তৃণমূল কংগ্রেসের দোলা সেন, কংগ্রেসের প্রমোদ তিওয়ারি-সহ বিভিন্ন বিরোধী নেতারা পাশাপাশি দাঁড়িয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে একসুরে কথা বলেছেন। ফাইল চিত্র।
কংগ্রেসের সঙ্গে হাত মিলিয়ে সংসদে যৌথ বিবৃতি দিচ্ছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দল, এমন উদাহরণ সাম্প্রতিক অতীতে বিরল। কিন্তু আজ এমনটাই ঘটল রাজ্যসভায়।
বিহারের সাম্প্রতিক বিষমদ কাণ্ডের পরিপ্রেক্ষিতে সেই রাজ্যে নরেন্দ্র মোদী সরকার মানবাধিকার কমিশনের প্রতিনিধি দল পাঠিয়েছে তদন্তের জন্য। জেডিইউ এবং আরজেডি-র অনুরোধে সমস্ত বিরোধী দল কেন্দ্রের এই পদক্ষেপের নিন্দা করে রাজ্যসভায় একযোগে আজ কক্ষত্যাগ করেছে। পরে তৃণমূল কংগ্রেসের দোলা সেন, কংগ্রেসের প্রমোদ তিওয়ারি-সহ বিভিন্ন বিরোধী নেতারা পাশাপাশি দাঁড়িয়ে সাংবাদিকদের সঙ্গে একসুরে কথা বলেছেন। পরে ১৪টি সমমনস্ক দলের একটি বিবৃতিও জারি করা হয় এই বিষয়ে।
তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে বিরোধীদের এই কক্ষত্যাগে রাজ্যসভায় নেতৃত্ব দেন দোলা সেন। জ়িরো আওয়ারে একশো দিনের কাজ-সহ বিভিন্ন কেন্দ্রীয় প্রকল্পে কেন্দ্র থেকে বকেয়া অর্থ না-পাওয়া নিয়ে তাঁর বলার কথা ছিল। সেটি বলার পরেই বিহারে মানবাধিকার কমিশনের প্রতিনিধি দল পাঠানোর প্রসঙ্গে চলে যান দোলা। পশ্চিমবঙ্গেও পান থেকে চুন খসলে মানবাধিকার কমিশনের দল পাঠানো হয়— এ কথা রাজ্যসভার ভিতরে ও বাইরে তোলেন তিনি। দোলার কথায়, “খুবই দুঃখের বিষয় মানবাধিকার কমিশনের দল বিহারে গিয়েছে। এঁরা বাংলায় যান, বিহারে যান, কিন্তু কখনও গুজরাত বা উত্তরপ্রদেশে যান না। এই প্রতিবাদে আমরা কক্ষত্যাগ করছি।”
রাজনৈতিক সূত্রের মতে, শুধুমাত্র আরজেডি-র অনুরোধেই নয়, এই প্রতিবাদ তৃণমূলের রাজনীতি তথা কেন্দ্র-বাংলা সম্পর্কের আওতাতেও পড়ছে। সম্প্রতি বগটুই কাণ্ডের অন্যতম অভিযুক্ত লালন শেখের মৃত্যুর পর স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে তদন্ত শুরু করেছে এই মানবাধিকার কমিশন। এর আগেও পশ্চিমবঙ্গে বিধানসভা ভোটের পর রাজনৈতিক হিংসার তদন্তে নামানো হয়েছিল কমিশনকে। তৃণমূলের বক্তব্য, রাজনৈতিক প্রতিহিংসা মেটানোর জন্য বিভিন্ন সাংবিধানিক সংস্থাগুলিকে ব্যবহার করছে কেন্দ্র।
আজ যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘বিজেপির দ্বিচারিতা স্পষ্ট। ২০১৬ সালে মদে নিষেধাজ্ঞা আনে জেডিইউ-বিজেপি সরকার। সেই থেকে ২০২১ পর্যন্ত বিষমদে ২০০টিরও বেশি মৃত্যুর ঘটনা ঘটেছে। কিন্তু মানবাধিকার কমিশন সেই সময়ে এক বারও তদন্তের প্রয়োজন রয়েছে বলে মনে করেনি।’ তৃণমূলের পক্ষ থেকে এ-ও বলা হয়, গুজরাতের মোরবীতে সেতু ভেঙে পড়ার পরেও সেখানে যায়নি কমিশন। শুধুমাত্র বিরোধী দল শাসিত রাজ্যের ক্ষেত্রেই বেছে বেছে কেন্দ্রীয় সংস্থার তদন্ত করানো হচ্ছে।