Bangladesh Situation

ভারতে রাতারাতি তিন ভিসা পরিষেবা কেন্দ্র বন্ধ করে দিল বাংলাদেশ! দিল্লি, শিলিগুড়ির পরে এ বার আগরতলায়‌ও

ভারতে সাময়িক ভাবে বন্ধ হয়ে গেল বাংলাদেশের তিনটি ভিসা পরিষেবা কেন্দ্র। দু’দেশের মধ্যে কূটনৈতিক টানাপড়েন আগে থেকেই চলছিল। এ বার সেই টানাপড়েনে ভিসা-কেন্দ্র ঘিরে চাপানউতরও জুড়ে গেল।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ২৩ ডিসেম্বর ২০২৫ ০৭:৪০
Share:

গত সপ্তাহ থেকে ফের উত্তাল হয়ে উঠেছে বাংলাদেশের পরিস্থিতি। — ফাইল চিত্র।

প্রথমে দিল্লি, তার পরে শিলিগুড়ি, এ বার আগরতলায়ও ভিসা-কেন্দ্র সাময়িক ভাবে বন্ধ করে দিল বাংলাদেশ। মঙ্গলবার থেকে অনির্দিষ্ট কালের জন্য বন্ধ আগরতলার ভিসা-কেন্দ্র বন্ধ করে দিয়েছে তারা। বন্ধ রাখা হচ্ছে অন্য কনসুলার পরিষেবাও। কী কারণে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে, তা দিল্লি বা শিলিগুড়ির মতো এ ক্ষেত্রেও স্পষ্ট করেনি ঢাকা। যদিও কলকাতায় উপহাইকমিশন থেকে পরিষেবায় কোনও বিঘ্ন ঘটেনি।

Advertisement

সোমবার রাতে এক সংক্ষিপ্ত বিজ্ঞপ্তিতে আগরতলায় বাংলাদেশের সহকারী হাইকমিশন জানিয়েছে, অনিবার্য কারণে তারা এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে। পরবর্তী ঘোষণা না-হওয়া পর্যন্ত আগরতলায় ভিসা এবং কনসুলার পরিষেবা বন্ধ থাকবে বলে ওই বিজ্ঞপ্তিতে জানিয়েছে তারা।

এর আগে সোমবার নয়াদিল্লি এবং শিলিগুড়িতেও ভিসা-কেন্দ্র বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেন বাংলাদেশের কর্তৃপক্ষ। এ বার আগরতলায়ও ভিসা-কেন্দ্র বন্ধ করে দিল ঢাকা। রাতারাতি সাময়িক ভাবে বন্ধ হয়ে গেল বাংলাদেশের তিনটি ভিসা পরিষেবা কেন্দ্র। ভারত এবং বাংলাদেশের মধ্যে কূটনৈতিক টানাপড়েন আগে থেকেই চলছিল। এ বার সেই টানাপড়েনে ভিসা-কেন্দ্রের সমীকরণও জুড়ে গেল।

Advertisement

সম্প্রতি ঢাকায় ভারতীয় ভিসা আবেদনকেন্দ্র বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নিয়েছিল নয়াদিল্লি। তার পরে আরও দুই শহর রাজশাহী এবং খুলনাতেও ভারতীয় ভিসা আবেদনকেন্দ্র বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। অনির্দিষ্ট কালের জন্য বন্ধ করে দেওয়া হয় চট্টগ্রামে ভারতীয় ভিসা-কেন্দ্রও।

তবে ভারতের এই পদক্ষেপগুলির নেপথ্যে সুনির্দিষ্ট কারণ ছিল। সম্প্রতি ভারতের কূটনৈতিক দফতরের সামনে বিক্ষোভ হয় বাংলাদেশে। প্রথমে নিরাপত্তা পরিস্থিতির কথা উল্লেখ করে ঢাকায় ভিসা-কেন্দ্র বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেয় নয়াদিল্লি। পরে বাংলাদেশের ইনকিলাব মঞ্চের আহ্বায়ক শরিফ ওসমান বিন হাদির মৃত্যুর পরে উত্তপ্ত হয়ে ওঠে ঢাকা। ওই সময়ে বাংলাদেশের বিভিন্ন এলাকায় ভারতের ডেপুটি হাইকমিশন ঘেরাওয়ের ডাক দেয় সে দেশের একটি গোষ্ঠী। ওই উত্তপ্ত পরিস্থিতির মাঝেই চট্টগ্রামে ভারতীয় ডেপুটি হাইকমিশনের দফতর লক্ষ্য করে ইট ছোড়ার অভিযোগ উঠেছে। পুলিশ এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ করে। বিক্ষোভকারীদের হটাতে লাঠি চালায় এবং কাঁদানে গ্যাস ছোড়ে পুলিশ।

উত্তেজনা ছড়ায় সিলেটেও। তার পরেই রবিবার চট্টগ্রামের ভিসা-কেন্দ্র বন্ধ রাখার কথা ঘোষণা করা হয়। উদ্ভূত পরিস্থিতিতে সিলেটে ভারতের উপদূতাবাসের কাছেও নিরাপত্তা বৃদ্ধি করেন বাংলাদেশি কর্তৃপক্ষ।

অন্য দিকে, সম্প্রতি দিল্লিতেও বাংলাদেশের হাইকমিশনের সামনে সম্প্রতি বিক্ষোভ হয়েছে। বাংলাদেশের কিছু সংবাদমাধ্যমে তা অতিরঞ্জিত করে দেখানো হয় বলে অভিযোগ নয়াদিল্লির। তার বিরোধিতা করে ইতিমধ্যে বিবৃতি দিয়েছে ভারতের বিদেশ মন্ত্রক। স্পষ্ট করে দেওয়া হয়েছে, বিক্ষোভ হলেও বিক্ষোভকারীরা কেউই বাংলাদেশের কূটনৈতিক দফতরের ভিতরে প্রবেশ করেননি। তবে ওই ঘটনাকে কেন্দ্র করে কূটনৈতিক টানাপড়েন জিইয়ে রাখার চেষ্টা দেখা গিয়েছে বাংলাদেশের অন্তর্বর্তী সরকারের। ভারত সরকার ওই ঘটনাকে ‘সরলীকরণ’ করার চেষ্টা করছে বলে দাবি করে মুহাম্মদ ইউনূসের অন্তর্বর্তী সরকার।

ঘটনাচক্রে, রবিবার বাংলাদেশের ওই বিবৃতির পরের দিনই দেখা গেল দিল্লিতে ভিসা-কেন্দ্র অনির্দিষ্ট কালের জন্য বন্ধ করে দিল বাংলাদেশের হাইকমিশন। তার কিছু সময় পরে জানা যায় শিলিগুড়িতেও ভিসা-কেন্দ্র বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে। বস্তুত, শিলিগুড়িতে বাংলাদেশের কোনও ঘোষিত কূটনৈতিক দফতরও নেই। বেসরকারি সংস্থার সাহায্যে সেখানে ভিসা-কেন্দ্র পরিচালনা করে বাংলাদেশ। কী কারণে সেখানে ভিসা পরিষেবা কেন্দ্র বাংলাদেশ বন্ধ করেছে, তা-ও সুনির্দিষ্ট ভাবে জানা যায়নি।

সোমবার শিলিগুড়িতে ভিসা-কেন্দ্রের কাছে বিক্ষোভ দেখায় একদল জনতা। ময়মনসিংহে দীপুচন্দ্র দাসের হত্যার প্রতিবাদেই ওই বিক্ষোভ হয়। ঘটনাচক্রে, ওই কর্মসূচির পরেই শিলিগুড়িতে ভিসা-কেন্দ্র বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেন বাংলাদেশি কর্তৃপক্ষ। শিলিগুড়িতে সোমবারের বিক্ষোভ কর্মসূচির অন্যতম মুখ লক্ষ্মণ বনসল বলেন, “আমাদের এখানকার কর্মীদের সঙ্গে কোনও সমস্যা নেই৷ পুলিশ বাধা দিলেও সেই বাধা আমরা মানিনি। এই অফিসের আধিকারিকের সঙ্গে কথা বলে এই কেন্দ্র বন্ধ করিয়ে দেওয়া হয়েছে।”

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement