ত্বকের যত্ন নেবেন খাবার। তবে খেতে নয়, মাখতে হবে। ছবি: সংগৃহীত।
প্রসাধনীর বাজারে একটু নজর দিলেই দেখা যাবে, ময়েশ্চারাইজ়ার থেকে মাস্ক, ফেসওয়াশ থেকে স্ক্রাবে ব্যবহার হচ্ছে ওট্স, মধু, দুধ, নারকেল তেল, ভিটামিন সি, হলুদ, কেশর। প্রসাধনী উৎপাদকদের দাবি সেই রকমই।
মা-ঠাকুরমারা রূপচর্চায় যা ব্যবহার করতেন, সেই সব উপাদানই আবার নতুন করে প্রসাধনীর জগতে। অন্তত বিজ্ঞাপনী মোড়কে তেমনটাই উল্লেখ। মানুষ এখন ব্যস্ত। হলুদ বাটা, বেসন গোলার সময় কম। তাই চটজলদি সামাধান করে হাতের কাছে ধরছেন উৎপাদকেরা।
কেশর, ওট্স, পেঁপে থেকে স্ট্রবেরি যদি রূপচর্চার উপকরণ হয়, তবে তা কিন্তু সরাসরি মাখা যায়। পেটের পক্ষে ভাল ওট্স থেকে পেঁপে, হলুদ, স্ট্রবেরি রূপচর্চায় ব্যবহার করলে এক দিনে হয়তো ত্বকের ধরন রাতারাতি বদলে যাবে না, তবে নিয়মিত যত্নে নিঃসন্দেহে মুখ হবে উজ্জ্বল। ফিরবে দীপ্তি।
হলুদ: হলুদে আছে কারকিউমিন নামক একটি উপাদান। যা অ্যান্টি-ইনফ্ল্যামেটরি এবং অ্যান্টি-অক্সিড্যান্ট হিসেবে কাজ করে। ত্বকচর্চার ক্ষেত্রে কাঁচা হলুদ ব্যবহার করার প্রথা নতুন নয়। মুখের কালচে ভাব দূর করতে নিয়মিত হলুদ বাটা দুধের সর দিয়ে মাখার চল বহু দিনের।
ওট্স: ফাইবার, ভিটামিন, অ্যান্টি-অক্সি ড্যান্টে ভরপুর ওট্স এখন থাকে স্বাস্থ্য সচেতন মানুষদের খাদ্যতালিকায়। স্নান থেকে শুরু করে ত্বকের চর্চায় ওট্স বেশ কার্যকর। ব্রণ কমাতে, ত্বকের কালচে ভাব দূর করতে ওট্স স্ক্রাবার ও ক্রিম হিসাবেও ব্যবহার করতে পারেন।
পেঁপে: পেঁপেতে থাকা ভিটামিন এ, ভিটামিন সি এবং প্যাপাইন এনজাইম ত্বকে বয়সজনিত কারণে হওয়া ক্ষতিগুলিকে দূরে রাখতে পারে।
বাড়িতে কী ভাবে বানাবেন মাস্ক?
দুধ, মধু, ওট্স: দুধ, মধু, ওট্স যা খাওয়া হয়— সেটাই মুখে মাস্ক হিসাবে ব্যবহার করা যায়। ওট্স চাইলে গুঁড়িয়ে নিতে পারেন। কাঁচা দুধে তা মিনিট পাঁচেক ভিজিয়ে রাখতে হবে। ওটস নরম হয়ে গেলে ৩-৪ ফোঁটা মধু এতে মিশিয়ে নিন। মুখ ভাল করে পরিষ্কার করে নেওয়ার পরে তা মাখতে হবে। মোটামুটি ১৫ মিনিট রেখে হালকা মাসাজ় করে ধুয়ে ফেললেই হবে। শীত আসার আগেই বাতাসে জলীয় বাষ্পের পরিমাণ কমে, ত্বকে টান ধরে। এই মাস্ক ত্বককে নরম রাখতে এবং আর্দ্রতা জোগাতে বিশেষ ভাবে সাহায্য করে।
দুধ, বেসন, হলুদবাটা, মধু: কাঁচা হলুদ বেটে নিন। হলুদ শুকিয়ে গুঁড়িয়ে নিলেও চলবে। বেসন দুধে ভিজিয়ে নিয়ে হলুদ যোগ করুন। দিয়ে দিন কয়েক ফোঁটা মধু। সপ্তাহে ২-৩ দিনও যদি এই মাস্ক ব্যবহার করা যায়, ত্বকের বর্ণ উজ্জ্বল হবে ধীরে ধীরে। মুখে ব্রণ থাকলে দুধ বাদ দিলে নিমপাতা জলে ফুটিয়ে সেই জলটিও বেসন গোলার জন্য ব্যবহার করতে পারেন। কিংবা সাধারণ জলেও তা গোলা যাবে।
পেঁপে, টক দই, অলিভ অয়েল: শীতের দিনে যাঁদের ত্বক ভীষণ রুক্ষ হয়ে যায়, কালচে ভাব থাকে, তাঁরা এটি মাখতে পারেন। ২ টেবিল চামচ পাকা পেঁপে বাটার সঙ্গে১ টেবিল চামচ টকদই, ১ টেবিল চামচ অলিভ অয়েল মিশিয়ে নিতে হবে। ফেসওয়াশ দিয়ে মুখ ধোয়ার পরে সেটি মেখে ১৫ মিনিট রেখে ধুয়ে ফেলতে হবে। সপ্তাহে ২-৩ দিন মাখলেই, শীতের মরসুমেও ত্বক থাকবে সুন্দর, দীপ্তিময়।