National News

বিতর্ক সত্ত্বেও সংশোধনী ছাড়াই রাজ্যসভায় পাশ ট্রান্সজেন্ডার বিল

বিলটি নিয়ে রাজ্যসভায় আপত্তি তোলেন সমাজবাদী পার্টির সাংসদ জয়া বচ্চন। লিঙ্গ নির্ধারণের জন্য শংসাপত্রের ধারণাতেও আপত্তি তাঁর।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২৬ নভেম্বর ২০১৯ ১৯:০৯
Share:

স‌ংশোধনী ছাড়াই পাশ ট্রান্সজেন্ডার বিল। ছবি: পিটিআই।

লোকসভার পর এ বার রাজ্যসভাতেও পাশ হল ট্রান্সজেন্ডার বিল। মঙ্গলবার এই বিলটি রাজ্যসভায় পেশ করে নরেন্দ্র মোদী সরকার। কোনও রকম সংশোধনী ছাড়াই তা পাশ হয়ে যায়। খসড়া বিলটি সংশোধনীর জন্য সিলেক্ট কমিটিতে যাওয়ার দাবিও খারিজ হয়ে যায়।

Advertisement

এ দিন রাজ্যসভায় অধিবেশনের শুরুতেই ট্রান্সজেন্ডার পার্সন (প্রোটেকশন অব রাইটস) বিলটি পেশ করেন সামাজিক ন্যায় ও ক্ষমতায়ন মন্ত্রী থাবরচন্দ্র গহলৌত। কোনও রকম স‌ংশোধনী ছাড়াই কেবলমাত্র ধ্বনিভোটে তা পাশ হয়ে যায়।

চলতি বছরের ৫ অগস্ট বাদল অধিবেশনে এই বিলটি লোকসভায় পাশ হওয়ার পর থেকেই তা নিয়ে যথেষ্ট জলঘোলা হয়েছিল। কেন্দ্রীয় সরকারের দাবি ছিল, সামাজিক, অর্থনৈতিক, শিক্ষাগত ও স্বাস্থ্য সংক্রান্ত নানা ক্ষেত্রে রূপান্তরকামী সম্প্রদায়ের মানুষজনের অধিকার রক্ষা করবে এই বিল। মূলত, ওই সমস্ত ক্ষেত্রে বৈষম্য দূর করার জন্যই এই বিলটি পেশ করা হয়েছে বলে দাবি করে সরকার। তবে তা মানতে নারাজ ছিল বিরোধীরা। বিলটি সংশোধনের জন্য সিলেক্ট কমিটিতে পাঠানোর দাবিও তোলেন তাঁরা।

Advertisement

আরও পড়ুন: শবরীমালায় ঢুকে ইতিহাস গড়া বিন্দুর চোখেমুখে ছিটিয়ে দেওয়া হল মরিচ গুঁড়ো!

তবে বিলের কয়েকটি প্রস্তাব নিয়ে এই সম্প্রদায়ের এক‌াংশের মধ্যেই তীব্র আপত্তি রয়েছে। বিলের প্রস্তাব অনুযায়ী, এই সম্প্রদায়ের মানুষজনের লিঙ্গ নির্ধারণের জন্য কোনও ট্রান্স-মানুষের মতামতের পরিবর্তে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তির এলাকার জেলাশাসকের শংসাপত্রই বিবেচ্য হবে। এ নিয়ে ট্রান্স-সম্প্রদায়ের একাংশের মতে, এতে এক জন ট্রান্স-মানুষের মৌলিক অধিকার খর্ব করা হচ্ছে। তাঁদের বক্তব্য, লিঙ্গ নির্ধারণের ক্ষেত্রে এক জন ট্রান্স-মানুষের নিজস্ব মতামতই যথেষ্ট। তার জন্য কোনও শংসাপত্রের প্রয়োজন নেই।

আরও পড়ুন: সরকার পড়তে যাচ্ছে, ইঙ্গিত মিলে গিয়েছিল অজিত পওয়ারের ইস্তফাতেই

বিলে আরও বলা হয়েছে, কোনও ট্রান্স-মানুষের প্রতি যৌন অপরাধ হলে, সে ক্ষেত্রে দোষীর ৬ মাস থেকে ২ বছরের শাস্তি হবে। যদিও মহিলাদের ক্ষেত্রে একই অপরাধে দোষীর ৭ বছরের শাস্তির আইন রয়েছে। নিজের পরিবারের সঙ্গে ট্রান্স-মানুষদের থাকতে হবে বলে এই বিলে বলা হয়েছে। যা নিয়েও আপত্তি রয়েছে এই সম্প্রদায়ের একাংশের।

এ দিন বিলটি নিয়ে রাজ্যসভায় আপত্তি তোলেন সমাজবাদী পার্টির সাংসদ জয়া বচ্চন। লিঙ্গ নির্ধারণের জন্য শংসাপত্রের ধারণাতেও আপত্তি তাঁর। তাঁর মতে, বিলের খসড়াটি অত্যন্ত তাড়াহুড়ো করে তৈরি করা হয়েছে। শংসাপত্রের মাধ্যমে কারও লিঙ্গ নির্ধারণেও তাঁর প্রতি বৈষম্য করা হয় বলে মত তাঁর। জয়ার এই মত সমর্থন করেছেন কংগ্রেস সাংসদ এল হনুমানথাইয়া। তাঁর কথায়: ‘‘কোনও ব্যক্তি যে ট্রান্সজেন্ডার, তা এক জন জেলাশাসক কী ভাবে নির্ধারণ করতে পারেন?’’

আরও পড়ুন: মোদী-অমিতের বৈঠক থেকেই ইস্তফার নির্দেশ গেল ফডণবীসের কাছে

প্রায় একই বক্তব্য শোনা গেল ক্যুইয়ার ফেমিনিস্ট অ্যাক্টিভিস্ট তথা স্যাফো-র সহ প্রতিষ্ঠাতা মালবিকার কণ্ঠেও। তাঁর প্রশ্ন, ‘‘এক জন জেলাশাসক কী ভাবে নিজে সার্টিফিকেট দেবেন? ফলে লিঙ্গ নির্ধারণের জন্য খাতায়কলমে কোনও স্ক্রিনিং কমিটি না থাকলেও কার্যত তার মধ্যে দিয়েই যেতে হবে এক জন ট্রান্স-মানুষকে। এতে লিঙ্গ নির্ধারণের ক্ষেত্রে সেল্ফ আইডেন্টিফিকেশনের বন্দোবস্তই তো নেই।’’ মালবিকা বলেন, ‘‘এই বিল একেবারেই ট্রান্স-মানুষদের উপকারে আসবে না। এর খসড়া তৈরির সময়েই বিলের বিরুদ্ধে আওয়াজ তুলেছিলেন অনেকে। এটি সিলেক্ট কমিটিতে গেলে বা এর সংশোধনী হলেই বরং ভাল হত। একে কোনও মতেই ট্রান্স-মানুষদের দিনবদলের বিল বলা যাবে না।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন