ব্রিগেডের মঞ্চে এম কে স্ট্যালিন এবং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ফাইল চিত্র।
বিজেপির বিরুদ্ধে জোটের প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী হিসেবে রাহুল গাঁধীর নাম প্রস্তাব করে জল্পনা উস্কে দিয়েছিলেন তিনি। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ডাকে কলকাতায় ঘুরে যাওয়ার পরে সেই এম কে স্ট্যালিন ব্যাখ্যা দিলেন, তিনি তামিলনাড়ুর মানুষের ইচ্ছার কথা বলেছিলেন শুধু। বিরোধী দলগুলির নেতারা যদি স্থির করেন প্রধানমন্ত্রী ঠিক হবে ভোটের পরে, সেটা তাঁদের ইচ্ছা।
চেন্নাইয়ে করুণানিধির মূর্তি উন্মোচন অনুষ্ঠানে স্ট্যালিন প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী হিসেবে রাহুলের জন্য তামিলনাড়ু থেকে লোকসভা আসন বেছে দেওয়ার প্রস্তাব দিয়েছিলেন। তবে শনিবার ব্রিগেড সমাবেশে এসে আর ওই প্রসঙ্গে যাননি তিনি। যা নিয়ে বিজেপির তামিলনাড়ু রাজ্য সভাপতি তামিলিসাই সুন্দররাজন মন্তব্য করেছেন, ‘‘চেন্নাইয়ে স্ট্যালিন বলেছিলেন রাহুল প্রধানমন্ত্রী পদপ্রার্থী। কলকাতায় গিয়ে সেটা আর বলতে পারলেন না। এর থেকেই বোঝা যায়, বিরোধী ঐক্য কত ছন্নছাড়া!’’
এই প্রসঙ্গে স্ট্যালিনের রসিকতা, ‘‘যখন আমি ওই কথা বলেছিলাম, তখন বলা হয়েছিল কেন বললাম? এ বার যখন বলিনি, তখন জানতে চাওয়া হচ্ছে কেন বলিনি?’’ চেন্নাইয়ে রবিবার তাঁর ব্যাখ্যা, ‘‘ডিএমকে-র সমাবেশে আমি পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী হিসেবে রাহুল গাঁধীর নাম বলেছিলাম। এতে অসুবিধার কী আছে? এটা তামিলনাড়ুর মানুষের ইচ্ছা ও আকাঙ্ক্ষার কথা। বাংলায় বিরোধী নেতারা ঠিক করেছেন, ভোটের পরে তাঁরা এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেবেন। সেটা তাঁদের ইচ্ছা।’’
আরও পড়ুন: ভারত-বন্ধনে তৃপ্ত মমতা, বোঝালেন নিজের জনপ্রিয়তাও
ব্রিগেড সমাবেশে মমতা বলেছেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রী কে হবেন, ভাবার দরকার নেই। ভোটের পরে আমরা সিদ্ধান্ত নেব।’’ ওই সমাবেশেই ফারুক আবদুল্লা, শরদ পওয়ার, অরুণ শৌরি, অখিলেশ যাদবেরাও প্রধানমন্ত্রিত্বের দৌড় নিয়ে এখনই মাথা না ঘামানোর কথা বলেছেন। তার ২৪ ঘণ্টার মধ্যে ডিএমকে নেতা যা বলেছেন, তা নিয়ে তৃণমূলের তরফে আনুষ্ঠানিক ভাবে কেউ মুখ খোলেননি। তবে দলের শীর্ষ নেতার মতে, ‘‘তৃণমূল নেত্রীর ডাকে এসেছিলেন সব বিরোধী দলের নেতৃত্ব। তাঁরা হাতে হাত ধরে এগোনোর যে বার্তা দিয়েছেন, সেটাই এখন পরবর্তী লক্ষ্য।’’ কংগ্রেস নেতা দিগ্বিজয় সিংহ আবার এ দিনই বলেছেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রী কে হবেন, বিরোধী নেতারা তা ভোটের পরে ঠিক করবেন। কিন্তু কংগ্রেসের কথা জিজ্ঞেস করলে বলব, আমাদের তরফে পদপ্রার্থী রাহুল গাঁধীই।’’ কংগ্রেস নেতারা ঘরোয়া আলোচনায় মনে করিয়ে দিচ্ছেন, স্ট্যালিন অবস্থান বদল করেননি। বরং তামিলনাড়ুর মানুষের ‘ইচ্ছা’ উল্লেখ করে তিনি কৌশলী অবস্থান নিয়েছেন।
আরও পড়ুন: ব্রিগেডে তেইশ কণ্ঠের এক সুরে এখনও অস্বস্তিতে মোদী!
তৃণমূল অবশ্য এ সব আলোচনায় না গিয়ে সরকার পরিবর্তনেই নজর দিচ্ছে। নতুন সরকার এলে ব্রিগেডেই বিজয় সমাবেশের জন্য আগাম আমন্ত্রণ জানিয়ে রেখেছেন মমতা।
(ভারতের রাজনীতি, ভারতের অর্থনীতি- সব গুরুত্বপূর্ণ খবর জানতে আমাদের দেশ বিভাগে ক্লিক করুন।)