সংসদের ভিতরে-বাইরে নরেন্দ্র মোদী সরকারকে আক্রমণ শুরু করল তৃণমূল। গাঁধী মূর্তির পাদদেশে মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে সরব হয়েছেন তৃণমূল সাংসদরা। আবার সংসদে মূল্যবৃদ্ধি, কাশ্মীর-সহ নানা বিষয়ে সরকারকে চাপ দিতে আসরে নেমেছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের দল।
এ বারের অধিবেশনে যে সরকারের বিরুদ্ধে চড়া সুরেই চলবে তৃণমূল, তা দু’দিন আগেই স্পষ্ট করে দিয়েছিলেন নেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজধানীতে আন্তঃরাজ্য পরিষদের বৈঠকে একাধিক প্রশ্ন নিয়ে সরব হন তিনি। দলীয় শীর্ষ নেতৃত্ব জানান, জাতীয় স্তরে মোদী-বিরোধী
পরিসরটিকে যতটা সম্ভব দখল করাটাই তৃণমূলের এখনকার রাজনৈতিক কৌশল। আজ দিনভর কেন্দ্র-বিরোধিতার পরে তৃণমূলের এক সাংসদের বক্তব্য, ‘অন্য কারও হাত ধরে নয়, আমরা নিজেদের মতো করে প্রধান বিরোধী দলের ভূমিকা পালন করব।’ পশ্চিমবঙ্গের ভোটে ২১২টি আসন পাওয়ার পর এই প্রথম সংসদীয় অধিবেশন তৃণমূলের। রাজনীতিকদের মতে, এ বার চাপমুক্ত হয়ে গোটা অধিবেশনেই বিভিন্ন বিষয় নিয়ে সরব হতে দেখা যাবে মমতার দলের সাংসদদের।
সকালেই প্ল্যাকার্ড হাতে তাই গাঁধীমূর্তির পাদদেশে হাজির ছিলেন সৌগত রায়, কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়, দীনেশ ত্রিবেদী, সুগত বসু, রত্না দে নাগ, প্রসূন বন্দ্যোপাধ্যায়, মুনমুন সেন, তাপস পালেরা। প্ল্যাকার্ডের বক্তব্য, ‘বাংলা ক্ষুধার্ত, কেন্দ্রীয় সরকার অবিলম্বে ব্যবস্থা নিক’। কোথাও বলা হয়েছে, ‘পেঁয়াজ কাটার সময় চোখে জল আসে। কিন্তু এখন পরিস্থিতি এমনই যে পেঁয়াজ খাওয়ার কথা ভাবলেই চোখে জল আসছে মানুষের।’ পাশাপাশি চলে স্লোগান এবং বক্তৃতা। পরে সুগত বসু জানান, ‘‘খাদ্যপণ্যের দাম আকাশ ছোঁয়া। এটা হওয়ার কোনও কারণই নেই, যেহেতু পেট্রোপণ্যের দাম এখনও যথেষ্ট কম।’’ তৃণমূল নেতৃত্বের দাবি, মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে দুই সভায় আলোচনার পর কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী অরুণ জেটলিকে সংসদে বিষয়টি নিয়ে জবাব দিতে হবে। আজ সংসদের বিষয় উপদেষ্টা কমিটির বৈঠকে স্থির হয়েছে আগামী ২৭ তারিখ লোকসভায় মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে আলোচনা হবে। লোকসভায় অধিবেশন শুরুর আগে সুদীপ বন্দ্যোপাধ্যায়ের নেতৃত্বে মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে ধর্না আন্দোলন করে তৃণমূল।
অন্য দিকে, রাজ্যসভায় কাশ্মীর নিয়ে আলোচনা প্রসঙ্গে ডেরেক পশ্চিমবঙ্গের প্রসঙ্গ টেনে এনেছেন। তাঁর কথায়, ‘‘পশ্চিমবঙ্গের জঙ্গলমহলে বিচ্ছিন্নতাবাদী আন্দোলন কিছু কম ছিল না। রাজ্য সরকার শক্ত হাতে তা দমন করেছে। পুলিশি অভিযােনর পাশাপাশি সেখানকার মানুষের জন্য উন্নয়নের একটি মডেলও বাস্তবায়িত করা হয়েছে।’’ তাঁর মতে, কাশ্মীরের মানুষের
জন্য যে সহানুভূতি প্রয়োজন ছিল, তা আদৌ দেখানো হয়নি। এক কথায় শুধু সামরিক দাওয়াই দিয়ে নয়, উপত্যকার মন বুঝে রাজনৈতিক ভাবে পরিস্থিতির মোকাবিলা করার পরামর্শই আজ কেন্দ্রকে দিয়েছে তৃণমূল। ডেরেকের কথায়, ‘‘এখনও পর্যন্ত সেই কাজে সম্পূর্ণ ব্যর্থ মোদী সরকার।’’