Uddhav Thackeray

‘ইতিহাস বদলাতে পারবে না বিশ্বাসঘাতক’! সুপ্রিম কোর্টে যাচ্ছেন উদ্ধব, বৈঠক মাতোশ্রীতে

কেন্দ্রীয় নির্বাচন কমিশনের রায়ে ‘শিবসেনা’ নাম এবং নির্বাচনী প্রতীক ‘তির-ধনুক’ দু’টিই পাচ্ছেন শিন্ডে। যে বালাসাহেব ঠাকরের হাত ধরে শিবসেনার জন্ম তা পুত্র উদ্ধবের হাতছাড়া হয়েছে।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

মুম্বই শেষ আপডেট: ১৮ ফেব্রুয়ারি ২০২৩ ১৩:৩৫
Share:

একনাথের শিন্ডের বিরুদ্ধে এ বার আদালতের দ্বারস্থ উদ্ধব ঠাকরে। ফাইল চিত্র।

শিবসেনা পরিষদীয় দলের অন্দরে সংখ্যালঘু হয়ে পড়ে মুখ্যমন্ত্রিত্ব হারিয়েছিলেন ৮ মাস আগে। শুক্রবার নির্বাচন কমিশনের নির্দেশে ‘শিবসেনা’ নাম এবং নির্বাচনী প্রতীক তির-ধনুক ব্যবহারের উপরেও অধিকার হারিয়েছেন উদ্ধব ঠাকরে। এই পরিস্থিতিতে মহারাষ্ট্র রাজনীতিতে প্রাসঙ্গিক থাকার জন্য আম শিবসৈনিকদের সমর্থনকেই ‘পাখির চোখ’ করেছেন প্রয়াত বালাসাহেব ঠাকরের ছেলে।

Advertisement

পাশাপাশি, শিবসেনার নাম এবং দলীয় তির-ধনুক প্রতীক ব্যবহারের অধিকার একনাথ শিন্ডে শিবিরের হাতে তুলে দেওয়ার নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্তকে সুপ্রিম কোর্টে চ্যালেঞ্জ জানানোর কথা জানিয়েছেন তিনি। শনিবার দুপুরে উদ্ধব তাঁর বাসভবন মতোশ্রীতে দলের নেতাদের সঙ্গে জরুরি বৈঠকে বসেছেন। তাঁর শিবিরের সাংসদ, বিধায়ক এবং অন্য পদাধিকারীদের বৈঠকে ডাকা হয়েছে। এরই পাশাপাশি, নির্বাচন কমিশনের সিদ্ধান্তকে সুপ্রিম কোর্টে চ্যালেঞ্জ জানানোর কথা ঘোষণা করে উদ্ধব বলেন, ‘‘বিচারব্যবস্থার প্রতি আমাদের আস্থা রয়েছে। বিশ্বাসঘাতক একনাথ শিন্ডে ইতিহাসের ধারা বদলাতে পারবে না।’’

গত বছর শিবসেনায় ভাঙনের পরে সংখ্যাগরিষ্ঠ বিদ্রোহী বিধায়কদের সঙ্গে নিয়ে উদ্ধবকে সরিয়ে সরকার গড়েছিলেন শিন্ডে। তবে বালাসাহেব ঠাকরের প্রতিষ্ঠা করা শিবসেনার নাম আর তির-ধনুক প্রতীকের উপরে অধিকার ছাড়তে চায়নি কেউই। বিষয়টি নিয়ে দু’পক্ষ নির্বাচন কমিশনের দ্বারস্থ হয়। সেই বিষয়েই শুক্রবার সিদ্ধান্ত জানায় কমিশন। কমিশনের এই সিদ্ধান্ত একইসঙ্গে রাজনৈতিক ভাবে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ এবং অন্য দিকে বিপদসঙ্কেত বলে মনে করছে আঞ্চলিক রাজনৈতিক দলগুলি।

Advertisement

এত দিন দু’পক্ষকেই দলীয় প্রতীক ব্যবহার করতে নিষেধ করেছিল কমিশন। মহারাষ্ট্র বিধানসভায় উপনির্বাচনের আগে এক অন্তবর্তীকালীন রায়ে কমিশন জানায়, জ্বলন্ত মশালের প্রতীক নিয়ে লড়বে উদ্ধবের দল ‘শিবসেনা’ (উদ্ধব বালাসাহেব ঠাকরে)। অন্য দিকে, শিন্ডে শিবির ‘বালাসাহেবঞ্চি শিবসেনা’ নাম এবং জোড়া তরোয়াল-ঢাল প্রতীক পেয়েছিল। শুক্রবার সেই বিবাদের নিষ্পত্তি ঘটাতে ৭৮ পাতার নির্দেশনামায় শিন্ডে শিবিরকেই নাম-প্রতীকের অধিকার তুলে দিল নির্বাচন কমিশন।

কমিশনের পর্যবেক্ষণ, ১৯৬৬ সালে প্রতিষ্ঠিত শিবসেনার বর্তমান দলীয় সংবিধান অগণতান্ত্রিক। ষাটের দশকে হিন্দুত্ববাদী আদর্শ ও মরাঠি অধিকার রক্ষায় শিবসেনার প্রতিষ্ঠা করেন বালাসাহেব। কমিশনের চাপে ১৯৯৯ সালে বালাসাহেব দলীয় সংবিধানে কিছু গণতান্ত্রিক রীতিনীতি যোগ করেছিলেন। ২০১৮ সালে শিবসেনা তাদের দলীয় সংবিধান ফের সংশোধন করে। কিন্তু তা ভারতীয় নির্বাচন কমিশনকে দেওয়া হয়নি। অভিযোগ, নয়া সংশোধনীতে গণতান্ত্রিক নিয়মগুলি বাতিল করায় দলটি ব্যক্তিগত মালিকানাধীন সংস্থার মতো হয়ে উঠেছিল। কমিশনের সিদ্ধান্ত ঘোষণার পরে একে ‘গণতন্ত্রের জয়’ বলেছেন একনাথ। অন্য দিকে, কমিশনকে ‘গণতন্ত্রের হত্যাকারী’ এবং শিন্ডেকে ‘বিশ্বাসঘাতক’ বলে আক্রমণ করেন উদ্ধব।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন