অ্যালোভেরার রস না কি জেল, কোনটি ব্যবহার করবেন? ছবি: সংগৃহীত।
ন্যূনতম যত্নে বাড়ির বাগানে বা জানলায় বেড়ে ওঠে অ্যালোভেরা গাছ। কিন্তু তার পরিবর্তে এটি যে ভাবে মানবজাতকে সাহায্য করে আসছে যুগের পর যুগ ধরে, তা প্রশংসার্হ। এর পরেও অনেকে এই গাছের গুণাগুণ ভোগ করা থেকে বঞ্চিত। কেউ হয়তো ব্যবহার জানেন না, কেউ বা আলস্যের জেরে পেরে ওঠেন না। কিন্তু কম খাটনিতেই চুল, ত্বক এবং শরীরের সমস্যা মেটাতে অ্যালোভেরা ব্যবহার করা যায়।
চুলের স্বাস্থ্যের উন্নতিতে অ্যালোভেরার উপকার নিয়ে ধন্দ না থাকলেও রয়েছে ব্যবহারের পদ্ধতি নিয়ে। অনেকের মনেই প্রশ্ন, অ্যালোভেরা জেল না কি জুস, কোনটি স্বাস্থ্যরক্ষায় বেশি কাজ দেয়? অর্থাৎ অ্যালোভেরা খাবেন না কি মাখবেন, সেই ধোঁয়াশা আগে কাটানো উচিত।
চুলের যত্নে অ্যালোভেরা জেল নাকি জুস— কোনটি বেশি কার্যকর?
চুলের সৌন্দর্য ধরে রাখতে অ্যালোভেরার ব্যবহার বহু দিনের। তবে চুল গজানোর জন্য জেল ভাল না কি জুস বা রস?
অ্যালোভেরা জেল
অ্যালোভেরা জেল বাইরে থেকে চুলের যত্নে কাজে আসে। অ্যালোভেরা পাতার ভেতরের স্বচ্ছ জেল সরাসরি মাথার ত্বকে লাগানো হয়। এটি মাথার ত্বককে আর্দ্র রাখে, প্রদাহ কমায় এবং খুশকি দূর করে। ফলে চুল গজানোর জন্য স্বাস্থ্যকর পরিবেশ তৈরি হয়।
অ্যালোভেরা জুস
শরীরের ভিতরে গিয়ে চুলের পুষ্টি জোগায় অ্যালোভেরার রস। ভিটামিন, খনিজ ও অ্যান্টি-অক্সিড্যান্টে ভরপুর একটি পানীয়। এটি হজমশক্তি বাড়ায়, শরীর থেকে টক্সিন দূর করে এবং পুষ্টির শোষণ বাড়ায়। ভিতর থেকে চুলের গোড়া মজবুত ও বৃদ্ধির গতি বাড়িয়ে দেয়।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শুধুমাত্র জেল বা কেবল জুস নয়— দু’টিকে একসঙ্গে ব্যবহার করলে সবচেয়ে ভাল ফল পাওয়া যায়। দু’টির কাজ আলাদা হলেও একে অপরের পরিপূরক। বাইরে থেকে যত্ন ও ভিতর থেকে পুষ্টি গ্রহণ— এই দুয়ের উপকার মিলেমিশে চুল ঘন, মজবুত ও স্বাস্থ্যকর হয়।
চুলের স্বাস্থ্যের উন্নতিতে অ্যালোভেরার উপকার। ছবি: সংগৃহীত।
অ্যালোভেরা জেল ব্যবহারের পদ্ধতি
১. অ্যালোভেরার পাতা কেটে ভিতরের স্বচ্ছ অংশ বার করুন। বাজারজাত খাঁটি জেলও ব্যবহার করা যায়।
২. চুলে সিঁথি কেটে কেটে গোড়ায় গিয়ে জেল লাগান।
৩. আঙুলের আলতো ছোঁয়ায় ৫ মিনিট হালকা মাসাজ করুন, যাতে জেল ভাল ভাবে শোষিত হয় মাথার ত্বকে।
৪. অপেক্ষা করুন ৩০–৪৫ মিনিট মতো।
৫. হালকা শ্যাম্পু দিয়ে ধুয়ে ফেলুন।
৬. ফল পেতে সপ্তাহে ২–৩ বার এই টোটকা প্রয়োগ করুন।
অ্যালোভেরা জুস খাওয়ার পদ্ধতি
১. দিনে ১৫–৩০ মিলিলিটার অর্থাৎ ১–২ টেবিল চামচ খাওয়ার পরামর্শ দেওয়া হয়।
২.সকালে খালি পেটে বা খাবারের ৩০ মিনিট আগে পান করুন।
৩. সাধারণ জলের সঙ্গে মিশিয়ে নিন। চাইলে লেবুর রস বা মধু যোগ করতে পারেন স্বাদ বৃদ্ধি করতে।
৪. ফল পেতে অন্তত ২–৩ মাস নিয়মিত পান করুন।
৫. অন্তঃসত্ত্বা মহিলা বা যাঁদের অ্যালার্জি রয়েছে, অথবা যাঁরা পেটের রোগে ভোগেন, তাঁরা চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে অ্যালোভেরার রস পান করবেন।