অভিযুক্ত তিন কিশোর। ছবি: সংগৃহীত।
মায়ের মৃত্যু মেনে নিতে পারেনি কিশোরটি। বাবার সঙ্গে তারই এক বন্ধুর মায়ের সম্পর্ক ছিল। সেই সম্পর্ক মেনে নিতে না পেরে ওই কিশোরের মা মারা যান। আর গোটাটার জন্য ওই বন্ধুর উপরে গিয়ে আক্রোশ জমা হয় কিশোরটি। শেষে সেই বন্ধু অমন শর্মাকে খুনের ছক কষে দুনিয়া থেকেই সরিয়ে দেয় সে।
পুলিশি জেরায় এমনটাই দাবি করেছে অমন কুশাওয়া নামে ১৮ বছরের ওই কিশোর। আগরার যে এলাকায় সে থাকে, সেখানকার লোকজন তাকে লাকি নামেই চেনে। অমন শর্মা খুনের ঘটনায় লাকির সঙ্গে নিখিল শর্মা এবং গোবিন্দ তোমর নামে দুই কিশোরকে আটক করেছে পুলিশ। নিখিলের বয়স ১৫ এবং গোবিন্দ সদ্য ১৩ বছর পেরিয়েছে।
কী হয়েছিল?
গত রবিবার উত্তরপ্রদেশের আগরায় যমুনা লাগোয়া খান্ডোলি এলাকার নন্দলালপুর জঙ্গলে একটি মুন্ডুহীন দেহ উদ্ধার হয়। তদন্ত নেমে পুলিশ জানতে পারে, ওই দেহটি বছর পনেরোর অমন শর্মার। দশম শ্রেণির ওই ছাত্র গত ২ জুন থেকে নিখোঁজ ছিল।
অমনের এক আত্মীয় ধর্মেন্দ্র শর্মার দাবি, ওই দিন অমনের তিন বন্ধু ওকে ডেকে নিয়ে গিয়েছিল। কিন্তু, রাত বাড়তে থাকলেও অমন বাড়ি ফেরেনি। অথচ যে তিন জন তাকে ডেকে নিয়ে গিয়েছিল, তারা বাড়ি ফিরে আসে। তাদের গিয়ে জিজ্ঞেস করলে জানা যায়, এ ব্যাপারে তারা কিছু জানে না।
আরও পড়ুন: ন’মাসের শিশুকে চলন্ত অটো থেকে ছুড়ে ফেলে গণধর্ষণ মাকে!
কিন্তু, দীর্ঘ ক্ষণ ছেলে ঘরে না ফেরায় ওই কিশোরের পরিবারের তরফে স্থানীয় থানায় একটি নিখোঁজ ডায়েরি করা হয়। একই সঙ্গে জুড়ে দেওয়া হয় অপহরণের অভিযোগও। রবিবার, দেহ উদ্ধারের পর তা শনাক্ত করতে পুলিশ অমনের পরিবারকে ডাকে। নিহতের পোশাক দেখে অমনকে চিহ্নিত করেন তার এক আত্মীয়। এর পরই পরিবারের অভিযোগের ভিত্তিতে অমনের ওই তিন বন্ধুকে আটক করে পুলিশ। পুলিশি জেরায় অমনকে খুনের কথা স্বীকার করে নেয় ওই তিন কিশোর।
তদন্তে যে তথ্য পুলিশের হাতে এসেছে তা রীতিমতো চমকে দেওয়ার মতো। লাকি জানায়, অমনের মায়ের সঙ্গে তার বাবা রামসহায় কুশাওয়ার বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্ক ছিল। লাকির অভিযোগ, তার মায়ের মৃত্যুর জন্য বাবার এই বিবাহ বহির্ভূত সম্পর্কই দায়ী। তাই মায়ের মৃত্যুর প্রতিশোধ নিতেই সে বন্ধু অমনকে খুনের পরিকল্পনা করে। অমনকে খুনের পর তার মুন্ডু কেটে শরীর থেকে আলাদা করে লাকি। এর পর নিখিল এবং গোবিন্দর সাহায্যে তার হাতের আঙুলগুলো কেটে জঙ্গলে ফেলে দেয় সে। পুলিশ জানিয়েছে, অমনের মাথার খোঁজ এখনও মেলেনি।