Maharashtra Politics

এ বার একসঙ্গে পা মেলাবেন উদ্ধব ও রাজ ঠাকরে! হিন্দি চাপিয়ে দেওয়ার প্রতিবাদে একমঞ্চে দুই ভাই

মুম্বইয়ে উদ্ধব-রাজের নেতৃত্বে পদযাত্রার কথা জানালেন শিবসেনা (ইউবিটি) নেতা সঞ্জয় রাউত। এক্স হ্যান্ডলে পোস্ট করে ‘ঐক্যবদ্ধ মিছিল’-এর কথা ঘোষণা করেছেন তিনি।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ২৭ জুন ২০২৫ ১১:৫০
Share:

(বাঁ দিকে) উদ্ধব ঠাকরে এবং রাজ ঠাকরে (ডান দিকে)। —ফাইল চিত্র।

আবার পাশাপাশি আসতে চলেছেন দুই ভাই! উদ্ধব ঠাকরে এবং রাজ ঠাকরে। দুই ভাইকে একত্রে এনে দিল হিন্দি ভাষা নিয়ে বিরোধিতা! মহারাষ্ট্রের স্কুলে পাঠ্যক্রমে হিন্দি বাধ্যতামূলক করার পদক্ষেপের বিরুদ্ধে ঐক্যবদ্ধ তাঁরা! জানা গিয়েছে, জাতীয় শিক্ষানীতি ২০২০ অনুসারে স্কুলে তিন ভাষা বাধ্যতামূলক করার বিরোধিতায় একই পদযাত্রায় হাঁটবেন উদ্ধব এবং রাজ।

Advertisement

মুম্বইয়ে দুই ভাইয়ের নেতৃত্বে পদযাত্রার কথা জানালেন শিবসেনা (ইউবিটি) নেতা সঞ্জয় রাউত। এক্স হ্যান্ডলে পোস্ট করে ‘ঐক্যবদ্ধ মিছিল’-এর কথা ঘোষণা করেছেন তিনি। সেই পোস্টেই উদ্ধব এবং রাজের এক সঙ্গে একটি ছবি পোস্ট করেন। দুই ভাইয়ের পিছনে বাল ঠাকরের প্রতিকৃতি!

চলতি বছরের শেষেই বৃহন্মুম্বই পুরসভা নির্বাচন। হিন্দি ভাষা বাধ্যতামূলক করার প্রতিবাদেই কি শুধু জোট বাঁধছেন দুই ভাই, নাকি এর নেপথ্যে রয়েছে কোনও কৌশল? অনেকের মতে, পুরসভা নির্বাচনের কথা মাথায় রেখেই বিজেপির বিরুদ্ধে লড়াই করতে একজোট হচ্ছেন উদ্ধব এবং রাজ!

Advertisement

মুম্বইয়ে এই পদযাত্রা প্রথমে হওয়ার কথা ছিল ৬ জুলাই। মহারাষ্ট্র নবনির্মাণ সেনা (এমএনএস)-র প্রতিষ্ঠাতা রাজই এই পদযাত্রার উদ্যোক্তা। তবে পরে তিনি জানান কর্মসূচির সূচিতে কিছু বদল করা হচ্ছে। ৬ জুলাইয়ের পরিবর্তে ৫ জুলাই হবে ওই পদযাত্রা। রাজের ঘোষণার পরই তা নিজের সমাজমাধ্যমে জানান উদ্ধব। এ ছাড়াও, একই বিষয়ে ৭ জুলাই মুম্বই-বিরোধী সমন্বয় কমিটির ডাকা পদযাত্রাতেও থাকবেন তিনি। সেই পদযাত্রায় রাজ থাকবেন কি না, তা এখনও স্পষ্ট নয়।

জাতীয় শিক্ষানীতি ২০২০ অনুসারে গত এপ্রিলে মহারাষ্ট্রের মরাঠি এবং ইংরেজিমাধ্যম স্কুলগুলিতে প্রথম থেকে পঞ্চম শ্রেণি পর্যন্ত হিন্দি বাধ্যতামূলক তৃতীয় ভাষা হিসেবে ঘোষণা করেছিল রাজ্য সরকার। সরকারের এই সিদ্ধান্ত নিয়ে শোরগোল শুরু হয়। বিতর্কের মধ্যে আপাতত এই সিদ্ধান্ত থেকে সরে আসার কথা জানিয়েছেন মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী দেবেন্দ্র ফডণবীস। মরাঠা ভাবাবেগের কথা মাথায় রেখে তিনি বিষয়টি নিয়ে ‘ধীরে চলো নীতি’ গ্রহণের বার্তা দিলেন। গত মঙ্গলবার ফডণবীস জানান, মন্ত্রিসভার বৈঠকে তৃতীয় ভাষা হিসেবে হিন্দিকে বাধ্যতামূলক করার বিষয়টি স্থগিত রাখার সিদ্ধান্ত হয়েছে। তবে তাতেও বিতর্ক থামছে না। বিরোধীদের দাবি, সরকার হিন্দি বাধ্যতামূলকের বিষয়টি পুরোপুরি বাতিল করেনি। জিইয়ে রেখেছে বিষয়টি। সেই নিয়েই এ বার এক জোট হয়ে পথে নামছেন উদ্ধব এবং রাজ।

উদ্ধব এবং রাজের মেলবন্ধন নিয়ে মাস দুয়েক আগেও জল্পনা ছড়িয়েছিল। কেন্দ্রবিন্দু ছিল সেই মহারাষ্ট্র এবং মরাঠি ভাষার ‘স্বার্থরক্ষা’! বিভেদ ভুলে বৃহত্তর স্বার্থে একজোট হওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছিলেন উদ্ধব এবং রাজ। দূরত্ব ঘুচিয়ে ফেলার ইঙ্গিতটা প্রথমে এসেছিল রাজের তরফ থেকেই। খুড়তুতো ভাইয়ের সেই ইঙ্গিতে সাড়া দিয়েছিলেন উদ্ধবও। জানিয়েছিলেন, তিনিও মহারাষ্ট্র এবং‌ মরাঠাদের স্বার্থে মতপার্থক্য দূরে সরিয়ে রাখতে চান।

উল্লেখ্য, ১৯ বছর আগে দুই ভাইয়ের পথ আলাদা হয়ে যায়। ২০০৫ সালে বালাসাহেবের জীবদ্দশাতেই শিবসেনা ছাড়েন রাজ। পরের বছর তৈরি করেন নিজের নতুন দল মহারাষ্ট্র নবনির্মাণ সেনা বা এমএনএস। শিবসেনা প্রধান হন উদ্ধব। কিন্তু এই ১৯ বছরে মরাঠা রাজনীতিতে অনেক কিছু পাল্টেছে। ২০২২ সালে উদ্ধবের নেতৃত্বের বিরুদ্ধে কার্যত বিদ্রোহ ঘোষণা করে দল ছেড়েছেন একনাথ শিন্দে। অবিভক্ত শিবসেনার সিংহভাগ সাংসদ এবং বিধায়ককে ভাঙিয়ে আনার পর পরিষদীয় শক্তির বিচারে নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্তে ‘আসল’ শিবসেনার তকমা পেয়েছে শিন্দের নেতৃত্বাধীন সেনাই (শিন্দেসেনা)। দলের পুরনো তির-ধনুক প্রতীকও পেয়েছে তারা। এই আবহে মুম্বইয়ের পুরসভা নির্বাচনের আগে দুই ভাইয়ের মিলন নিছক প্রতিবাদে সীমাবদ্ধ থাকবে না বলেই মত অনেকের।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement