কী ভাবে অভিনেত্রীদের মতো ‘লাফ লাইন’ আড়াল করবেন? ছবিটি মালাইকা অরোরার। ছবি: সংগৃহীত।
পার্টি হোক বা অনুষ্ঠানবাড়ি, নজরকাড়া দেখাতে হলে গাল হতে হবে মসৃণ। রংচঙে মাখা সাদা হয়ে যাওয়া মুখ নয়, বরং নিজস্ব গায়ের রঙেই ফুটে উঠবে আভা, থাকবে চটক। তবেই না রূপটান।
সেজেগুজে অনুষ্ঠানে গেলেন, কিন্তু কিছুক্ষণ পরেই দেখা গেল ‘লাফ লাইন’ বা ‘স্মাইল লাইন’। তখনই শুরু হয় বিড়ম্বনা। হাসলে ঠোঁটের দু’পাশে থুতনির উপরের দুই অংশ কুঁচকে যাবে, জানা কথাই। হাসলে মুখে যে রেখা পড়ে তাকেই বলে লাফ লাইন বা স্মাইল লাইন। কিন্তু পুরু মেকআপের স্তর ভেদ করে যখন সেই রেখা ক্রমে স্পষ্ট হয়ে ওঠে, তখনই হয় সমস্যা। কারও আবার স্মাইল লাইন নিয়েই যত সমস্যা। বলিরেখা এত গভীর হয়ে যায় যে দেখতে বিশ্রী লাগে। হাসলে গাল, চোখ-সহ মুখমণ্ডলের বিভিন্ন অংশ কুঞ্চিত হয়। কারও কারও সেই জায়গাতেই দাগ হয়ে যায়। এই সমস্যার সমাধান হবে কী করে?
ময়েশ্চারাইজ়ার: সাধারণত ত্বকের ধরন শুষ্ক হলে বলিরেখা পড়ে দ্রুত। তাই পর্যাপ্ত জলপানের অভ্যাস তৈরির পাশাপাশি নিয়ম করে ত্বক ক্লিনজ়িং, টোনিং এবং ময়েশ্চারাইজ়িং করতে হবে। মরসুম অনুযায়ী ময়েশ্চারাইজ়ার বদলাতে পারে, তবে তা মাখতে হবে বছরভর। বিশেষত রাতের দিকে ত্বক আর্দ্র রাখে এমন সিরামের ব্যবহার বা ত্বকের উপযোগী নৈশ ক্রিম মাখা জরুরি। নিয়মিত যত্ন বলিরেখা গভীর ভাবে পড়তে দেবে না।
ফেস যোগা: ফেশিয়াল, তেল মাসাজ়, ফেস যোগা— দ্রুত বলিরেখা পড়তে দেয় না। হাসলে যে বলিরেখা পড়ে, সেটিও এই ধরনের মাসাজ়ে কমে যায়। ত্বক টানটান এবং মসৃণ থাকে। বয়স বৃদ্ধির সঙ্গে কোলাজেন নামক প্রোটিনের মাত্রা কমতে থাকে। ফলে দ্রুত বলিরেখা পড়ে। নিয়ম করে ত্বকের যত্ন, মাসাজ়ে এই সমস্যা নিয়ন্ত্রণে থাকে। মুখের নানা ধরনের ব্যায়াম হয়। এই ব্যায়ামগুলিও বলিরেখা দূরে রাখে।
খাওয়া: ত্বকের সঙ্গে পুষ্টির নিবিড় যোগ। ভিটামিন, খনিজ সমৃদ্ধ খাবার, প্রোটিন ত্বক ভাল রাখার জন্য জরুরি। নিয়মিত টাটকা ফল, শাক-সব্জি, মাছ, ডিম, মুরগির মাংস পাতে রাখলে এবং একইসঙ্গে জাঙ্ক ফুড বা অস্বাস্থ্যকর খাবার এড়ালে ত্বক ভাল থাকবে। বয়স হলে কোলাজেনের মাত্রা কমে যাওয়া বলিরেখা পড়ার অন্যতম কারণ। মাছ, বাদাম, বীজ, ডাল জাতীয় খাবার খেলে সেই ঘাটতিপূরণ হবে।
মেকআপ: বিয়েবাড়ি বা পার্টিতে দেখা যায় মেকআপের পরে মুখে বলিরেখা, স্মাইল লাইন অনেক সময় বেশি স্পষ্ট হয়ে উঠেছে। ত্বক যদি আর্দ্র না থাকে, মেকআপ বেশি পুরু হয় তখনই এমন সমস্যা হতে পারে। ত্বকের উপযোগী প্রাইমার ব্যবহার জরুরি। এতে বলিরেখা, ত্বকের অসমান অংশ মসৃণ হয়ে যায়। তবে পুরু মেকআপের বদলে ত্বকের উপযোগী ফাউন্ডেশনের পাতলা স্তর থাকলে এই সমস্যার কিছুটা সমাধান হত পারে। না হলে মেকআপ করার পর মাঝেমধ্যে ‘টাচ আপ’ বা আঙুল বা ব্রাশের সাহায্যে বলিরেখার অংশগুলিতে মেকআপ ভাল করে মিলিয়ে দিলেও হবে।
সিরাম: হাসলে চামড়া কুঁচকে যাবে না তা হতে পারে না। তবে বলিরেখা যাতে না পড়ে যায় সে জন্য ভিটামিন সি এবং নায়াসিনামাইডের মতো সিরাম ব্যবহার করা যেতে পারে। এগুলি ত্বককে গভীর ভাবে আর্দ্র রাখে। বলিরেখা নিয়ন্ত্রণে রাখে।
কারও কারও ‘স্মাইল লাইন’-গর্তের মতো হয়ে যায়। বিশেষত বয়স বাড়লে। সে ক্ষেত্রে ত্বকের রোগের চিকিৎসকের সাহায্য নেওয়া যেত পারে। ফিলার, লেজ়ার থেরাপি-সহ বিভিন্ন চিকিৎসা পদ্ধতির আশ্রয় নেওয়া যায়।