Fish DNA Therapy

মাছের ‘ডিএনএ’ দিয়ে ত্বকের থেরাপি! বার্ধক্যের ছাপই পড়বে না, বিশ্ব জুড়ে জনপ্রিয় হচ্ছে কোন চিকিৎসা?

মাছের ডিএনএ বিশেষ উপায়ে পরিশোধন করে তা ত্বকে ইঞ্জেকশনের মাধ্যমে ঢুকিয়ে দেওয়া হবে। আর তাতেই নাকি বার্ধক্যের ছাপটুকু মুখ থেকে একেবারে ধুয়েমুছে যাবে।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ১২ অক্টোবর ২০২৫ ০৯:০৪
Share:

ত্বকের যৌবন ধরে রাখবে মাছের ডিএনএ, কী থেরাপি নিয়ে এত চর্চা? গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।

বয়সের চাকা থামিয়ে ত্বকের তারুণ্য ধরে রাখতে কে না চান! বয়স বাড়লে গাল-গলার ভাঁজে স্পষ্ট হয় বলিরেখা। টানটান ত্বক দীপ্তি হারাতে থাকে। এই পরিবর্তনের গতিকেই শ্লথ করে দেওয়ার জন্য কত না প্রচেষ্টা চলছে! ‘অ্যান্টি-এজিং থেরাপি’ নিয়ে বিশ্ব জুড়েই গবেষণা হচ্ছে। কী ভাবে ত্বককে যৌবনোজ্জ্বল করা যায়, সে নিয়ে নানা রকম পরীক্ষা-নিরীক্ষা হচ্ছে। নানা রকম থেরাপিও চলে এসেছে। তবে তার মধ্যে একটি বিশেষ রকম থেরাপি নিয়ে হইচই হচ্ছে। সেটি হল মাছের ডিএনএ (ডিঅক্সিরাইবো নিউক্লিক অ্যাসিড) দিয়ে ত্বকের চিকিৎসা। মাছের ডিএনএ বিশেষ উপায়ে পরিশোধন করে তা ত্বকে ইঞ্জেকশনের মাধ্যমে ঢুকিয়ে দেওয়া হবে। আর তাতেই নাকি বার্ধক্যের ছাপটুকু মুখ থেকে একেবারে ধুয়েমুছে যাবে।

Advertisement

ত্বকের বার্ধক্য ঠেকাবে মাছের ডিএনএ?

স্যামন, ট্রাউট জাতীয় মাছের ডিএনএ দিয়ে ত্বকের চিকিৎসা চলছে ইউরোপ ও এশিয়ার নানা জায়গায়। দক্ষিণ কোরিয়ায় এই ‘স্কিন থেরাপি’ খুবই জনপ্রিয়। এর গালভরা নাম ‘পলিনিউক্লিয়োটাইড থেরাপি’। এতে ছুরি-কাঁচি চালানোর প্রয়োজনই নেই। শুধু জেলের মতো মাছের ডিএনএ মুখে, গলার ভাঁজে, হাতে বা ত্বকের যে কোনও জায়গায় ইঞ্জেকশনের মাধ্যমে ঢুকিয়ে দিলেই হল। মাছের ডিএনএ নিজে থেকেই ত্বকের কোষের পুনর্গঠনের কাজ শুরু করে দেবে।

Advertisement

মাছের ডিএনএ দিয়ে ত্বকের থেরাপির নাম 'পলিনিউক্লিয়োটাইড' থেরাপি। ছবি: এআই।

ইউরোপের কিছু দেশে স্যামন মাছের শুক্রাণুর ডিএনএ নিয়ে তা পরিশোধন করে ত্বকের চিকিৎসায় ব্যবহার করা হচ্ছে। একে ‘স্যামন স্পার্ম ফেশিয়াল’ বলা হচ্ছে। ত্বক চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, মাছের ডিএনএ মানুষের ত্বকের কোষের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ হওয়ায়, কোষের ক্ষত মেরামতির কাজে একে ব্যবহার করা যেতে পারে। মাছের ডিএনএ দিয়ে ত্বকের চিকিৎসা আগেও হয়েছে। ত্বকের কোনও গভীর ক্ষত মেরামতির জন্য অথবা ত্বকের নষ্ট হয়ে যাওয়া কোষের পুনর্গঠনের জন্য এমন থেরাপির প্রয়োগ করা হত। তবে সাম্প্রতিক সময়ে এর জনপ্রিয়তা বেড়েছে। এখন ‘অ্যান্টি-এজিং’ থেরাপি হিসেবে এর জনপ্রিয়তা বাড়ছে।

কী লাভ এই থেরাপির?

মাইক্রোনিডল (ছোট ছোট সুচ)-এর মাধ্যমে ত্বকের নীচের স্তরে মাছের ডিএনএ ঢুকিয়ে দিলে তা ত্বকের কোলাজেন প্রোটিন তৈরিতে বিশেষ ভূমিকা নেবে। কোলাজেন ও ইলাস্টেন প্রোটিন তৈরি করবে, যা ত্বকের লাবণ্য ধরে রাখবে দীর্ঘ কাল।

ত্বকের ফাইব্রোব্লাস্ট কোষ সক্রিয় হয়ে উঠবে, ফলে কোষের পুনর্গঠন হতে থাকবে। ফলে যত কোষের মৃত্যু হবে, ততই নতুন কোষ তৈরি হতে থাকবে। এতে ত্বকে বুড়োটে ছাপ পড়বেই না। চেহারায় বার্ধক্য ঠেকিয়ে রাখা সম্ভব হবে দীর্ঘ সময়।

কম বয়সেই বলিরেখা পড়ছে যাঁদের, নানা রকম ওষুধ বা অস্ত্রোপচারের কারণে চামড়া কুঁচকে গিয়েছে, তাঁরা এই থেরাপি করালে লাভবান হবেন।

ত্বকের যে কোনও দাগছোপ নির্মূল করতে পারবে এই থেরাপি।

ত্বকের প্রদাহনাশ করতে পারবে পলিনিউক্লিয়োটাইড থেরাপি। ত্বকের স্বাভাবিক পিএইচ ব্যালান্স (অম্ল-ক্ষারের ভারসাম্য) বজায় রাখবে। ফলে ত্বক সব সময়েই উজ্জ্বল ও জেল্লাদার দেখাবে।

তবে পলিনিউক্লিয়োটাইড থেরাপি করাতে হলে আগে ত্বক চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া জরুরি। চর্মরোগ থাকলে বা অ্যালার্জির ধাত থাকলে, এই ধরনের থেরাপি করানো যাবে কি না, তা জেনে নিতে হবে। তা ছাড়া এমন থেরাপি কোনও দক্ষ ও অভিজ্ঞ কারও কাছে করানোই ভাল।

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement