ত্বক হবে সুন্দর, থাকবে লালিত্য, সেটাই কাঙ্ক্ষিত। এমনই ত্বকের আশায়, ঘন চুল পেতে মুখে এটা-সেটা মাখছেন? রূপচর্চা ত্বকের জন্য জরুরি অবশ্যই, তবে রূপটান শিল্পী থেকে পুষ্টিবিদেরা বলেন, সৌন্দর্য শুধু বাহ্যিক রূপচর্চার উপর নির্ভর করে না, বরং সঠিক পুষ্টিরও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা থাকে। পর্যাপ্ত জল খাওয়া, ঘুম— এই সব কিছুর সঙ্গেই ত্বক এবং চুলের সৌন্দর্যের নিবিড় যোগ।
ত্বকে জেল্লা আনতে তাই নিয়মিত চুমুক দিতে পারেন এক বিশেষ পানীয়ে। জিনিসটি আর কিছুই নয়, কিশমিশের জল। ড্রাই ফ্রুটসের তালিকায় পড়ে কিশমিশ। ভিটামিন এবং খনিজে সমৃদ্ধ কিশমিশ আসলে শুকনো আঙুর। রাতভর সেই কিশমিশ জলে ভিজিয়ে রাখলে, এর পুষ্টিগুণ জলে মেশে। ঘুম থেকে উঠে সেই জল খেলে তা যেমন শরীরে আর্দ্রতা জোগায়, তেমনই ডিটক্স পানীয়ের কাজ করে অর্থাৎ দূষিত পদার্থ বার করে দিতে সাহায্য করে।
ত্বকের জন্য সত্যি কি জাদু পানীয়?
· কিশমিশ ভেজানো জলে রয়েছে পলিফেনলস-এর মতো অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট। শরীরকে ফ্রি র্যাডিক্যালের থেকে রক্ষা করে এই উপাদান। ত্বকের তারুণ্য বজায় রাখার জন্য অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট জরুরি। কিশমিশের জল যেহেতু শরীর থেকে দূষিত পদার্থ বার করে দিতে সাহায্য করে, তাই এতে ত্বকও ভাল থাকে। কিশমিশের জল পেটও পরিষ্কার রাখে। এতে থাকা ভিটামিন সি এবং ম্যাগনেশিয়ামের মতো খনিজ ত্বকের জেল্লা বজায় রাখতে সহায়ক।
· আয়রন, ভিটামিন বি এবং পটাশিয়াম সমৃদ্ধ এই জল চুলের জন্যও ভাল। চুল বেড়ে ওঠার জন্য প্রয়োজন হয় ভিটামিন এবং খনিজের। সেই চাহিদা পূরণ হয় এই জলে। আয়রন চুলের ফলিকলে অক্সিজেনের জোগান দিতে সাহায্য করে। এতে চুল মজবুত হয়।
· রেসভেরাট্রল নামে অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট মেলে কিশমিশে। ত্বকের বার্ধক্য রুখতে, তারুণ্য ধরে রাখতে এটি বিশেষ ভাবে সহায়ক। কোলাজেন উৎপাদনেও কিশমিশের জল সহায়ক। ফলে এমন পানীয় খাওয়ার অভ্যাসে ত্বক টানটান এবং বলিরেখামুক্ত থাকবে দীর্ঘ দিন।
· অন্ত্র ভাল রাখতে, কোষ্ঠকাঠিন্যের সমস্যা দূর করতে ফাইবার প্রয়োজন। কিশমিশের মধ্যে থাকা ফাইবার সহজপাচ্য হয়ে ওঠে জলে ভিজলে। সেই জল নিয়মিত খেলে পেট ভাল থাকে। পেটের সঙ্গে ত্বকের গভীর যোগ।
কী ভাবে বানাবেন এই পানীয়
· এক গ্লাস জলে ১০-১২টি কিশমিশ ভিজিয়ে দিন।
· রাতভর ভিজিয়ে রেখে পরের দিন তা খেতে হবে। তবে কিশমিশ ভেজানো জল না খেয়ে কিশমিশও খেতে পারেন।
· কিশমিশে ফাইবার মেলে। এতে পেটের স্বাস্থ্যও ভাল থাকবে।
· ডায়াবিটিস থাকলে অবশ্য নিয়মিত কিশমিশ খাওয়া ঠিক না-ও হতে পারে। সে ক্ষেত্রে চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া দরকার।
মুখের প্যাক
কিশমিশ ভেজানো জল দিয়ে মুখের প্যাকও বানাতে পারেন। চালের গুঁড়ো কিশমিশ ভেজানো জলে গুলে নিন। যোগ করুন কয়েক ফোঁটা মধু। মিশ্রণটি মুখে লাগিয়ে আলতো করে মাসাজ করে মিনিট পাঁচেক রেখে ধুয়ে ফেলুন। সপ্তাহে এক দিন বা মাসে ২-৩ দিন ব্যবহার করলে ত্বক ঝকঝকে হয়ে উঠবে।
প্রতিবেদনটি সচেতনতার উদ্দেশ্যে লেখা। কিশমিশের জল উপকারী হলেও বেশি খাওয়া ভাল নয়। নিয়মিত ডায়েটে জুড়তে হলে পুষ্টিবিদের পরামর্শ নেওয়া ভাল।