ফুর্তিতে পুলিশ, একা জেলে ফিরল আসামি

ফুর্তির নেশায় তখন সব ভুলেছিলেন ঝাড়খণ্ডের চার পুলিশকর্মী। রাঁচির হাসপাতালে চিকিৎসা করানোর পর খুনের এক আসামিকে নিয়ে কোডারমার জেলে ফেরার কথা ছিল তাঁদের। মাঝরাস্তায় গাড়ি ঘুরিয়ে তাঁরা চলে যান কুলটির এক যৌনপল্লিতে!

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

রাঁচি ও আসানসোল শেষ আপডেট: ২৩ মার্চ ২০১৫ ০৪:২৫
Share:

ফুর্তির নেশায় তখন সব ভুলেছিলেন ঝাড়খণ্ডের চার পুলিশকর্মী। রাঁচির হাসপাতালে চিকিৎসা করানোর পর খুনের এক আসামিকে নিয়ে কোডারমার জেলে ফেরার কথা ছিল তাঁদের। মাঝরাস্তায় গাড়ি ঘুরিয়ে তাঁরা চলে যান কুলটির এক যৌনপল্লিতে!

Advertisement

গাড়ির চালকের নজরদারিতে আসামিকে রেখে ঢুকে যান পল্লির গলিতে! আসানসোল পুলিশ সূত্রে খবর, সেখানে আরেক বিপত্তি হয়। পুলিশকর্মীদের কোমরে গোঁজা পিস্তল দেখে হইচই জুড়ে দেন যৌনকর্মীরা। খবর পেয়ে আসানসোলের নিয়ামতপুর থানার পুলিশ তাঁদের পাকড়াও করে। এ দিকে, অনেক ক্ষণ অপেক্ষা করার পরও চার পুলিশকর্মী না ফেরায় চালককে গাড়ি নিয়ে কোডারমা যেতে বলে ওই আসামিই। ঝাড়খণ্ড পুলিশ জানিয়েছে, সোজা সে থানায় চলে যায়। সব কথা জানিয়ে পুলিশকে বলে, “আমাকে জেলে নিয়ে চলুন। না হলে ফেঁসে যাব!”

সব দেখে হতবাক হয়ে যান সেই সময় কোডারমা থানায় হাজির পুলিশকর্মীরা। আসানসোল পুলিশ জানায়, ১৯ মার্চ ভোরে গাড়িতে কুলটির একটি যৌনপল্লিতে পৌঁছয় ঝাড়খণ্ডের পুলিশকর্মীরা। ছিলেন তিন সশস্ত্র কনস্টেবল সন্তোষ কুমার, ধনঞ্জয় কুমার সিংহ, মদন কুমার ও হাবিলদার অমানত খান। সঙ্গে ছিল খুনের আসামি বৈজু যাদব। তাকে রাঁচি থেকে কোডারমা নিয়ে যাওয়ার দায়িত্ব ছিল ওই পুলিশকর্মীদের উপরে। কিন্তু মাঝপথে গাড়ি ঘুরিয়ে তাঁরা চলে আসেন কুলটিতে। চালক, আসামিকে গাড়িতে বসিয়ে চার পুলিশকর্মী যৌনপল্লিতে ঢোকেন। ঝামেলার খবর পেয়ে স্থানীয় পুলিশ তাঁদের ধরে নিয়ামতপুর ফাঁড়িতে নিয়ে যায়। সেখানে নিজেদের পরিচয় জানালে ঝাড়খণ্ড পুলিশকে খবর দেওয়া হয়। কোডারমার এক ডিএসপি পদমর্যাদার অফিসার পরের দিন নিয়ামতপুরে পৌঁছে ব্যক্তিগত বন্ডে চার পুলিশকর্মীকে ঝাড়খণ্ডে নিয়ে যান। গোটা ঘটনা নিয়ে আসানসোলের কোনও পুলিশকর্তা মুখ খুলতে চাননি। তাঁরা জানান, ঝাড়খণ্ড পুলিশের ডিজি এ বিষয়ে তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। কোডারমার পুলিশ সুপার ওয়াই এস রমেশ আসানসোল পুলিশের সঙ্গে যোগাযোগ রাখছেন।

Advertisement

পুলিশ সূত্রে খবর, অভিযুক্তদের সাসপেন্ড করে তদন্তের নির্দেশ দেওয়া হয়েছে। কোডারমার এসপি জানান, বৈজুর শাস্তির মেয়াদ শেষের মুখে। সে জন্যই সে পালানোর চেষ্টা করেনি। জানা গিয়েছে, রাঁচির রিমস থেকে রওনা হয়ে বরহীর একটি হোটেলে খাবার খান ওই পুলিশকর্মীরা। তার পর সেখান থেকে ৩০ কিলোমিটার দূরের কোডারমা জেলে না গিয়ে কুলটির দিকে রওনা দেন। পুলিশ জানিয়েছে, ২০০৫ সালে ঝাড়খণ্ডের ঝুমরুতালাওয়ে এক ব্যক্তিকে খুনের দায়ে ধরা পড়েছিল বৈজু।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন