প্রতীকী ছবি।
পশ্চিমবঙ্গের দুর্গাপুরে এক ডাক্তারির ছাত্রীকে ‘গণধর্ষণের’ ঘটনা নিয়ে শোরগোলের মধ্যে এ বার দিল্লির এক বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে এক ইঞ্জিনিয়ারিং ছাত্রীকে গণধর্ষণের চেষ্টার অভিযোগ উঠল চার জনের বিরুদ্ধে। বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরের একটি নির্মীয়মাণ জায়গায় ওই ছাত্রীকে টেনে নিয়ে যান চার জন। তার পর তাঁকে ধর্ষণের চেষ্টা করা হয় বলে অভিযোগ। রবিবারের ঘটনা। বিশ্ববিদ্যালয় চত্বরে পড়ুয়াকে গণধর্ষণের চেষ্টার ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই অভিযুক্তদের গ্রেফতারের দাবিতে বিক্ষোভ শুরু হয়েছে।
এই ঘটনার প্রেক্ষিতে তৃণমূলের এক্স হ্যান্ডলে বিজেপির সমালোচনা করা হয়। লেখা হয়, বাংলায় কোনও ঘটনা ঘটলে তৎপরতার সঙ্গে তা নিয়ে সরব হয় বিজেপি। কিন্তু তাদের পরিচালিত সরকারের নাকের ডগায় যখন দিল্লিতে কোনও ঘটনা ঘটে তখন তারা আশ্চর্য ভাবে নীরব! বাছাই করে এমন সরব হওয়ার অর্থ কী? জাতীয় মহিলা কমিশনকে কে স্বতঃপ্রণোদিত ব্যবস্থা গ্রহণে বাধা দিচ্ছে এ বার! কে নরেন্দ্র মোদীকে বাধা দিচ্ছে নিজের বাড়ির পিছনে ঘটে যাওয়া ঘটনায় ব্যবস্থা নিতে। উনি তো সর্বদা নারীশক্তি নিয়ে কথা বলে যান।
পুলিশ সূত্রে খবর, নির্যাতিতা বি টেকের প্রথম বর্ষের ছাত্রী। তিনি পুলিশের কাছে অভিযোগ করেছেন, চার জন মিলে তাঁকে বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি নির্মীয়মাণ ভবনে টেনে নিয়ে যান। তাঁর পোশাক টেনে ছিঁড়ে ফেলেন। তার পর চার জন মিলে ধর্ষণের চেষ্টা করেন। পুলিশ জানিয়েছে, দুপুর ৩টের সময় ময়দান গঢ়হী থানায় সাহায্য চেয়ে ফোন আসে। সেই ফোন পেয়েই ঘটনাস্থলে পৌঁছোয় পুলিশের একটি দল। তারা ঘটনাস্থল খতিয়ে দেখে। প্রাথমিক ভাবে যৌন হেনস্থার অভিযোগ দায়ের করা হয়। পরে যদিও নির্যাতিতার বয়ানের ভিত্তিতে ধর্ষণের চেষ্টার অভিযোগ দায়ের করেছে পুলিশ। অভিযুক্তদের খোঁজে তল্লাশিও শুরু হয়েছে।
দিল্লির ডেপুটি পুলিশ কমিশনার (দক্ষিণ) অঙ্কিত চৌহান জানিয়েছেন, ময়দান গঢ়হী থানায় একটি অভিযোগ দায়ের হয়েছে। নির্যাতিতার পরিচিত কোনও ব্যক্তি পুলিশকে সোমবার দুপুরে ফোন করে বিষয়টি জানান। সেই খবর পেয়েই ঘটনাস্থলে যায় পুলিশ। নির্যাতিতার সঙ্গে যোগাযোগ করে। পুলিশ সূত্রের খবর, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রায় প্রতিটি কোনায় সিসিটিভি ক্যামেরা লাগানো রয়েছে। নির্যাতিতার বয়ানের ভিত্তিতে ঘটনাস্থল এবং তার আশপাশের সিসিটিভি ফুটেজ খতিয়ে দেখা হচ্ছে। সোমবার রাত থেকেই বিশ্ববিদ্যালয় চত্বর উত্তপ্ত হয়ে রয়েছে। ধর্ষণের চেষ্টার ঘটনা প্রকাশ্যে আসার পর থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের পড়ুয়ারা ধর্নায় বসেন। যদিও বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের তরফে এখনও কোনও বিবৃতি জারি করা হয়নি বা কোনও প্রতিক্রিয়া আসেনি। তবে একটি সূত্রের দাবি, তদন্তে সব রকম ভাবে সহযোগিতার আশ্বাস দিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ। সার্ক গোষ্ঠীভুক্ত দেশগুলির সহযোগিতায় এই বিশ্ববিদ্যালয়টি গড়ে তোলা হয়েছে। সার্ক গোষ্ঠীভুক্ত আটটি দেশের ছেলেমেয়েরা এখানে পড়তে আসেন। বিশ্ববিদ্যালয়টি বিদেশ মন্ত্রকের আওতায় পড়ে।
প্রসঙ্গত, গত শুক্রবার রাতে দুর্গাপুরের একটি বেসরকারি মেডিক্যাল কলেজে এক ডাক্তারি পড়ুয়াকে ‘গণধর্ষণের’ অভিযোগ ঘিরে উত্তপ্ত পশ্চিমবঙ্গ। এই ঘটনায় ইতিমধ্যেই পাঁচ অভিযুক্তকে গ্রেফতার করা হয়েছে। নির্যাতিতা ওড়িশার বাসিন্দা।