বিশাখাপত্তনমে আইএনএস হিমগিরি। ছবি: পিটিআই।
মুম্বইয়ের ‘মাঝগাঁও ডক ইয়ার্ড’-এর তৈরি দু’টি ‘স্টেলথ্ ফ্রিগেট’ আনুষ্ঠানিক ভাবে ভারতীয় নৌসেনার অন্তর্ভুক্ত হল। মঙ্গলবার বিশাখাপত্তনমের পূর্বঞ্চলীয় নৌ কমান্ডে আইএনএস উদয়গিরি (এফ৩৫) এবং আইএনএস হিমগিরি (এফ৩৪)— এক সঙ্গে কমিশনিংয়ের মাধ্যমে ভারতীয় নৌসেনায় যোগ দিয়েছে। প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিংহের উপস্থিতিতে সম্পন্ন হয় কমিশনিং প্রক্রিয়া।
শত্রুপক্ষের রাডার-নজরদারি ফাঁকি দিতে সক্ষম এই ফ্রিগেট (ছোট রণতরী) কার্যত ভারতীয় নৌসেনার মেঘনাদ। ‘মেঘনাদবধ’ কাব্যে রাবণের সেনাপতি ইন্দ্রজিতের কথা লিখেছিলেন মাইকেল মধুসূদন দত্ত। যিনি ছিলেন ‘মেঘনাদ’। মেঘের আড়াল থেকে যুদ্ধ করতেন। তিনি কোথায় আছেন, ঠাহর পেত না বিপক্ষ সেনাবাহিনী। মেঘের অন্তরাল থেকে তিনি শক্তিশেল হেনেছিলেন লক্ষ্মণের বুকে।
ঘটনাচক্রে, হিমগিরি ও উদয়গিরির আগে ভারতীয় নৌবাহিনীকে ‘মেঘনাদ’ বানিয়ে দিয়েছিল মধুসূদনের শহর কলকাতা। ‘গার্ডেনরিচ শিপ বিল্ডার্স অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়র্স লিমিটেড’-এর তৈরি আইএনএস দুনাগিরিকে ২০২২ সালের জুলাই মাসে নৌসেনার হাতে তুলে দিয়েছিলেন রাজনাথ। নৌসেনা সূত্রের খবর অবস্থান আড়াল করে আত্মরক্ষার পাশাপাশি ক্ষেপণাস্ত্রের আঘাত হেনে শত্রুপক্ষের যুদ্ধজাহাজ এমনকি বন্দর ধ্বংস করার ক্ষমতা রয়েছে এই শ্রেণির যুদ্ধজাহাজের।
সত্তরের দশকে আইএনএস উদয়গিরি এবং আইএনএস হিমগিরি নামে দু’টি ‘ল্যান্ডার’ শ্রেণির যুদ্ধজাহাজ ভারতীয় নৌসেনায় যোগ দিয়েছিল। প্রায় দু’দশক আগে তারা অবসরে যায়। তাদেরই স্মৃতিতে নামকরণ করা হয়েছে নতুন দু’টি স্টেলথ্ ফ্রিগেটের। ভারতীয় নৌবাহিনীকে আধুনিক যুদ্ধের উপযোগী করে তোলার উদ্যোগ শুরু হয়েছিল ইউপিএ সরকারের আমলেই। সেই পরিকল্পনারই অঙ্গ হিসেবে পি-১৭এ প্রকল্পে মোট সাতটি শিবালিক গোত্রের ‘স্টেলথ ফ্রিগেট’ নির্মাণ শুরু হয় প্রায় দেড় দশক আগে। ২০১০ সালে জলে ভাসে ওই গোত্রের প্রথম ফ্রিগেট ‘আইএনএস শিবালিক’। এর পর ২০১১ সালে ‘আইএনএস সতপুরা’ এবং ২০১২ সালে ‘আইএনএস সহ্যাদ্রি’। মুম্বইয়ের মাঝগাঁও জাহাজ নির্মাণ কারখানায় তৈরি আইএনএস নীলগিরি ২০১৯ সালে নৌসেনার অন্তর্ভুক্ত হয়েছিল।