ছবি : সংগৃহীত।
দুনিয়া কী ভাবে সাজবে-গুজবে, তা বোঝার জন্য এক সময় নজর রাখা হত প্রাডা-র নকশায়। ফ্যাশন জগতে যেসব বিলাসি ব্র্যান্ড ছড়ি ঘোরাত বা বলা ভাল ফ্যাশন কেমন হওয়া উচিত, তা বলে দিত, তাদের প্রথম সারিতে থাকত ইটালির বিলাসি ব্র্যান্ড প্রাডা। মাসখানেক আগে সেই প্রাডা-রই মুখ পুড়েছিল ভারতের কোলাপুরি চপ্পলের নকশা নকল করে। আর এ বার দেখা গেল, শুধু কোলাপুরি নয়, ভারতের আরও ঐতিহ্যবাহী জুতোর নকশা নকল করে নিজের বলে চালাচ্ছে প্রাডা।
নতুন বিতর্কের কেন্দ্রে যে জুতো, সেটি অনেকটা ভারতের ঐতিহ্যবাহী শুঁড়তোলা চামড়ার জুতোর মতো দেখতে। যার নাম জুতি। এ দেশে জুতি বা শুঁড়তোলা জুতোর ইতিহাস অন্তত ৪০০ বছরের পুরনো।
শুঁড়তোলা জুতোর ইতিহাস অন্তত ৪০০ বছরের পুরনো।
পশুর চামড়া থেকে তৈরি সোনা রূপোর সুতো দিয়ে নকশা করা ওই জুতোর উৎপত্তি হয়েছিল সমাজের উচ্চবর্গীয় পুরুষদের জন্য। পরে সামান্য নকশার অদল বদল করে তা মহিলাদের জন্যও বানানো হয়। আর এই জুতির উৎপত্তি পঞ্জাবে হয় বলেই প্রচলিত ধারণা। যদিও একটু অন্য রকম শুঁড়তোলা জুতো, যাকে মোজরি জুতি বলা হয়, তা পরার চল কয়েকশো বছর ধরে রয়েছে রাজস্থানেও। এ হেন জুতির নকশার সঙ্গে অনেকটাই মিল পাওয়া গেল প্রাডা-র ওয়েবসাইটে থাকা একটি মহার্ঘ জুতোর।
একটু অন্য রকম শুঁড়তোলা জুতো, যাকে মোজরি জুতি বলা হয়, তা পরার চল কয়েকশো বছর ধরে রয়েছে রাজস্থানেও।
‘অ্যান্টিক লেদার পাম্প’ নামে মেয়েদের পরার জুতো হিসাবে ওই জুতো বিক্রি করছে প্রাডা। যার ৮০ শতাংশ নকশাই জুতির মতো। তবে যেহেতু মেয়েদের জুতো, তাই এতে রয়েছে পেনসিল হিল। ছুঁচলো ডগায় জুতির মতো শুঁড় তোলা না থাকলেও খানিকটা তেমনই দেখতে । আর জুতির মতোই তা তৈরিও হয়েছে পশুর চামড়া দিয়েই। আর এই জুতো ১১৫০ ইউরো অর্থাৎ প্রায় ১ লক্ষ ১৭ হাজার টাকায় বিকোচ্ছে প্রাডা-র ওয়েবসাইটে। পাওয়া যাচ্ছে চার রকম রঙে।
‘অ্যান্টিক লেদার পাম্প’ নামে মেয়েদের পরার জুতো হিসাবে ওই জুতো বিক্রি করছে প্রাডা।
প্রাডা-র কোলাপুরি বিতর্কের জল এত দূর গড়িয়েছিল, যে ইটালি থেকে বিদেশি বিলাসি ব্র্যান্ডের আধিকারিকেরা ছুটে এসেছিলেন মহারাষ্ট্রের কোলহাপুরে। পঞ্জাব কি তার শুঁড় তোলা জুতোর নকশা নকল অভিযোগ আনবে প্রাডা-র বিরুদ্ধে। সে কথা সময়ই বলবে। তবে প্রাডার ‘জুতি’র নকশা ইতিমধ্যেই ছড়িয়ে পড়েছে সমাজমাধ্যমে, ভারতীয়েরা সেই ছবি শেয়ার করে লিখেছেন, ভারতীয় জুতোর কারিগরদের প্রাডার হাত থেকে বাঁচান!!