প্রাকৃতিক দুর্যোগকে তুচ্ছ করে জীবনের স্বপ্ন। অলঙ্করণ: তিয়াসা দাস।
চার হাত যখন এক হচ্ছে তখন বাইরে চলছে মুষলধারে বৃষ্টি। কোমর সমান জলে ডুবে গিয়েছে চারপাশ। বৃষ্টি আর বন্যার জেরে মাথার উপরে ছাদটুকুও আজ আর নেই।
গত কয়েক সপ্তাহের প্রবল বৃষ্টির তোড়ে ঘরছাড়া কেরলের কয়েক লক্ষ মানুষ। ইতিমধ্যেই প্রাণ হারিয়েছেন ৩৭০জন। আর পাঁচ জনের মতো ঘর ছেড়ে পাশের একটি স্কুলে ঠাঁই নিয়েছিলেন সাইজু-অঞ্জুরাও। প্রবল প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের জন্য নিজেদের বিয়ে পিছিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন সাইজু। তাঁর সেই প্রস্তাবে সায় মিলেছিল পাত্রী অঞ্জুর কাছ থেকেও। কিন্তু, পাত্র-পাত্রীর সেই সিদ্ধান্ত মানতে চাননি দুই পরিবারের সদস্যেরা। এমনকি পরিবারের সেই সিদ্ধান্তে স্বাগত জানিয়েছিলেন ত্রাণ শিবিরে ঠাঁই নেওয়া অন্যান্যরাও।
আর শেষ পর্যন্ত সবার চাপে নিজেদের সিদ্ধান্ত থেকে পিছু হঠতে বাধ্য হলেন সাইজুরা। রবিবার স্থানীয় একটি মন্দিরে চার হাত এক হল দু’জনের। ঘটনাটি কেরলের মালাপ্পুরম জেলার। পরে সংবাদ মাধ্যমের কাছে সাইজুর এক আত্মীয় জানান, প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের কারণ আমাদের দুই পরিবারই ঘর ছাড়া। পাশের একটি স্কুলে ঠাঁই নিয়েছিলাম আমরা। তখনই বিয়ে পিছিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেয় সাইজুরা। ওই আত্মীয়ের কথায়, ‘‘বিয়ে পিছনোর কথা জানার পরই তাঁর প্রতিবাদ করেন পরিবারের সবাই। কিন্তু কী ভাবে বিয়ে হবে তার পথ পাচ্ছিলাম না আমরা। অবশেষে সব শোনার পর ত্রাণ শিবিরে ঠাঁই পাওয়া অন্যরা আমাদের পাশে দাঁড়ান। তাঁদের কথায় মনে সাহস পাই আমরা। তার পরই বিয়ের সিদ্ধান্ত।’’ পরিবার সূত্রে খবর, খুব সাধারণ ভাবেই বিয়ের অনুষ্ঠান সম্পন্ন হয়েছে।
আরও পড়ুন: জয়সলের পিঠে পা দিয়েই জীবনের পথে ফিরছে কেরল
আরও পড়ুন: ছাদেই নেমে এল কপ্টার, দুঃসাহসিক উদ্ধার কেরলে
তবে, এই ঘটনা শুধু একটি নয়, তিরুনাভায়া এবং মালাম্বুরের ত্রাণ শিবির থেকেও এমন বিয়ের খবর মিলেছে। কেরল প্রসাশন সূত্রে খবর, রাজ্যজুড়ে মোট ১৮৩ শিবির খোলা হয়েছে। কয়েক লাখ মানুষ ঠাঁই নিয়েছেন সেই শিবিরগুলিতে।
(ভোটের খবর, জোটের খবর, নোটের খবর, লুটের খবর- দেশে যা ঘটছে তার সেরা বাছাই পেতে নজর রাখুন আমাদের দেশ বিভাগে।)