Unnao

যোগীরাজ্যের উন্নাওয়ে জমি থেকে উদ্ধার ২ দলিত মেয়ের দেহ, বিষপ্রয়োগ!

সঙ্কটজনক আরও ১। পরিবারের অভিযোগ, হাত-পা বাঁধা অবস্থায় উদ্ধার করা হয় দেহগুলি।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

উন্নাও শেষ আপডেট: ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২১ ১১:০১
Share:

উদ্ধার হওয়া দুই মৃত কিশোরীর দেহ ঘিরে পরিবারের লোকজন। ছবি: টুইটার থেকে সংগৃহীত।

ভরদুপুরে জমিতে ঘাস কাটতে গিয়ে রহস্য মৃত্যু ২ দলিত কন্যার। মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছে আরও এক জন। এই ঘটনায় ফের উত্তাল যোগী রাজ্যের উন্নাও। মেয়েগুলির উপর বিষপ্রয়োগ করা হয়েছে বলে অভিযোগ স্থানীয়দের। নয়নাতদন্তের প্রাথমিক রিপোর্টেও বিষক্রিয়ার প্রমাণ মিলেছে বলে জানা গিয়েছে। আর তাতেই ফের প্রশ্নের মুখে যোগীর রাজ্যে মেয়েদের নিরাপত্তার বিষয়টি। এই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত কাউকে গ্রেফতার করা যায়নি। সঙ্কটজনক অবস্থায় হাসপাতালে যুঝছে যে মেয়েটি, এখনও পর্যন্ত তার বয়ান নেওয়া সম্ভব হয়নি। তাই তাদের সঙ্গে ঠিক কী ঘটেছিল, তা এখনও অস্পষ্ট।

Advertisement

বুধবার উন্নাও জেলায় অশোয়া থানা এলাকার অন্তর্গত বাবুরা জেলায় এই মর্মান্তিক ঘটনা ঘটে। যে দুই কিশোরী মারা গিয়েছে, তাদের বয়স যথাক্রমে ১৩ এবং ১৬। হাসপাতালে চিকিৎসাধীন কিশোরীর বয়স ১৭। ১৬ ও ১৭ বছর বয়সি মেয়ে দু’টি দুই বোন এবং ১৩ বছরের কিশোরীটি তাদের তুতো বোন বলে জানা গিয়েছে। তাদের পরিবারের তরফে জানানো হয়েছে, দুপুর আড়াইটে নাগাদ বাছুরের জন্য ঘাস কাটতে বেরিয়েছিল ৩ জন। তার পর অন্ধকার নামার পরও বাড়ি ফেরেনি তারা। খুঁজতে গিয়ে দেখা যায়, জমিতে হাত-পা বাঁধা অবস্থায় পড়ে রয়েছে তারা। মুখ দিয়ে গ্যাঁজলা বেরোচ্ছে।

তড়িঘড়ি ওই ৩ জনকে উদ্ধার করে স্থানীয় হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে ২ জনকে মৃত বলে ঘোষণা করেন চিকিৎসকেরা। অন্য জনের শ্বাস-প্রশ্বাস চালু ছিল। জরুরি ভিত্তিতে চিকিৎসা শুরু হয় তার। তবে মেয়েটির অবস্থা অত্যন্ত আশঙ্কাজনক। মেয়েটির দাদা জানিয়েছে, পরনের ওড়না দিয়েই বোনের হাত-পা বেঁধে ফেলে রেখে গিয়েছিল কেউ। কিন্তু হাত-পা বাঁধার বিষয়টি তাঁদের জানা নেই বলে দাবি করেন লখনউ রেঞ্জের আইজি লক্ষ্মী সিংহ। তিনি বলেন, ‘‘মেয়েটির দাদা হাত-পা বাঁধা ছিল বলছে বটে। কিন্তু এ ব্যাপারে কিছু জানা নেই আমাদের। কারণ পুলিশ পৌঁছনোর আগেই মেয়েগুলিকে ঘটনাস্থল থেকে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হয়।’’

Advertisement

উন্নাওয়ের এসপি সুরেশরাও এ কুলকার্নি বলেন, ‘‘নিজেদের জমিতেই অচৈতন্য অবস্থায় পড়েছিল মেয়েগুলি। সেখান থেকে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয় তাদের। উদ্ধার করার সময় তাদের মুখ দিয়ে গ্যাঁজলা বের হচ্ছিল বলে জানা গিয়েছে। বিষ প্রয়োগের লক্ষণ পাওয়া গিয়েছে বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরাও। জিজ্ঞাসাবাদ করছি আমরা। নিহতদের ময়নাতদন্তের রিপোর্ট পেলেই মৃত্যুর কারণ স্পষ্ট ভাবে জানা যাবে। সেই বুঝে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হবে।’’ লখনউ রেঞ্জের এডিজি এসএন সবত জানান, ঘটনাস্থলে ধস্তাধস্তির কোনও চিহ্ন যদিও মেলেনি। কবে সব দিকই খতিয়ে দেখা হচ্ছে। বিষয়টি তদন্ত করে দেখতে ৬ জনের একটি তদন্তকারী দলও গঠন করা হয়েছে বলে জানা গিয়েছে।

যে জমি থেকে মেয়েগুলিকে উদ্ধার করা হয়, তার আশেপাশেও কোথাও সিসিটিভি ক্যামেরা নেই। তাই একে একে গ্রামবাসীদেরই জেরা করা হচ্ছে। তবে মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ছে যে মেয়েটি, তাকে দিল্লির অল ইন্ডিয়া ইনস্টিটিউট অব মেডিক্যাল সায়েন্সেস (এমস)-এ স্থানান্তরিত করার দাবি তুলেছেন বিভিন্ন দলিত সংগঠনের নেতা এবং ভীম আর্মির প্রধান চন্দ্রশেখর আজাদ। টুইটারে তিনি লেখেন, ‘আহত মেয়েটিকে অবিলম্বে এমসে সরিয়ে নিয়ে যাওয়া প্রয়োজন। দেশে দলিতরা লাগাতার নৃশংসতার সাক্ষী হচ্ছেন। এই ধরণের নৃশংসতা চলতে দেওয়া যায় না’।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন