এক ধরনের নিরাপত্তাহীনতা থেকে আসে এই আত্মরতির স্পৃহা। ছবি: শাটারস্টক।
ধর্মতলা মানেই জমজমাট ব্যাপার। তার মধ্যে প্রায় সারা বছরই দরদাম করে জামাকাপড় কিনতে কত মানুষই না আসেন! হঠাৎই নজর পড়ল একজোড়া ছেলেমেয়ের দিকে। জবজবে ঘামে ভিজে বেকুব মুখে দাঁড়িয়ে রয়েছে ছেলেটি, মেয়েটি ভিড় কাটিয়ে একের পর এক সেলফি তুলে যাচ্ছে মোবাইল ক্যামেরায়। এ দৃশ্যটি নতুন বা অস্বাভাবিক কিছু নয়। ক্ষেত্র বিশেষে হয়তো চরিত্র বদল হতে পারে। কিন্তু এ কথা অস্বীকার করার উপায় নেই যে, আবিশ্ব মানুষ আত্মরতির শিকার। স্মার্টফোন যেন চোখে আঙুল দিয়ে চিনিয়ে দিচ্ছে তাঁদের।
এ হেন মানুষ প্রায়শই নিজেকে লুকিয়ে রাখেন। কিন্তু নিজের অজান্তে ধরাও দিয়ে ফেলেন। কিন্তু আমরা কী এই ধরনের মানুষকে এড়িয়ে যাব? অথবা রোগটি চিহ্নিত করতে পারলে ত্যাগ করব সমস্ত সংস্রব? মনোবিদরা কিন্তু অন্য কথা বলছেন।
মনোবিদ কাকলি বন্দ্যোপাধ্যায়ের মতে, ‘‘নিউক্লিয়ার ফ্যামিলি, স্মার্টফোন ইত্যাদি মিলিয়ে প্রতিটি মানুষই কমবেশি একা। উল্টো ভাবে বলতে পারি প্রতিটা মানুষই কম বেশি নিজেকেই ভালবাসে। এক ধরনের নিরাপত্তাহীনতা থেকে আসে এই আত্মরতির স্পৃহা। সহজেই নিরাময় করা যায় এই ধরনের অসুখ। প্রয়োজন প্রিয়জনের সাহায্যের হাত।’’
আরও পড়ুন: কেবল নিজেকে ভালবাসেন আপনার সঙ্গী! কী ভাবে বুঝবেন?
সোশ্যাল মিডিয়ার আসক্তি কমানোর চেষ্টা করুন।
কী করলে আপনার প্রিয় মানুষটি এই অসুখ থেকে মুক্তি পাবে? রইল মনোবিদদের পরামর্শ—
আজকের নার্সিসিস্টরা কম বেশি সোশ্যাল মিডিয়া অ্যাডিক্টেড। সোশ্যাল মিডিয়ায় তাঁর পোস্টগুলি সম্পর্কে হালকা মন্তব্য করে যান। কখনই বেশি প্রশংসা বা নীরবতা নয়। আত্মপ্রেমে মগ্ন মানুষটির সামনে কৃতবিদ্য ব্যক্তিদের অবদান নিয়ে মাঝে মধ্যে আলোচনা করতে পারেন। এতে তাঁর মধ্যে কৌতূহল জাগতেই পারে। নিজের বাইরে অন্য কিছুতে তিনি সময় দিতে পারেন। বই, সিনেমা, নাটক, চিত্রকলা, সঙ্গীত ইত্যাদিতে তাঁকে আকৃষ্ট করুন। আত্মপ্রেম থেকে বেরিয়ে আসার এগুলিই দাওয়াই।
আরও পড়ুন: চুলের গোড়ায় ঘাম জমে ফ্যাশন মাটি? এ সব মানলেই মিলবে সমাধান
কখনওই তাঁর ইগোকে আঘাত করবেন না। সেটা বাঁচিয়ে তাঁর সঙ্গে আচরণ চালান। প্রকৃতির অবাধ সৌন্দর্য অনেক সময় দাওয়াই হিসেবে কাজ করে। ছোটখাটো উইকেন্ড ট্রিপ প্ল্যান করুন। নার্সিসিজম খুব বাড়াবাড়ির পর্যায়ে গেলে মনোবিদের সাহায্য নিন। এমন ক্ষেত্রে পরোক্ষ থেরাপির প্রয়োগে কাজ হতে পারে।