Lifestyle News

ম্যাকারনি, চিজ পাউডার কি সত্যিই শরীরের পক্ষে ক্ষতিকারক?

কোয়ালিশন ফর সেফার ফুড প্রসেসিং অ্যান্ড প্যাকেজিং-এর গবেষকরা ৩০টি চিজ প্রডাক্ট পরীক্ষা করে তাতে থ্যালেটস-এর উপস্থিতি লক্ষ্য করেছেন।

Advertisement

নিজস্ব প্রতিবেদন

শেষ আপডেট: ১৮ জুলাই ২০১৭ ১৭:১৭
Share:

আপনার বাচ্চা কি চিজ ম্যাকারনি খেতে ভালবাসে? সময় বাঁচিয়ে চটজলদি খাবার বানাতে আপনিও ব্রেকফাস্টে, স্কুলের টিফিনে, বিকেল বেলা, এমনকী ডিনারেও হয়তো বানিয়ে দিচ্ছেন মুখরোচক ম্যাকারনি, পিজা, পাস্তা। শুধু বাচ্চারা নয়, সময় বাঁচাতে আমরাও ঝুঁকছি এই সব সুস্বাদু জাঙ্ক ফুডের দিকে। যদি এই অভ্যাস আপনার থেকে থাকে তা হলে এখনই সতর্ক হয়ে যান। গবেষকরা জানাচ্ছেন, ম্যাকারনি ও চিজ পাউডারে রয়েছে এমনই টক্সিক রাসায়নিক যা শরীরের জন্য হতে পারে অত্যন্ত ক্ষতিকারক। যদিও পিয়ার রিভিউড জার্নালে প্রকাশিত এই সমীক্ষাকে ভুল বলে স্বপক্ষে যুক্তি দিয়েছে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রের ম্যাকারনি ও পাউডার চিজ প্রস্তুতকারক সংস্থা ক্রাফ্ট।

Advertisement

কোয়ালিশন ফর সেফার ফুড প্রসেসিং অ্যান্ড প্যাকেজিং-এর গবেষকরা ৩০টি চিজ প্রডাক্ট পরীক্ষা করে তাতে থ্যালেটস-এর উপস্থিতি লক্ষ্য করেছেন। যা প্লাস্টিক, রাবার কোটিং, প্রিন্টিং ইঙ্ক, সাবান, হেয়ার স্প্রে, নেইল পালিশ, রেনকোট, ডিটারজেন্ট, ফ্লোরিং, ভিনাইল, ফুড ইকুইপমেন্ট অ্যান্ড প্যাকেজিং, বিল্ডিং মেটিরিয়াল, ম্যানুফ্যাকচারিং প্রসেস, বডি ওয়াশ, শ্যাম্পু, কসমেটিকস ও আরও নানা রকম পার্সোনাল কেয়ার প্রডাক্টে পাওয়া যায়। ন্যাচারাল চিজের মধ্যে এই উপাদান সামান্য পরিমাণে থাকলেও প্রসেসড চিজ পাউডারে এই থ্যালেটস পারমিসিবল লেভেল-এর থেকে চার গুণ বেশি মাত্রায় থাকে বলে জানিয়েছেন গবেষকরা। অন্য দিকে, ক্রাফ্টের মুখপাত্র লাইন গালিয়া দাবি করেছেন ইউএসএ টুডে-তে দাবি করেছেন, ক্রাফ্টের প্রডাক্টে থ্যালেট মেশানো হয় না। বিভিন্ন বৈজ্ঞানিক গবেষণায় থ্যালেটের যে এডিবল মাত্রা নির্দিষ্ট করা হয়েছে তার থেকে ১০০০ ভাগ কম থ্যালেট থাকে তাদের প্রডাক্টে।

এই পরীক্ষায় মূলত চিজের উপরেই জোর দিয়েছেন গবেষকরা। কারণ ডেয়ারি প্রডাক্ট থেকেই সবচেয়ে বেশি থ্যালেট মানুষের শরীরে পৌঁছয়। যা শুধু শিশুদের জন্যই নয়, প্রেগন্যান্ট মহিলাদের জন্যও অত্যন্ত ক্ষতিকারক। গবেষণায় বলা হয়েছে অধিকাংশ ক্ষেত্রেই এই উপাদান খাবারে উদ্দেশ্যপ্রণোদিত ভাবে মেশানে না হলেও ম্যানুফ্যাকচারিং প্রসেস ও প্রিপারেশনের মাধ্যমে তা আমাদের শরীরে পৌঁছয়। সিয়াটেলের ইউনিভার্সিটি অব ওয়াশিংটনের সহ অধ্যাপিকা শীলা সত্য নারায়ণ জানাচ্ছেন, এই থ্যালেটস থাকার কারণেই নিষিদ্ধ হয়ে গিয়েছে বহু টয় ব্র্যান্ড। এ ছাড়াও ব্যাকপ্যাক, লাঞ্চ বক্সের মাধ্যমেও শিশুদের শরীরে পৌঁছতে পারে থ্যালেটস। মাইক্রোওয়েভে প্লাস্টিকের পাত্রে খাবার গরম করলে তা থেকে থ্যালেটস উত্পন্ন হতে পারে, তেমনই বাচ্চাদের প্লাস্টিকের সিপিং কাপে গরম দুধ বা কফি ঢাললেও তা হতে পারে। তাই রান্নাঘরে প্লাস্টিকের বদলে কাচ, স্টেইনলেস স্টিল, সেরামিক, কাঠের বাসন যত বেশি ব্যবহার করবেন ততই তা স্বাস্থ্যের ঝুঁকি কমাবে।

Advertisement

আরও পড়ুন: এই ৫ ভাবে মিউজিক আমাদের ব্রেইন ভাল রাখে

দ্য সেন্টার ফর ডিজিজ কন্ট্রোল অ্যান্ড প্রিভেনশনের রিপোর্ট অনুযায়ী কম মাত্রায় থ্যালেটস আমাদের শরীরের জন্য ক্ষতিকারক হওয়ার কোনও প্রমাণ পাওয়া না গেলেও ল্যাবরেটরি পরীক্ষায় দেখা গিয়েছে তা ইঁদুরের জনননতন্ত্রকে দুর্বল করে দিতে পারে। সায়েন্স ডায়রেক্টে প্রকাশিত এই গবেষণার ফলেও উঠে এসেছে এই থ্যালেট কী ভাবে আমাদের এন্ডোক্রিনে সিস্টেমে খারাপ প্রভাব ফেলে। আবার অস্ট্রেলিয়ার ইউনিভার্সিটি অব অ্যাডেলেডের গবেষকরা কার্ডিও-ভাসকুলার সিস্টেম, টাইপ টু ডায়াবেটিস ও উচ্চ রক্তচাপের উপর থ্যালেটের ক্ষতিকারক প্রভাব খুঁজে পেয়েছে। যদিও মানবশরীরের উপর এর ক্ষতিকারক প্রভাব নিয়ে এখনও গবেষণার অবকাশ রয়েছে বলে জানিয়েছেন গবেষকরা।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন