ছবি: এআই সহায়তায় প্রণীত।
হাতে এক দিস্তা কাগজ। হন্তদন্ত হয়ে বিডিও অফিসে ঝড়ের গতিতে প্রবেশ পাঁচ জনের। মুখে একরাশ হতাশা আর উদ্বেগের ছাপ। সকলেরই হাতে কিছু না কিছু কাগজপত্র রয়েছে। তাঁরা সকলেই নিজেকে জীবিত প্রমাণ করার তাগিদে ছুটে এসেছেন প্রশাসনের কাছে।
বিডিও-র দফতরে ঢুকেই ওই পাঁচ জন একযোগে অফিসারের উদ্দেশে বললেন, ‘‘আমরা মরিনি, এখনও বেঁচে আছি, স্যর!’’ এ কথা শুনে হতভম্ব হয়ে গিয়েছিলেন বিডিও। জানতে চাইলেন কী হয়েছে। তখন ওই পাঁচ জন জানান, ভোটার তালিকায় তাঁদের নাম বাদ চলে গিয়েছে। তাঁদের পাঁচ জনকে ‘মৃত’ বলে দেখানো হয়েছে সেখানে। ঘটনাচক্রে, পাঁচ জনই একই গ্রামের এবং একই বুথের ভোটার।
শুক্রবার ঘটনাটি ঘটেছে বিহারের ধোরাইয়া ব্লকের বৎসর গ্রামে। স্থানীয় সূত্রে খবর, যে পাঁচ জনের নাম ভোটার তালিকা থেকে বাদ গিয়েছে, তাঁরা হলেন মোহন শাহ (ক্রমিক সংখ্যা ২), সঞ্জয় যাদব (ক্রমিক সংখ্যা ১৭৫), রামরূপ যাদব (ক্রমিক সংখ্যা ২১১), নরেন্দ্র কুমার দাস (ক্রমিক সংখ্যা ৩৬৪), বিষ্ণর প্রসাদ (ক্রমিক সংখ্যা ৩৮০)। এই পাঁচ জন ২১৬ নম্বর বুথের ভোটার। শুক্রবার বিডিও অরবিন্দ কুমারের কাছে স্মারকলিপি দিয়ে দাবি করেন, তাঁরা জীবিত। বিডিও ওই পাঁচ জনকে আশ্বস্ত করেছেন যে এ বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হবে। তিনি বুথ লেভেল অফিসার (বিএলও)-কে ফর্ম-৬ পূরণ করে এই পাঁচ জনের নাম পুনর্বহাল করতে নির্দেশ দিয়েছেন। বিডিও জানিয়েছেন, কোনও বৈধ ভোটার ভোটাধিকার থেকে বঞ্চিত হবেন না।
প্রসঙ্গত, ভোটার তালিকার বিশেষ নিবিড় সমীক্ষার শেষে বিহারে যে চূড়ান্ত তালিকা প্রকাশ করে নির্বাচন কমিশন, তাতে নাম ছিল ৭ কোটি ৪১ লক্ষ ৯২ হাজার ৩৫৭ জনের। চলতি বছরের ২৪ জুন এসআইআর প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার সময়ে সে রাজ্যে ভোটার তালিকায় নাম ছিল ৭ কোটি ৮৯ লক্ষ। ঝাড়াই-বাছাইয়ের পর্ব শেষে সেই আগের তালিকা থেকে প্রায় ৪৭ লক্ষ ভোটারের নাম বাদ দেওয়া হয়। কমিশনের নিয়ম অনুযায়ী, বিধানসভা নির্বাচনের মনোনয়ন জমা দেওয়ার প্রক্রিয়া শুরুর ১০ দিন আগে পর্যন্ত কেউ ভোটার তালিকায় নাম তোলার আবেদন করতে পারবেন। তবে সেই প্রক্রিয়া হবে এসআইআর- বহির্ভূত।
আগামী ৬ এবং ১১ নভেম্বর রাজ্যে ভোট। ভোটগণনা হবে ১৪ নভেম্বর।