ত্বকের 'বোটক্স' হবে বাড়িতেই, ৫ রকম বীজ দিয়েই তা সম্ভব। ছবি: এআই।
দুর্গাপুজোয় বিস্তর ঘোরাঘুরি করে ত্বকে ট্যান পড়েছে। ক্লান্তির ছাপও রয়েছে। আবার সামনেই কালীপুজো, দীপাবলি, ভাইফোঁটা। কাজেই ত্বকের ক্লান্তি কাটিয়ে আবার জেল্লা ফিরিয়ে আনতে হবে আগের মতোই। অনেকেই সালোঁয় গিয়ে নানা রকম ফেশিয়াল করানোর পরিকল্পনা করছেন। তবে কর্মব্যস্ততায় তা সম্ভব হচ্ছে না। ত্বকের লাবণ্য যদি ফেরাতে হয়, তা হলে প্রসাধনীর প্রয়োজন নেই। প্রাকৃতিক উপাদানেই ত্বক ‘ডিটক্স’ হবে। সালোঁয় না গিয়েও বোটক্স করানোর মতোই ফল পাবেন হাতেনাতে। ত্বকের দাগছোপ, র্যাশ-ব্রণ, বলিরেখা উঠে যাবে খুব তাড়াতাড়ি। তার জন্য একটু সময় করে বানিয়ে নিতে হবে কিছু ফেসপ্যাক।
কোন কোন বীজ দিয়ে ফেসপ্যাক বানানো যাবে
চিয়া বীজ
এতে প্রচুর পরিমাণে ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড এবং অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট থাকে, যা ত্বকের পিএইচের ভারসাম্য বজায় রাখে। ত্বকের প্রদাহ কমায় ও কোলাজেন উৎপাদনে সাহায্য করে। দাগ-ছোপ, রোদে পোড়া দাগ, মেচেতার দাগ, বয়সের ছাপ দূর করতে পারে চিয়া বীজ।
তিসি বীজ
এতে থাকা ওমেগা-৩ ফ্যাটি অ্যাসিড ত্বককে টানটান ও মসৃণ রাখতে সাহায্য করে, ফলে ত্বকে বলিরেখা পড়ে না। তিসি বীজ অ্যান্টি-অক্সিড্যান্টে সমৃদ্ধ, যা ত্বকের যৌবন ধরে রাখতে পারে।
কুমড়োর বীজ
কুমড়োর বীজে ভরপুর মাত্রায় রয়েছে প্রোটিন, ম্যাগনেশিয়াম ও জ়িঙ্ক। সব ক’টি উপাদানই ত্বকের কোলাজেন প্রোটিন তৈরিতে বিশেষ ভূমিকা নেয়। ফলে ত্বকের কোষের পুনর্গঠন দ্রুত হয়। এতে ত্বকের জেল্লা বজায় থাকে।
সূর্যমুখীর বীজ
সূর্যমুখীর বীজ রোদে পোড়া ত্বক থেকে ট্যান দূর করে। সূর্যমুখী ফুলে আছে লিনোলাইক অ্যাসিড, যা ত্বকের মেলানিন উৎপাদন কমায়। ফলে কালচে দাগ-ছোপ পড়ে না। ব্রণ, র্যাশ, লাল হয়ে যাওয়া স্পর্শকাতর ত্বকের নিত্যসঙ্গী হতে পারে সূর্যমুখীর বীজ।
তিলের বীজ
রান্নায় খুব একটা কালো তিল দেওয়ার চল নেই। তবে রূপচর্চায় কালো, সাদা— দু’ধরনের তিলের তেলই ব্যবহার করা হয়। ক্যালশিয়াম, ফসফরাসের মতো খনিজ এবং প্রয়োজনীয় বেশ কয়েকটি অ্যান্টি-অক্সিড্যান্টও রয়েছে তিলের মধ্যে। তিলের তেল ত্বকের ঔজ্জ্বল্য বৃদ্ধি করে।
কী ভাবে বানাবেন?
চিয়া বীজ সারা রাত জলে ভিজিয়ে রাখুন। এতে নরম ও জেলির মতো হবে। এ বার ২ চামচ কুমড়োর বীজ, ২ চামচ সূর্যমুখীর বীজ, ১ চামচ চিয়া বীজ, ১ চামচ তিসির বীজ ও ১ চামচ তিলের বীজ নিতে হবে। শুকনো খোলায় হালকা নেড়ে নিন। তাতে আখরোট ও কয়েকটি কাঠবাদাম মিশিয়ে দিন। রোস্টেড বীজ ও বাদাম মিক্সিতে পিষে গুঁড়ো করে নিন। বাদাম ও বীজের গুঁড়ো কাচের জারে সংরক্ষণ করুন।
রোস্টেড বীজ ও বাদাম ফেসপ্যাক হিসেবে কাজে লাগাতে পারেন, আবার খেতেও পারেন। ফেসপ্যাকের জন্য দু’চামচ করে রোস্টেড বীজ, তার সঙ্গে এক চামচ টকদই, এক চামচ মধু মিশিয়ে প্যাক বানিয়ে নিন। স্নানের আগে মিনিট ২০ লাগিয়ে ধুয়ে ফেলুন। এই ফেসপ্যাক দিয়ে বাড়িতে ত্বকের কোলাজেন ট্রিটমেন্ট করা যাবে। চাইলে এর সঙ্গে অ্যালো ভেরা জেলও মেশানো যাবে।
খেতে হলে ওট্স বা স্মুদিতে মিশিয়ে খেতে পারেন। ঘরে তৈরি প্রোটিন শেক হিসেবে ব্যবহার করা যেতে পারে। এতে ত্বকের স্বাস্থ্য আরও ভাল হবে।