ছবি: অনুষ্টুপ ভট্টাচার্য
শহরে শীত। সল্টলেক স্টেডিয়ামের পাশে চার্নকস রেস্তোরাঁ-য় শুরু হয়েছে বিরিয়ানি ও কাবাবের খাদ্য উৎসব ‘ফ্লেবার্স অফ ইন্ডিয়া’। এই খাদ্য উৎসবে চার্নকস রেস্তোরাঁয় মধ্যাহ্ন ও নৈশভোজের সময় পরিবেশিত হচ্ছে জিভে জল আনা রকমারি আমিষ ও নিরামিষ কাবাব-বিরিয়ানি। দশতলার উপর চার্নকস রেস্তোরাঁয় বসে উপর থেকে ছবির মতো শহরটাকে দেখতে দেখতে সুস্বাদু কাবাব ও বিরিয়ানির স্বাদ গ্রহণ করার মজাই আলাদা। এই খাদ্য উৎসবটি পরিচালনার দায়িত্বে চার্নকসের জেনারেল ম্যানেজার পিনাকী চক্রবর্তী। পিনাকী জানালেন, খাদ্য উৎসবের শুরুর দিন থেকেই খাদ্যরসিকদের কাছ থেকে অভূতপূর্ব সাড়া পাওয়া যাচ্ছে। চার্নকসের মতো বিলাসবহুল রেস্তোরাঁতে ১০০-১৫০-২৫০ টাকায় বিরিয়ানি ও কাবাব পাওয়া যাবে। রান্নাঘরের দায়িত্বে রয়েছেন শেফ সুদিন দলাই ও মহঃ আসিক। চার্নকসে পরিবেশিত কাবাবের মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল আরবিকে কাবাব, আদ্রক কী মূর্গ, শবনম মূর্গাটিক্কা, নবাবি চিকেন বারওয়ান কাবাব, মাটনের কাশেরি কাবাব, মাহিরেশমী কাবাব, বানজারা মাহিটিক্কা, শাম্মিকাবাব প্রভৃতি। বিরিয়ানির মধ্যে উল্লেখযোগ্য হল লখনউ কালিয়া বিরিয়ানি, হায়দ্রাবাদি কাচ্চিগোস্ত কী বিরিয়ানি, মুর্শিদাবাদি খাশি বিরিয়ানি, ঢাকাই দম চিকেন বিরিয়ানি, গোস্ত কিমা কালোজি বিরিয়ানি, মূর্গহারা মশালা বিরিয়ানি, সব্জিমোতি বিরিয়ানি, ইলিশ দম বিরিয়ানি, নিজামি তরকারি বিরিয়ানি প্রভৃতি। মুম্বই থেকে কলকাতায় এলে চার্নকসে এসে কাবাব ও বিরিয়ানির স্বাদগ্রহণ করতে পারেন। আর মুম্বইয়ে বসেই তৈরি করতে পারেন এই উৎসবের একটি নিরামিষ বিরিয়ানি।
নিজামি তরকারি বিরিয়ানি
উপকরণ: সাদাতেল-১০০ গ্রাম, পেঁয়াজের স্লাইজ ৪০০ গ্রাম, আদা বাটা-২৫ গ্রাম, রসুন বাটা-২৫ গ্রাম, সিদ্ধকরা পালং শাক বাটা-৪ টেবিল চামচ, শুকনো লঙ্কাগুঁড়ো-২ চা চামচ, জিরের গুঁড়ো-২ চাচামচ, জল আন্দাজ মতো, নুন আন্দাজমতো, কিউব করে কাটা সিদ্ধকরা গাজর-১০০ গ্রাম, সিদ্ধ করা কড়াইশুটি ১০০ গ্রাম, সিদ্ধ করা বিনস (কিউব করে কাটা)-১০০ গ্রাম, সিদ্ধ করে খোসা ছাড়ানো ছোট আলু-৪টে (সিদ্ধ আলুগুলো অর্ধেক কেটে তেলে ভাজতে হবে), সিদ্ধ বেবি কর্ন-১০০ গ্রাম, কাটা পনির-১০০ গ্রাম, দুধ-২ কাপ, চিনি-১ চা চামচ, গরম মশলার গুঁড়ো-১চা চামচ, কেওড়া জল-২ টেবিল চামচ, গোলাপ জল-২ টেবিল চামচ, মিঠা আতর ৪ ফোঁটা, জাফরান ১/২ গ্রাম।
প্রণালী: বড় ডেচকি আঁচে বসিয়ে সাদাতেল গরম করে পেঁয়াজগুলো বাদামি করে ভেজে নিন। অর্ধেক ভাজা পেঁয়াজ আলাদা করে রাখুন। বাকি ভাজা পেঁয়াজের মধ্যে আদা, রসুনবাটা দিয়ে নেড়ে হালকা ভেজে নিয়ে সিদ্ধ করা পালং শাক বাটা দিয়ে নেড়ে শুকনোলঙ্কার গুঁড়ো ও জিরের গুঁড়ো দিয়ে একটু কষে অল্প জল দিয়ে নিভু আঁচে ক্রমাগত নাড়তে থাকুন। পালংয়ের কাঁচা গন্ধ চলে গেলে ওর মধ্যে নুন দিয়ে একটু নেড়ে সিদ্ধকরা গাজর, কড়াইশুটি, বিনস, আলু বেবিকর্ন, পনির দিয়ে নিভু আঁচে মেশান। মিনিট সাতেক বাদে ওর মধ্যে দুধ, চিনি দিয়ে ভাল করে মেশান। এক মিনিট বাদে গরম মশলার গুঁড়ো, কেওড়া ও গোলাপ জল, মিঠা আতর ও জাফরান দিয়ে ভাল করে নেড়ে আঁচ থেকে নামিয়ে ঢাকনা বন্ধ করে রাখুন। ৫০০ গ্রাম বাসমতি চাল ধুয়ে পরিষ্কার করে নিন। হাড়ি আঁচে বসিয়ে আন্দাজমতো জল দিয়ে ওর মধ্যে ১টা বড় দারচিনির স্টিক, ৪টে ছোট এলাচ, ৪টে তেজপাতা, ১০টা লবঙ্গ ও আন্দাজমতো নুন দিয়ে চাল দিন। ভাত ১/৩ অংশ সিদ্ধ হয়ে গেলে আঁচ থেকে নামিয়ে ছেঁকে নিন।
এ বার রান্না করা তরকারির ডেচকির মধ্যে ১/৩ অংশ সিদ্ধ করা ভাতটা ঢেলে খুন্তি দিয়ে সমান করে বিছিয়ে দিন। বিছানো ভাতের উপর ১০০ গ্রাম ঘি, বাদামি করে ভাজা পেঁয়াজ, একমুঠো পুদিনাপাতা, ৫০ গ্রাম কাজুবাদাম, ৫০ গ্রাম কিসমিস, ১০০ গ্রাম গ্রেট করা খোয়া ক্ষীর ও ১ কাপ দুধ ঢেলে ডেচকির ঢাকনা বন্ধ করে মাখা আটার লেই দিয়ে মুখ বন্ধ করে দিন। গ্যাসে তাওয়া বসিয়ে আঁচ বাড়িয়ে গরম করুন। গরম তাওয়ার উপর ডেচকি বসিয়ে ১০ মিনিট আঁচ বাড়িয়ে দম দিন। এর পর নিভু আঁচে দমে বসান। যখন মাখা আটার লেই থেকে ধোঁয়া বেরিয়ে আসবে তখন আঁচ বন্ধ করে ১৫ মিনিট রেখে দিন। এর পর ঢাকনা খুলে গরম গরম বিরিয়ানি পরিবেশন করুন।