৫ বছর থাকবে ভিভিপ্যাটের কাগজ

ভিভিপ্যাট সেই যন্ত্র যার মাধ্যমে ভোটদাতার ভোট নির্দিষ্ট জায়গা পড়ল কি না, তা যাচাই করা যায়। বোতাম টিপে ভোটদানের যন্ত্র ইভিএম।

Advertisement

প্রদীপ্তকান্তি ঘোষ

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৫ অক্টোবর ২০১৮ ০৪:১৫
Share:

ইভিএম ও তার সঙ্গে যুক্ত ভিভিপ্যাট।

আগামী মাসের মধ্যেই লোকসভার জন্য প্রয়োজনীয় ভোটার ভেরিফায়েব্‌ল পেপার অডিট ট্রেল (ভিভিপ্যাট) প্রস্তুত হওয়া নিয়ে আশাবাদী জাতীয় নির্বাচন কমিশন। কারণ, তা নিয়ে কমিশনকে আশ্বস্ত করেছে ভিভিপ্যাট প্রস্তুতকারক সংস্থা। ভিভিপ্যাটে যে বিশেষ থার্মাল কাগজ ব্যবহার করা হয়, তা পাঁচ বছর পর্যন্ত সংরক্ষণ করার সুযোগ রয়েছে। ফলে ভোট সংক্রান্ত বিতর্ক হলে পাঁচ বছর পর্যন্ত আদালতে তা পরীক্ষার জন্য থাকতে পারবে।

Advertisement

আগামী লোকসভা নির্বাচনে ১০০ শতাংশ বুথেই ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিনের (ইভিএম) সঙ্গে থাকবে ভোটার ভেরিফায়েব্‌ল পেপার অডিট ট্রেল (ভিভিপ্যাট)। তেমনই ঘোষিত লক্ষ্য কমিশনের। কিন্তু এখনও ভিভিপ্যাট তৈরির প্রক্রিয়া শেষ হয়নি। ভিভিপ্যাট এবং ইভিএম তৈরি করছে ইলেকট্রনিক্স কর্পোরেশন অব ইন্ডিয়া লিমিটেড (ইসিআইএল) এবং ভারত ইলেকট্রনিক্স লিমিটেড (বেল)। নভেম্বর শেষ হওয়ার আগেই ভিভিপ্যাট তৈরি করে তা দেশের বিভিন্ন রাজ্য এবং কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল পৌঁছে দেওয়া হবে বলে আশ্বাস দিয়েছে দুই প্রস্তুতকারক সংস্থা। এই আশ্বাসের কথা নিজেদের ওয়েবসাইটেই জানিয়েছে কমিশন।

ভিভিপ্যাট সেই যন্ত্র যার মাধ্যমে ভোটদাতার ভোট নির্দিষ্ট জায়গা পড়ল কি না, তা যাচাই করা যায়। বোতাম টিপে ভোটদানের যন্ত্র ইভিএম।

Advertisement

আগামী লোকসভা নির্বাচনে ১০.৬ লক্ষ পোলিং স্টেশনে ভোট হওয়ার কথা রয়েছে। তার জন্য ১৭.৩ লক্ষ ভিভিপ্যাট, ১৬.৩ লক্ষ কন্ট্রোল ইউনিট এবং ২২.৩ লক্ষ ব্যালট ইউনিট প্রস্তুত করছে কমিশন। সেক্ষেত্রে প্রয়োজনের অতিরিক্ত মেশিন রাখা হবে।

কিন্তু কেন বিষয়টি নিয়ে প্রকাশ্যে মুখ খুলতে হল কমিশনকে? সূত্রের খবর, উত্তরপ্রদেশে ৮০টি লোকসভা আসন রয়েছে। সেখানে লোকসভা নির্বাচনের জন্য প্রয়োজনীয় ‘এম-থ্রি’ (নতুন ভার্সন) ইভিএম এবং ভিভিপ্যাট পৌঁছতে শুরু করেছিল। কিন্তু আচমকাই তেলঙ্গানা সরকার ভেঙে দেওয়া হয়। ফলে সেখানে বিধানসভা নির্বাচনের প্রয়োজনীয়তা পড়ে। ইতিমধ্যেই সেখানে নির্বাচনের দিনক্ষণ ঘোষণা হয়েছে। ফলে উত্তরপ্রদেশের যাওয়া ইভিএম এবং ভিভিপ্যাট তেলঙ্গানাতে নিয়ে যাওয়া হয়। দেশের বড় রাজ্য থেকে ভোটযন্ত্র নিয়ে যাওয়া নিয়ে একটা আশঙ্কা তৈরি হয় রাজনৈতিক দলগুলির মধ্যে। সে কারণে ভিভিপ্যাট নিয়ে আশ্বস্ত করতে হয়েছে বলে কমিশনের ব্যাখ্যা।

দুটি জেলা বাদ দিলে এ রাজ্যে নতুন ইভিএম এসে গিয়েছে। এমনকি, অল্প হলেও ভিভিপ্যাট পৌঁছেছে। আর তা নিয়ে উত্তরবঙ্গের পাঁচটি জেলায় ‘ফার্স্ট লেভেল চেকিং’ (এফএলসি) ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে। পুজোর ছুটির পরে আগামী সোমবার থেকে রাজ্যের আরও ছ’টি জেলাতে এই পরীক্ষা শুরু হবে। এফএলসি অর্থ্যাৎ কোনও ইভিএম বা ভিভিপ্যাট আসার পর সেগুলির পরীক্ষা করা হয়। তারপরেই ভোটযন্ত্রগুলি ভোটকেন্দ্রে যাওয়ার ছাড়পত্র পায়।

ভিভিপ্যাট নিয়ে নানা প্রশ্ন ওঠায় তা নিয়ে এ বার মানুষকে সচেতন করতে চায় কমিশন। ইতিমধ্যেই তা ওয়েবসাইট তুলে ধরেছে তারা। ভবিষ্যতে ভোটযন্ত্র নিয়ে প্রয়োজনে আমজনতাকে হাতেকলমে বোঝানোর ভাবনাচিন্তা শুরু করেছে কমিশন। এক কর্তার কথায়, ‘‘ইভিএমে ট্যাম্পারিংয়ের কোনও প্রশ্নই নেই। তরুণ ইঞ্জিনিয়াররা কড়া নিরাপত্তা বেষ্টনীর মধ্যে চব্বিশ ঘণ্টা পরিশ্রম করে মেশিন তৈরি করছেন। এটা আমাদের দেশের গর্ব হওয়া উচিত।’’

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন