সাংবাদিককে মারধর, মুখে মূত্রত্যাগ যোগীর পুলিশের

সোশ্যাল মিডিয়ায় উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের বিরুদ্ধে মুখ খোলার জন্য ক’দিন আগেই জেলে যেতে হয়েছিল প্রশান্ত কানোজিয়া নামে এক সাংবাদিককে।

Advertisement

সংবাদ সংস্থা

লখনউ শেষ আপডেট: ১৩ জুন ২০১৯ ০৪:২২
Share:

সাংবাদিককে (নীল শার্ট) মারধর ও আটকে রাখার এই ভিডিয়ো ভাইরাল হয়েছে।

যোগী-রাজ্যে ফের বিপন্ন সাংবাদিকতা। কর্তব্যরত সাংবাদিকের ক্যামেরা কেড়ে, বেধড়ক পিটিয়ে হাজতে ভরার পরে তাঁর মুখে মূত্রত্যাগ করার অভিযোগ উঠল উত্তরপ্রদেশের রেলপুলিশের বিরুদ্ধে। সাসপেন্ড হয়েছেন দুই পুলিশ। ঘটনার রিপোর্ট তলব করেছেন কেন্দ্রীয় তথ্য-সম্প্রচার মন্ত্রী প্রকাশ জাভড়েকর।

Advertisement

সোশ্যাল মিডিয়ায় উত্তরপ্রদেশের মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের বিরুদ্ধে মুখ খোলার জন্য ক’দিন আগেই জেলে যেতে হয়েছিল প্রশান্ত কানোজিয়া নামে এক সাংবাদিককে। সেই ঘটনায় এখনও পর্যন্ত গ্রেফতার হয়েছেন অন্তত পাঁচ জন। যদিও সুপ্রিম কোর্টের তীব্র ভর্ৎসনার মুখে প্রশান্তকে ছাড়তে বাধ্য হয়েছে উত্তরপ্রদেশ সরকার।

কাল সুপ্রিম কোর্টের ওই ভর্ৎসনার দিনেই চূড়ান্ত হেনস্থার মুখে পড়েন উত্তরপ্রদেশের সাংবাদিক অমিত শর্মা। শামলি জেলার ঘটনা। একটি মালগাড়ি লাইনচ্যুত হওয়ার খবর করতে মঙ্গলবার রাতে ধীমানপুরায় যান ওই সাংবাদিক। অভিযোগ, সেই সময়ে সাদা পোশাকে এক দল রেলপুলিশ এসে প্রথমেই অমিতের ক্যামেরাটি মাটিতে ফেলে দেয়। অমিত সেটি তুলতে যেতেই শুরু হয় মারধর। তাঁকে লকআপে আটকে রাখা হয় রাতভর। জামাকাপড় খুলিয়ে পুলিশকর্মীরা তাঁর মুখে মূত্রত্যাগ করেন বলেও অভিযোগ তুলেছেন অমিত। জানিয়েছেন, ওই মালগাড়িগুলির মাধ্যমে চোরাচালান হত। যার মাথা জিআরপি-রই কয়েক জন আধিকারিক। সে নিয়ে কয়েক দিন ধরেই খবর করছিলেন তিনি। অমিতের কথায়, ‘‘যে দিন থেকে এ নিয়ে খবর করা শুরু করি, সে দিন থেকেই জিআরপি-র নিশানায় ছিলাম। গত রাতে দোষ না-থাকা সত্ত্বেও হাজতে ভরে মারধর করা হয়েছে। নানা ভাবে অত্যাচার চালানো হয়েছে। এই ঘটনায় জড়িতদের কড়া শাস্তি চাই।’’

Advertisement

ঘটনাস্থলে উপস্থিত অন্য সাংবাদিকদের ক্যামেরায় বন্দি হয়েছে অমিতকে মারধরের ভিডিয়ো। দেখা যাচ্ছে, সাদা শার্ট আর ধূসর টি-শার্ট পরা দু’জন বেধড়ক পেটাচ্ছে অমিতকে। সাংবাদিক মহল জানাচ্ছে, ওই দু’জনই সাদা পোশাকে থাকা দুই রেলপুলিশ। এই ফুটেজ ছড়িয়ে পড়তেই দল বেঁধে শামলির জিআরপি থানায় পৌঁছন সাংবাদিকেরা। পুলিশের উপরমহলে যোগাযোগ করে অমিতের মুক্তির পাশাপাশি হেনস্থায় জড়িত পুলিশদের বিরুদ্ধে কড়া শাস্তির দাবি জানান তাঁরা। এর পর আজ ভোরে ছেড়ে দেওয়া হয় অমিতকে। সহকর্মীদের তিনি বলেন, ‘‘১০-১৫ দিন আগে আমি ওদের (রেলপুলিশ) নিয়ে একটা খবর করেছিলাম। আমার মোবাইল ওরা কেড়ে নিয়েছে। ওতেই ওই খবরের ফুটেজ ছিল।’’

সাংবাদিকদের ক্ষোভের মুখে বুধবার সকালে রাজ্য পুলিশ টুইট করে জানায়, ঘটনায় অভিযুক্ত দুই রেল পুলিশকে সাসপেন্ড করা হয়েছে। শামলি জিআরপি-র এসএইচও রাকেশ কুমার ও কনস্টেবল সঞ্জয় পওয়ারকে সাসপেন্ডের নির্দেশ দিয়েছেন উত্তরপ্রদেশ পুলিশের ডিজি ওপি সিংহ।

একের পর এক সাংবাদিক নিগ্রহের অভিযোগ উঠছে গোটা দেশ জুড়েই। দিন কয়েক আগে দক্ষিণ দিল্লির বারাপুলা উড়ালপুলের কাছে একটি চ্যানেলের সাংবাদিকদের গাড়ি লক্ষ্য করে গুলি চালায় দুই বাইক-আরোহী দুষ্কৃতী। অল্পের জন্য রক্ষা পান গাড়ির চালক-সহ দুই সাংবাদিক।

এবার শুধু খবর পড়া নয়, খবর দেখাও। সাবস্ক্রাইব করুন আমাদের YouTube Channel - এ।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন