প্রতীকী ছবি।
রোজ সকালে মাথাব্যথা নিয়ে ঘুম ভাঙলে মনের কোণে বাসা বাঁধে নানা শঙ্কা৷ ব্রেন টিউমার নয়তো? এমন অনেকে আছেন, যাঁরা জটিল রোগ ধরা পড়লে কী হবে ভেবে পরীক্ষা করানো তো দূরস্থান, ডাক্তারও দেখান না৷ রোগ তলে তলে জটিলতর হয়৷
রোজ সকালে মাথাব্যথা নিয়ে ঘুম ভাঙছে, আর ব্যথার ওষুধ খেয়ে তাকে চাপা দিচ্ছেন কি? তা হলে বিপদ অনিবার্য৷ পেট, কিডনির অবস্থা খারাপ হবে৷ প্রেশার বাড়তে পারে৷ আর যে রোগের কারণে সমস্যা হচ্ছে, বাড়বে তারও প্রকোপ৷
সকালের মাথাব্যথার কারণ
সকালে মাথাব্যথা হয় ওরাতে ঘুমের মধ্যে খুব নাক ডাকলে অবস্ট্রাকটিভ স্লিপ অ্যাপনিয়া সিনড্রোম আছে কিনা তা দেখে নিতে হবে। অতিরিক্ত মানসিক চাপ, উদ্বেগ, অস্থিরতা, শোক–দুঃখ, হতাশা চললে সমস্যা হতে পারে৷ মাইগ্রেনের সঠিক চিকিৎসানাকরেযাঁরাব্যথারওষুধেরউপরভরসাকরেথাকেন, তাঁদের সকালের দিকে সমস্যা হয়৷ কিছু বিশেষ ধরনের ঘুমের ওষুধ, শর্ট অ্যাকটিং স্লিপিং পিলে অনেক সময় হয় এমন৷ অতিরিক্ত চা–কফি খেলে বা হঠাৎ বন্ধ করে দিলে উইথড্রয়াল এফেক্ট হিসেবে সকালে মাথাব্যথা হতে পারে৷ মাথাব্যথা হয় আগের রাতে অতিরিক্ত মদ্যপানের হ্যাং–ওভারেও মাথা ধরে৷ প্রচুর ধূমপান করলেও এক সমস্যা৷ ঘুম কম হওয়া, ভুলভাবে বা ভুল বালিশে শোওয়া থেকে সমস্যা হয়৷ ঠান্ডা লাগা, নাকবন্ধ, আগের দিন একভাবে প্রচুর কাজ করা ইত্যাদি কারণে মাথাব্যথা নিয়ে ঘুম ভাঙতে পারে৷ কিছু বিশেষ ধরনের ব্রেন টিউমারে এ রকম হওয়ার আশঙ্কা আছে৷
আরও পড়ুন: কতটা পরিমাণ নুনে নিরাপদ থাকবে শরীর জানেন?
সমাধান
আশু সমাধান হিসেবে মাথা ও কপালে মালিশ করুন৷ চোখ বন্ধ করে বিশ্রাম নিন৷ ঘুমোতে পারলে কষ্ট কমে যায় অনেক সময়৷ তবে সকালে ঘুম থেকে উঠেই তো আর ঘুমোনো সম্ভব নয়৷কাজেই ব্যথার মলম লাগিয়ে কষ্ট না কমলে এক–আধটা প্যারাসিটামল খেতে পারেন৷ তবে হঠাৎ করে মাথা ব্যথা শুরু হলে ও দিনের পর দিন চলতে থাকলে জীবনযাপনে কোনও বড় পরিবর্তন এসেছে কিনা ভেবে দেখুন৷ এলে তা পাল্টানোর চেষ্টা করে দেখুন কষ্ট কমে কিনা৷ সমস্যা চলতে থাকলে সঙ্গে আর কী কষ্ট আছে দেখে সেই সংক্রান্ত অসুখের জন্য সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকের পরামর্শ নিন৷ সে ভাবে বুঝে উঠতে না পারলে বুঝতে না পারলে নিউরোলজিস্টের পরামর্শ নিন৷
রাতে খুব নাক ডাকলে অবস্ট্রাকটিভ স্লিপ অ্যাপনিয়া সিনড্রোম আছে কি না দেখতে হবে৷ বক্ষরোগ বিশেষজ্ঞের পরামর্শ নিন৷ কিছু ক্ষেত্রে নিতে হতে পারে স্লিপ স্পেশালিস্টের সাহায্যও৷
আরও পড়ুন: আলিয়া ভট্টের মতো ‘নো মেক আপ লুকস’ চাই আপনারও? মেক আপ করুন এই ভাবে
উদ্বেগ, হতাশা ও মানসিক চাপের সমাধান স্ট্রেস ম্যানেজমেন্ট৷ যার মধ্যে বিহেভিয়ারথেরাপি, ব্রিদিং এক্সারসাইজ ও মেডিটেশন অন্যতম৷তবে মাইগ্রেন থাকলে ঠিক সময়ে চিকিৎসা করানো প্রয়োজন। সঙ্গে ব্যথার ওষুধ বন্ধ করে দিতে হবে। ঘুমের ওষুধ থেকে সমস্যা হচ্ছে বলে মনে হলে চিকিৎসককে জানান৷ ওষুধ বদলে দিলে কষ্ট কমে যাবে৷ সব চেয়ে ভাল হয় জীবনযাপনের নিয়ম মেনেএই সব ওষুধ পুরোপুরি বন্ধ করে দিতে পারলে৷
চা–কফি খাওয়ার অভ্যাসও নিয়ন্ত্রণ করতে হবে।
বেশি চা–কফি খাওয়ার অভ্যাস থাকলে হঠাৎ বন্ধ করে দেবেন না৷ প্রথম দিকে কাপের মাপ ছোট করে পরিমাণ একটু করে কমান৷ এতে শরীর অভ্যস্ত হয়ে গেলে দিনে দু’–একবার কম খেয়ে দেখুন কেমন থাকেন ৷
ঘুম কম হওয়া, ভুলভাবে বা ভুল বালিশে শোওয়া থেকে সমস্যা হয়
তারপর আস্তে আস্তে আরও কমাবেন৷ হ্যাং–ওভারের মাথাব্যথা কমাতে কফি ও অ্যাসপিরিনের দাওয়াই ছাড়া আরও অনেক রাস্তা আছে৷ রাতে যাতে ভাল ঘুম হয় সে দিকে খেয়াল রাখুন৷ বিছানা–বালিশের দিকেও নজর দিন৷ শক্ত বা খুব নরম বালিশে ভুলভাবে শুলেও এমন সমস্যা হয়।