সড ল্যান্ডিং গ্রাউন্ডের সংখ্যা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন