ছবি : সংগৃহীত।
শীত পড়তেই উধাও হয়েছে চুলের নরম-সরম ভাব। বছরের অন্য সময়ে ঘাড়ে পিঠে লুটিয়ে থাকা চুল এখন আকছার উসকোখুশকো। রুক্ষ ভাব তাতে। বার বার আঁচড়েও সামলানো যাচ্ছে না। এর উপর শ্যাম্পু করলে তো কথাই নেই। আরও সঙ্গীন হচ্ছে অবস্থা। আবার না করলেও বাড়ছে খুশকির উৎপাত। এই পরিস্থিতিতে শেষ ভরসা বাজারচলতি কন্ডিশনার, সিরাম। কিন্তু রুক্ষ্ম আবহাওয়া এবং বাতাসে ধুলোর মাত্রা বেড়ে যাওয়ায় সে সবও ব্যর্থ হচ্ছে কখনও সখনও। অল্পস্বল্প ব্যবহারে কাজ হচ্ছে না। শীতে এমন জটিল সমস্যায় পড়তে হয় অনেককেই। বিশেষ করে তাঁদের, যাঁদের চুলের দৈর্ঘ্য বেশি। তবে নিয়ম করে চুলের যত্ন নিলে এই সমস্যা থেকে মুক্তি পাওয়া সম্ভব।
শুষ্ক চুলকে নরম করার জন্য দরকার কিছু বাড়তি যত্ন। যা চুলের হারিয়ে যাওয়া নরম ভাব এবং আর্দ্রতাকে ফিরিয়ে আনতে পারে। ঘরোয়া কয়েকটি উপাদান দিয়ে চুলের যত্ন নিলে তা ওই আর্দ্র ভাব ফেরাতে সাহায্য করবে। আর তার জন্য খুব বেশি পরিশ্রমেরও দরকার পড়বে না।
১। তিসির বীজ ভেজানো জল
তিসির বীজ ভেজানো জলে রয়েছে প্রচুর পরিমাণে ওমেগা ৩ ফ্যাটি অ্যাসিড। যা চুলের চারপাশে ময়েশ্চারাইজ়ারের পরত তৈরি করে দেয়। চুলকে ভঙ্গুর হতে দেয় না। সপ্তাহে দু’ তিন বার এই তিসি ভেজানো জল চুলে লাগিয়ে রাখতে চুল অত্যন্ত নরম এবং উজ্জ্বল দেখাবে। ভিতর থেকে পুষ্টিও জোগাবে চুলকে।
২। কলা দিয়ে তৈরি মাস্ক
পাকা কলা চটকে বা ব্লেন্ডারে বেটে নিয়ে তা চুলে মাস্কের মতো করে ব্যবহার করতে পারেন। পটাশিয়াম এবং নানা ধরনের ভিটামিনে ভরপুর কলায় আর্দ্রতা বজায় রাখার ক্ষমতাও রয়েছে। খরখরে রুক্ষ হয়ে যাওয়া চুলে এক বারের ব্যবহারেই তফাত দেখা যাবে। এটিও সপ্তাহে ২-৩ বার ব্যবহার করতে পারেন।
৩। দইয়ের মাস্ক
দইয়ে রয়েছে প্রাকৃতিক ময়েশ্চারাইজ়ার। এতে থাকা বি ভিটামিন চুলের জন্যও অতি জরুরি একটি পুষ্টিগুণ। চুলে সপ্তাহে ২-৩ বার দইয়ের মাস্ক লাগিয়ে ঘণ্টা খানেক রেখে দিয়ে তার পরে চুল পরিষ্কার করলে চুল হবে রেশমের মতো নরম এবং উজ্জ্বল।
৪। মধু এবং অলিভ অয়েল
চুলে মধু এবং অলিভ অয়েল এক সঙ্গে মিশিয়ে স্নানের ঘ্ণ্টা খানেক আগে লাগিয়ে রাখতে পারেন। মধু আর্দ্রতা জোগাতে সাহায্য করে। অলিভ অয়েল চুলে পুষ্টি জুগিয়ে চুলতে স্বাস্থ্যোজ্জ্বল বানায়।
৫। ঈষদুষ্ণ নারকেল তেল
পুরনো টোটকা তবে কাজের। নারকেল তেল খুব হালকা গরম করে নিন। মনে রাখবেন খুব বেশি গরম তেল চুলের গোড়ায় লাগালে লাভের চেয়ে ক্ষতির সম্ভাবনা বেশি। তাই খুবই অল্প গরম করতে হবে। যাতে তেলের পুষ্টিগুণ সক্রিয় হয়। এর পরে ওই তেল ভাল ভাবে চুলে এবং চুলের গোড়ায় লাগিয়ে নিন। এতে চুলের গোড়ায় রক্ত সঞ্চালন ভাল হবে। চুলের প্রোটিনের ঘাটতিও খানিকটা মিটবে। চাইলে হালকা গরম জলে একটি তোয়ালে ভিজিয়ে সেটিকে ভাল করে নিকড়ে নিয়ে চুল মুড়ে রাখতে পারেন। এতেও চুল নরম হবে। তবে শীতে ঠান্ডা লাগার সমস্যা থাকলে খুব বেশি ক্ষণ ভিজে তোয়ালে মাথায় রাখবেন না। ঠান্ডা হয়ে গেলে খুলে ফেলুন।