Maharashtra Doctor Suicide

মহারাষ্ট্রে ‘ধর্ষিতা’ চিকিৎসকের আত্মহত্যা: সই করতে হয়েছিল ময়নাতদন্তের ‘ভুয়ো’ রিপোর্টে? জোরালো হচ্ছে চাপের অভিযোগ

মহারাষ্ট্রের বাসিন্দা ওই মহিলার দাবি, তাঁর মেয়ের মৃত্যুকে ময়নাতদন্তের রিপোর্টে ‘স্বাভাবিক মৃত্যু’ বলে দেখানো হয়েছিল। ওই ঘটনার ক্ষেত্রে প্রভাবশালী-যোগ খাটিয়ে ‘ভুয়ো’ রিপোর্টে সই করতে বাধ্য করা হয়েছিল বলে দাবি মহিলার।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ২৭ অক্টোবর ২০২৫ ২০:০৬
Share:

গত বৃহস্পতিবার আত্মহত্যা করেন মহারাষ্ট্রের চিকিৎসক। মৃত্যুর সময়ে তাঁর বাঁ হাতের তালুতে ‘সুইসাইড নোট’ লেখা ছিল। —প্রতীকী চিত্র।

মহারাষ্ট্রের সাতারাকাণ্ডে তরুণী চিকিৎসককে অনৈতিক কাজকর্মের জন্য চাপ দেওয়া হত বলে অভিযোগ। প্রভাবশালীদের কথা মতো ময়নাতদন্তের রিপোর্ট এবং ‘ফিট সার্টিফিকেট’ বানিয়ে দিতে হত, এমন অভিযোগও উঠে এসেছে। এ বার ওই অভিযোগ আরও জোরালো হল। মহারাষ্ট্রেরই এক মহিলা দাবি করেছেন, তাঁর মেয়ের দেহের ময়নাতদন্তের ‘ভুয়ো’ রিপোর্টে অতীতে সই করেছিলেন আত্মঘাতী ওই তরুণী চিকিৎসক।

Advertisement

ওই তরুণী চিকিৎসক মৃত্যুর আগে বাঁ হাতের তালুতে অভিযুক্তদের নাম লিখে গিয়েছেন। এ ছাড়া চার পাতার একটি চিঠিও পাওয়া গিয়েছে। সেটিই তরুণীর ‘সুইসাইড নোট’ বলে জল্পনা ছড়িয়েছে। এ বার মৃত তরুণীর এক আত্মীয়ের দাবি, আরও একটি ‘সুইসাইড নোট’ থাকতে পারে বলে সন্দেহ করছেন তিনি। তরুণীকে হাসপাতালে অনৈতিক কাজকর্মের জন্য চাপ দেওয়া হত বলে অভিযোগ তুলেছে তাঁর পরিবারও। তাঁর ওই তুতো ভাইয়ের কথায়, “ওঁর (তরুণীর) দেহ হাসপাতালে নিয়ে যাওয়ার সময়, আরও একটি সুইসাইড নোট ছিল বলে আমাদের সন্দেহ। চার পাতার একটি অভিযোগপত্র পাওয়া গিয়েছে। শুধুমাত্র হাতের তালুতে একটি ছোট্ট ‘নোট’ লিখে (তরুণী) মরতে পারে না।”

গত বৃহস্পতিবার এক হোটেলের ঘর থেকে তরুণী চিকিৎসকের ঝুলন্ত দেহ উদ্ধার করা হয়। বাঁ হাতের তালুতে দু’জনের নাম লিখে গিয়েছেন তিনি। প্রথম নামটি পুলিশের এক সাব ইনস্পেক্টরের। লেখা হয়েছে, ‘‘ও আমার মৃত্যুর কারণ। ও আমাকে চার বার ধর্ষণ করেছে। পাঁচ মাসেরও বেশি সময় ধরে ও আমাকে ধর্ষণ, মানসিক এবং শারীরিক নির্যাতন করেছে।’’ এ ছাড়া, যে বাড়িতে তরুণী ভাড়াটে হিসাবে থাকতেন, সেই বাড়িওয়ালার ছেলের বিরুদ্ধেও হেনস্থার অভিযোগ করেছেন।

Advertisement

সংবাদমাধ্যম ‘এনডিটিভি’ অনুসারে, ওই চার পাতার চিঠিতে লেখা আছে, পুলিশের তরফে ভুয়ো মেডিক্যাল রিপোর্ট লেখার জন্য চিকিৎসককে চাপ দেওয়া হত। শারীরিক কোনও পরীক্ষা ছাড়াই রিপোর্ট লিখে দিতে হত। এই কাজ করতে না চাইলে মূল অভিযুক্ত সাব-ইনস্পেক্টর এবং অন্যরা তাঁকে হুমকি দিতেন। ‘ভুয়ো’ রিপোর্ট তৈরির জন্য চিকিৎসককে চাপ দেওয়ার দাবি এ বার আরও জোরালো হল ভাগ্যশ্রী নামে এক মহিলার অভিযোগকে কেন্দ্র করে।

মহারাষ্ট্রের বাসিন্দা ওই মহিলার দাবি, তাঁর মেয়ের মৃত্যুকে ময়নাতদন্তের রিপোর্টে ‘স্বাভাবিক মৃত্যু’ বলে দেখানো হয়েছিল। কিন্তু এই রিপোর্ট মানতে রাজি নন তিনি। মহিলার দাবি, তাঁর মেয়েকে খুন করা হয়ে থাকতে পারে। কিন্তু ময়নাতদন্তের রিপোর্টে বিষয়টি চেপে যাওয়া হয়েছে। ওই তরুণী চিকিৎসকে ময়নাতদন্তের ‘ভুয়ো’ রিপোর্টে সই করতে বাধ্য করা হয়েছিল বলেই মনে করছেন তিনি। এ অবস্থায় তাঁর মেয়ের মৃত্যু কী ভাবে হল, তা পুঙ্খানুপুঙ্খ ভাবে তদন্ত করে দেখার দাবি জানিয়েছেন মহিলা।

অভিযোগকারী মহিলার দাবি, তাঁর মেয়ের বিয়ে হয়েছিল এক সেনাকর্মীর সঙ্গে। সেখানে শ্বশুরবাড়ির লোকেরা তাঁর মেয়েকে বিভিন্ন ভাবে মানসিক এবং শারীরিক নির্যাতন করতেন বলে দাবি মহিলার। এ অবস্থায় গত ১৯ অগস্ট আত্মহত্যা করেন তাঁর মেয়ে।

তবে ভাগ্যশ্রীর সন্দেহ, তাঁর মেয়েকে খুন করা হয়ে থাকতে পারে এবং সেই বিষয়টি ময়নাতদন্তের রিপোর্টে এড়িয়ে যাওয়া হয়েছে বলেই মনে করছেন তিনি। তাঁর দাবি, ঘটনার পাঁচ দিন পরেও পুলিশ তাঁর মেয়ের ময়নাতদন্তের রিপোর্ট দেয়নি। পরে যে রিপোর্টটি দেওয়া হয়েছিল, সেটি ‘সাজানো’ বলেই সন্দেহ মহিলার। এ ক্ষেত্রে সেনাকর্মীর পরিবার ‘প্রভাবশালী-যোগ’ খাটিয়ে ময়নাতদন্তের রিপোর্টের সঙ্গে কারচুপি করেছেন বলে সন্দেহ করছেন তিনি।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement