চুল ধোয়ার জলেই ক্ষতি! ছবি: সংগৃহীত।
চুলের স্বাস্থ্যরক্ষায় কোনও খামতি নেই, তার পরও রুক্ষতা, শুষ্কতা, জট, ক্ষয়ের হাত থেকে রক্ষা পাচ্ছেন না। তেল, শ্যাম্পু, কন্ডিশনার, আঁচড়ানো, বাঁধা— সবই নিয়ম মেনে করেন। তার পরও সুরাহা হচ্ছে না কেন? রহস্য লুকিয়ে সম্ভবত জলে। রোজ যে জলে চুল ধুচ্ছেন, সেটিই আপনার কেশস্বাস্থ্যের শত্রু। খরজলের কারণে চুলের স্বাস্থ্য ফেরে না। এতে থাকে উচ্চ পরিমাণে ম্যাগনেশিয়াম এবং ক্যালশিয়াম। ফলে চুল ধোয়ার সময়ে খনিজের অবশিষ্টাংশ আটকে থাকে মাথার ত্বকে ও চুলে। আর্দ্রতা শুষে নেওয়ার রাস্তা বন্ধ করে দেয় সেগুলি। চুল ধীরে ধীরে শুষ্ক হতে থাকে, ভাঙন ধরে ও জট পাকিয়ে যায়। কিন্তু কিছু পন্থা অবলম্বন করলে খরজলের ক্ষতিকর প্রভাব থেকে নিজের চুলকে বাঁচানো যেতে পারে।
১। ক্ল্যারিফাইং শ্যাম্পু ব্যবহার: খরজলের কারণে চুলের মধ্যে যে নাছোড় খনিজ জমে থাকে, সেগুলিকে সরানোর ক্ষমতা সাধারণ শ্যাম্পুর থাকে না। এগুলি চুলে জমে জমে মাথা ভারী করে তোলে। কন্ডিশনার বা তেল দিয়েও চুলে আর্দ্রতা ফেরানো সম্ভব হয় না। সে ক্ষেত্রে একমাত্র সাহায্যে আসতে পারে ক্ল্যারিফাইং শ্যাম্পু। এটি একটি বিশেষ প্রকারের শ্যাম্পু, যা গভীর ভাবে ময়লা দূর করে। তেল বা মাথায় মাখার পণ্যের অবশিষ্টাংশ, খরজলের খনিজ পদার্থ এবং ক্লোরিন— সবই অপসারণ করতে পারে। সপ্তাহে এক বার এটি ব্যবহার করা উচিত।
চুল ধোয়ার জলেই সমস্যা। ছবি: সংগৃহীত।
২। পরিশোধিত জল ব্যবহার: খরজলের প্রভাব কাটানোর সবচেয়ে সহজ পদ্ধতি হল, জল বদল। পরিশোধিত জল, বোতলের পানীয় জল দিয়ে মাথা ধুয়ে নিলে খনিজের অবশিষ্টাংশ জমে থাকার প্রশ্নই উঠবে না। অথবা শাওয়ারের মুখে ছাঁকনি আটকে দিলেও খানিক পরিমাণে পরিশোধিত হয়ে যাবে জল। এই পদ্ধতি ত্বকের জন্য ভাল।
৩। অ্যাপল সাইডার ভিনিগার ব্যবহার: খরজলের ক্ষয়ের হাত থেকে বাঁচতে অ্যাপল সাইডার ভিনিগার দিয়ে চুল ধুয়ে নিতে পারেন। দুই টেবিল চামচ ভিনিগার এক কাপ পরিশোধিত জলে মিশিয়ে নিন। শ্যাম্পুর পর একেবারে শেষে সেই মিশ্রণ দিয়ে চুল ধুয়ে ফেলুন। ১-২ মিনিটের জন্য রেখে দিন, পরে পরিশোধিত জল দিয়ে এক বার ধুয়ে ফেলুন। এতে থাকা অ্যাসিড খনিজ সরিয়ে ফেলতে সাহায্য করে।
৪। নিয়মিত কন্ডিশনিং: যেহেতু খরজল চুলের প্রাকৃতিক তেল শুষে নেয়, তাই নিয়মিত কন্ডিশনিং করা দরকার। তাই হেয়ার মাস্ক বা হেয়ার কন্ডিশনার দিয়ে নিয়মিত চুলের যত্ন নিতে হবে। এমন ময়েশ্চারাইজ়ার মেখে গরম তোয়ালে মাথায় জড়িয়ে রাখুন, যাতে কন্ডিশনার গভীরে প্রবেশ করে চুলকে নরম করতে পারে।
৫। লিভ-ইন কন্ডিশনার বা সিরাম ব্যবহার: লিভ-ইন কন্ডিশনার বা সিরাম মেখে রাখলে চুল এবং খরজলের খনিজ পদার্থের মধ্যে সুরক্ষার একটি স্তর তৈরি হবে। এই পণ্যগুলি চুলের কিউটিকলকে ঢেকে রাখে। ফলে আর্দ্রতা ধরে রাখা যায় এবং খনিজ পদার্থ থেকে তৈরি হওয়া রুক্ষতাও হ্রাস পায়।