dental care

দাঁতে কালচে ছোপ, মুখে দুর্গন্ধ? কী কী মানলে সহজেই সমাধান

মুখে দুর্গন্ধ হওয়ার পাশাপাশি দাঁতে কালচে ও হলদেটে দাগ ছোপ পড়ে।

Advertisement

সুমা বন্দ্যোপাধ্যায়

কলকাতা শেষ আপডেট: ২৮ অক্টোবর ২০২০ ১৩:৪৫
Share:

দাঁতের চিকিৎসায় অবহেলা নয় কোনওমতেই। ফাইল ছবি।

হাসি পেলেও হাসতে মানা, না না রামগরুড়ের ছানা নয়। যাঁদের দাঁত দুপাটি কালচে ছোপে ভরা তাঁরা হাসতে গেলে ১০ বার ভাবেন। জোর করে হাসি চেপে রাখেন। হলদে বা কালচে ছোপ ধরা দাঁত বের করে হাসলে নিজেরই খারাপ লাগে। অনেকের সমস্যা আবার অন্যরকম, তাঁরা কারও সামনে গিয়ে কথা বলতে গিয়ে পিছিয়ে আসেন। অন্যরা নাকে রুমাল দেন তাঁদের শ্বাসের দুর্গন্ধের জন্যে।

Advertisement

দাঁত ভাল রাখার একটিই পাসওয়ার্ড। তা হল দিনে দু’বার সঠিক পদ্ধতিতে ব্রাশ করার পাশাপাশি প্রতি বার খাবার পরে ভাল করে কুলকুচি করে মুখ পরিষ্কার রাখা, দাঁতের ফাঁকে যেন খাবারের টুকরো আটকে না থাকে সে দিকে নজর রাখা, এমনই জানালেন ডেন্টাল সার্জেন শুভঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়।

সিগারেট, বিড়ি, গুটখা, খৈনি-সহ যে কোনও বদ অভ্যাস দাঁত-সহ মুখের ভিতরের ও মাড়ির সমস্যা ডেকে আনে। মুখে দুর্গন্ধ হওয়ার পাশাপাশি দাঁতে কালচে ও হলদেটে দাগ ছোপ পড়ে। এ সবের হাত থেকে রেহাই পেতে একদিকে খারাপ অভ্যাস ছেড়ে দিতে হবে, অন্যদিকে বছরে এক বার স্কেলিং করিয়ে নিলে দাঁতের দাগ ছোপ দূর হওয়ার পাশাপাশি মুখের দুর্গন্ধও দূর হয় বললেন শুভঙ্কর বন্দ্যোপাধ্যায়।

Advertisement

আরও পড়ুন: পুরুষদের বন্ধ্যাত্বের সমস্যা বাড়ছে, কী কী খেয়াল রাখতেই হবে

খৈনি,পানপরাগ বা সিগারেটের নেশা নেই অনেকের। তবুও দাঁতে ছোপ পড়ে যায়। বেশ কিছু কারণ লুকিয়ে আছে এর পিছনে। বয়স বাড়লে প্রকৃতির স্বাভাবিক নিয়মে যেমন ত্বকে বলিরেখা পড়ে, চুলে পাক ধরে তেমনই দাঁতেও ছাপ পড়ে। একজন অল্প বয়সী ছেলে মেয়ের দাঁত যতটা উজ্জ্বল, ৬০ পেরিয়ে গেলে দাঁত ততটাই দাগ ছোপে ভরা। তবে সঠিক পদ্ধতিতে দিনে দু’বার নিয়ম মেনে ব্রাশ করলে এবং নিয়ম করে সঠিক ভাবে স্কেলিং করালে দাগ ছোপের সমস্যা থাকবে না। হাসি চাপার কোনও দরকারই হবে না, ভরসা দিলেন শুভঙ্কর।

চোট লেগে দাঁতের রঙ বদলে কালচে বা নীলচে হয়ে গেলে দ্রুত চিকিৎসা করানো দরকার। ফাইল ছবি।

তামাক-সহ যে কোনও নেশাই দাঁতে ছোপ পড়ার একটা বড় কারণ। বহুবার কফি, চা বা রেড ওয়াইন পান করেন তাঁদের দাঁতের রঙ বদলে যায়। ডার্ক চকোলেট, বিট, গাজর বেশি খেলে দাঁতে ছোপ পড়তে পারে। রোজকার ডায়েটে ভিনিগার সহ প্রচুর সাইট্রাস অর্থাৎ টকজাতীয় খাবার থাকলে দাঁতের এনামেল ক্ষয়ে গিয়ে দাঁতে ছোপ ধরে যায়। অনেক সময় বেশি ওষুধ খেলে পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া হিসেবে দাঁতে কালো ছোপ পড়তে পারে। চোট লেগে দাঁতের রঙ বদলে কালচে বা নীলচে হয়ে গেলে দ্রুত চিকিৎসা করানো দরকার। ব্যথা থাকে না বলে কেউই প্রথমে খেয়াল করেন না। কিন্তু পরবর্তী কালে দাঁতের রঙ পাল্টে যাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে ভোগান্তিও কম হয় না।

আরও পড়ুন:ইলিশে জব্দ হার্ট অ্যাটাক-স্ট্রোক-স্নায়ু রোগ, আর কোন মাছে জেনে নিন​

রেগে গেলে দাঁতে দাঁত ঘষা অনেকের বদ অভ্যেস। এর থেকেও এনামেল ক্ষয়ে গিয়ে দাঁতের রঙ বদলে যায়। অনেকেই টুথ পিক বা ফ্লস ব্যবহার করেন। কিন্তু এক্ষেত্রে একবার অন্তত ডেন্টাল সার্জেনের পরামর্শ নেওয়া উচিত। লক্ষ্য করে দেখবেন অল্প বয়সিরা কিন্তু এগুলি ব্যবহার করে না। যখনই টুথপিক ব্যবহারের প্রয়োজন হবে বুঝবেন দুটি দাঁতের মধ্যবর্তী ফাঁক বেড়ে গিয়েছে। তাই কোনও সমস্যা থাকুক না থাকুক বছরে অন্তত একবার ডেন্টাল সার্জেনের কাছে যেতে হবে, পরামর্শ শুভঙ্করের।

একটা ব্যাপারে অনেকের খুব অনীহা আছে, তা হল স্কেলিং। অনেকেই ভাবেন, স্কেলিং করলে হয়ত দাঁত পাতলা হয়ে যায়। কিন্তু ঝকঝকে ও স্বাস্থ্যোজ্জ্বল দাঁত পেতে গেলে বছরে একবার স্কেলিং করা আবশ্যক। দাঁতে পোকা অর্থাৎ ক্যাভিটি থাকলেও দাঁত কালো হয়ে যেতে পারে। আগে তার চিকিৎসা করাতে হবে। এবড়োখেবড়ো বা ভাঙা দাঁতও নিমেষে সমান করে দেওয়া যায়। এ ছাড়া বিশেষ পদ্ধতিতে ‘টুথ-হোয়াইটেনিং’ করা হয়।

আরও পড়ুন:ঘুমের মধ্যে হঠাৎ মৃত্যু, ‘সাডেন ইনফ্যান্ট ডেথ সিনড্রোম’ ঠেকাতে কী বিষয়ে সতর্ক থাকতেই হবে​

অনেকে নিজে থেকে হোয়াইটেনিং এজেন্টের সাহায্যে দাঁত সাদা করেন। এগুলি মূলত ব্লিচিং এজেন্ট। নিয়মিত ব্যবহারে দাঁতের এনামেল ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে। তাই চিকিৎসকের সাহায্য নেওয়াই বাঞ্ছনীয়। ইদানীং অত্যাধুনিক লেজার দিয়ে দাঁত ঝকঝকে করে দেওয়া হচ্ছে। খরচ তুলনামূলক ভাবে কিছুটা বেশি। তবে পহেলে দর্শনধারী কথাটা দাঁতের জন্য খাটে না, ব্লিচ করে দাঁত সাদা করলেন, এ দিকে শ্বাসে কটূ গন্ধ তার মানেই কোনও সমস্যা আছে। দাঁতের যত্ন নিয়ে ভিতর থেকে ভাল রাখলে হাসি এমনিতেই ঝকঝকে হবে।

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন