বিজেপি ছাড়লেও যশবন্ত আন্দোলন ছাড়ছেন না

যশবন্তের কথায়, “চার বছর আগেই ভোটে না লড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। আজ দলগত রাজনীতি থেকে নিজেকে সরিয়ে নিলাম।” বিজেপি জাতীয় কর্মসমিতির এই পদত্যাগী নেতার দাবি, বিজেপিতে অভ্যন্তরীণ রাজনীতি ভয়ঙ্কর আকার নিয়েছে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

পটনা ও নয়াদিল্লি শেষ আপডেট: ২২ এপ্রিল ২০১৮ ০৩:২৮
Share:

অবশেষে দল ছাড়ার সিদ্ধান্ত নিলেন প্রাক্তন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী তথা বিজেপি নেতা যশবন্ত সিনহা। আজ পটনায় নিজের সিদ্ধান্তের কথা জানিয়ে তিনি বলেন, ‘‘রাজনৈতিক সন্ন্যাস নিলেও দেশের বিপন্ন গণতন্ত্র রক্ষায় আন্দোলন চালিয়ে যাব।’’ যশবন্তের ডাকেই এ দিন পটনায় বিজেপি-বিরোধী বিভিন্ন দলের নেতারা এক মঞ্চে হাজির হন।

Advertisement

যশবন্তের কথায়, “চার বছর আগেই ভোটে না লড়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলাম। আজ দলগত রাজনীতি থেকে নিজেকে সরিয়ে নিলাম।” বিজেপি জাতীয় কর্মসমিতির এই পদত্যাগী নেতার দাবি, বিজেপিতে অভ্যন্তরীণ রাজনীতি ভয়ঙ্কর আকার নিয়েছে। এ দিন যশবন্তের সভায় হাজির আরজেডি নেতা তেজস্বী যাদব তাঁর উদ্দেশে বলেন, “বিজেপির সঙ্গ ছেড়ে রাজনীতিতে বড় শিক্ষা দিলেন যশবন্ত। বিহারের মানুষ তাঁকে জয়প্রকাশ নারায়ণের ভূমিকায় দেখতে চান।” মঞ্চে ছিলেন পটনা সাহিবের সাংসদ তথা বিজেপি নেতা শত্রুঘ্ন সিংহ। তিনি কেন্দ্রের মোদী সরকারকে “এক আলিবাবা ও চল্লিশ চোরের” সঙ্গে তুলনা করেন।

যদিও বিহারের বিজেপি নেতারা যশবন্ত ও শত্রুঘ্নকে খারিজের তালিকাতেই ফেলেছেন। রাজ্য বিজেপির এক নেতা বলেন, “যশবন্ত সিনহা ২০১৪ সালে নরেন্দ্র মোদীর হয়ে প্রচার করেছেন। কেন্দ্রে মন্ত্রী না করার পর থেকেই দলের সঙ্গে দূরত্ব তৈরি হয়। পরে তিনি ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রীর পদেও বসতে চেয়েছিলেন। তা না হওয়াতেই এই ক্ষোভ।’’ যশবন্ত ও শত্রুঘ্ন দল ছাড়লে কোনও সমস্যা হবে না বলেই মনে করছেন রাজ্য বিজেপি নেতৃত্ব। যদিও শত্রুঘ্ন মঞ্চ থেকে নেমে জানিয়ে দেন, তিনি এখনই দল ছাড়ছেন না।

Advertisement

রাজ্য নেতৃত্ব যাই ভাবুন না কেন, এই ঘটনায় অস্বস্তিতে পড়েছেন দলের কেন্দ্রীয় নেতৃত্ব। বিশেষ করে লোকসভা নির্বাচনের আগে দলের মধ্যে বিদ্রোহ দানা বাঁধার আশঙ্কা রয়েছে তাঁদের। তাঁরা মনে করছেন, একটি নির্দিষ্ট ছকেই যশবন্তরা ধীরে ধীরে সরকার বিরোধিতার সুর চড়াচ্ছেন। বিজেপি মুখপাত্র অনিল বালুনির কথায়, ‘‘ওঁর কথা শুনে মনে হচ্ছে উনি বিরোধী দলনেতা।’’ উল্লেখ্য, গত সপ্তাহে সরকারের বিদেশনীতি থেকে অর্থনীতির সার্বিক ব্যর্থতা নিয়ে সরব হন যশবন্ত। তা নিয়ে সমস্ত বিজেপি সাংসদকে চিঠিও লেখেন।

বিজেপির মূল আশঙ্কা, লালকৃষ্ণ আডবাণী ও মুরলীমনোহর জোশীদের সঙ্গে যশবন্তের সুসম্পর্ক রয়েছে। গত সপ্তাহে জাতীয় স্বার্থে সরকার বিরোধিতায় ওই দুই প্রবীণ নেতাকে সরব হওয়ার জন্য অনুরোধ করেন যশবন্ত। দলের আশঙ্কা, যশবন্তের অনুরোধে ওই দুই প্রবীণ নেতা মোদী সরকারের বিরুদ্ধে মুখ খুললে তাতে বিরোধীরা বাড়তি বল পাবে। আখেরে ক্ষতি হবে দলেরই।

মঞ্চে এ দিন তৃণমূল কংগ্রেস সাংসদ দীনেশ ত্রিবেদী, আম আদমি পার্টির সাংসদ সঞ্জয় সিংহ, সমাজবাদী পার্টির ঘনশ্যাম তিওয়ারি এবং রাজ্য কংগ্রেসের নেতারা হাজির ছিলেন। যশবন্ত জানিয়েছেন, গণতন্ত্র রক্ষার এই আন্দোলন তাঁরা রাজ্যে রাজ্যে ছড়িয়ে দেবেন।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন