Red Carpet

Riz Ahmed: রেড কার্পেটে পাঞ্জাবী পরে নজরে পাকিস্তানি অভিনেতা, ঔপনিবেশিক পোশাক-বিধি কি বদলাবে

‘এনকাউন্টার’ ছবির প্রদর্শনীতে ‘প্রা়ডা’-র তৈরি পাঞ্জাবী পরে হাজির হলেন পাকিস্তানি ব‌ংশোদ্ভূত অভিনেতা রিজ আহমেদ। ছক ভাঙল রেড কার্পেটের।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ২১ ডিসেম্বর ২০২১ ১৬:৫৯
Share:

রিজের পাঞ্জাবী তৈরি করেছে ‘প্রাডা’। ছবি: সংগৃহীত

ক্যালকাটা ক্লাবে বর্ষবরণ অনুষ্ঠানে যাবেন। পা ঢাকা জুতো না পরলে প্রবেশ নিষেধ। একই নিয়ম বেঙ্গল ক্লাব, ক্যালকাটা রোয়িং ক্লাব, প্রিন্সটন ক্লাব কিংবা শহরের যে কোনও সম্ভ্রান্ত ক্লাবেই। দেশ স্বাধীন হয়েছে বহু বছর। কিন্তু ঔপনিবেশিক পোশাক-বিধি থেকে এখনও স্বাধীনতা পায়নি অনেক জায়গার মানসিকতাই। এখনও বহু অনুষ্ঠানে যেতে গেলে ‘ফর্ম্যাল’ পোশাক পরা আবশ্যিক। এবং ছেলেদের জন্য সেটা বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই ধুতি-পাঞ্জাবী বা দেশি কোনও পোশাক নয়, বরং স্যুট-বুট-টাই! এই নিয়ম চলে আসছে বহু যুগ ধরে। তেমন কেউ এই রীতির বিরুদ্ধ কখনও সে ভাবে আপত্তিও জানাননি।

Advertisement

কান চলচ্চিত্র উৎসবে খালে পায়ে জুলিয়া রবার্টস। ছবি: সংগৃহীত

তবে আন্তর্জাতিক স্তরে নানা মঞ্চে ছক ভাঙছেন অনেকেই। ২০১৬ সালে কান চলচ্চিত্র উৎসবের রে়ড কার্পেটে খালি পায়ে হেঁটেছিলেন অভিনেত্রী জুলিয়া রবার্টস। ‘ক্যারল’ ছবির প্রদর্শনীতে বেশ কয়েক জন পঞ্চাশোর্ধ্ব মহিলাকে প্রবেশ করতে দেওয়া হয়নি। কারণ তাঁরা হিল দেওয়া জুতো পরেননি। সেই ঘটনার প্রতিবাদেই জুলিয়া রবার্টসের এই কীর্তি। তবে এটি কোনও একক ঘটনা নয়। বহু বারই পোশাকের মাধ্যমে কোনও রাজনৈতিক মত প্রকাশ করা হয়েছে রেড কার্পেটে। টাক্সিডো এবং গাউনের ভিড়ে অন্য পোশাকের মাধ্যমে নিজস্ব সংস্কৃতি তুলে ধরা তারই একটি অংশ।

এ বছরই কানের রেড কার্পেটে আজমেরী হক বাঁধনকে দেখা গিয়েছিল বাংলাদেশের মসলিন জামদানিতে। আন্তর্জাতিক পোশাকশিল্পীদের গাউনের ভিড়়ে তাঁর জামদানি এবং স্থানীয় পোশাকশিল্পীর তৈরি পাথর বসানো ব্লাউজ দেখে চোখ জুড়িয়েছিল বাঙালিদের। এ বার বাঁধনের মতো চমকে দিলেন ব্রিটিশ-পাকিস্তানি অভিনেতা রিজ আহমেদও।

Advertisement

তাঁর নতুন ছবি ‘এনকাউন্টার’-এর বিশেষ প্রদর্শনীতে তাঁকে দেখা গেল পাঞ্জাবী-চুড়িদারে। অনেক ভারতীয়কে বিভিন্ন রেড কার্পেটে শাড়ি পরে আগেও দেখা গিয়েছে। কিন্তু ছেলেদের ছক ভাঙতে সে ভাবে দেখা যায় না। কখনও কখনও জারেড লেটোর মতো সাহসী অভিনেতারা অস্কারের মঞ্চে স্কার্ট পরে চলে যান বটে। তা-ও টাক্সিডোর বাইরে খুব বেশি পা বাড়ান না অনেকেই। কিন্তু রিজ চেয়েছিলেন তাঁর পাকিস্তানি সংস্কৃতি সম্মান জানাতে। তাই হাল্কা গোলাপি রঙের একটি কুর্তা পরে সগৌরবে তিনি হাজির হয়েছিলেন রেড কার্পেটে। তবে চমক রয়েছে আর এক জায়গাতেও। পাঞ্জাবীটি তৈরি করেছে বিখ্যাত আন্তর্জাতিক ডিজাইনার সংস্থা ‘প্রাডা’। হলিউ়ডের পর্দায় যেমন বর্ণ-বৈচিত্র এখন রমরমিয়ে রাজ করছে, তেমনই পোশাক-পরিচ্ছদেও যে আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলি বৈচিত্র আনার দিকে ঝুঁকেছেন, তা যথেষ্ট আশাবাদী।

জামদানী পরে কান’এ বাঁধন। ছবি: সংগৃহীত

বিশ্বজুড়ে যখন পোশাক-আশাক নিয়ে এত ধরনের বিপ্লব চলছে, তখন শহরের ক্লাবগুলির পোশাক-বিধি নেহাতই মান্ধাতার আমলের বলে মনে হতেই পারে। জুলিয়া রবার্টস বা রিজ আহমেদ তাঁদের পোশাকের মাধ্যমে যে কথাগুলি বলতে চাইছেন, সেগুলি কবে এই ক্লাবগুলি কড়া নিরাপত্তার গেট পেরিয়ে বিশাল কাঠের দরজা ঠেলে অন্দরমহলে পৌঁছবে, তা-ই এখন দেখার।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন