— প্রতীকী চিত্র। গ্রাফিক: আনন্দবাজার ডট কম।
এক সময় অবসর যাপনের অন্যতম মাধ্যম ছিল বই। সময়ের সঙ্গে দৈনন্দিন জীবনে অবসরের সংজ্ঞা বদলেছে। সিনেমা বা ওয়েব সিরিজ়ের জন্য রয়েছে ওটিটি। মোবাইলে সমাজমাধ্যম এবং রিলের হাতছানিতে সাড়া দিয়ে সময় ঠিকই কেটে যায়। সময়ের সঙ্গে যেহেতু মানুষের অ্যাটেনশন স্প্যান বা মনোযোগের দৈর্ঘ্য কমেছে, তাই অবসরে বই পড়ার সময়ও এখন অনেকের কাছে নেই। কিন্তু দেখা গিয়েছে, এখনও জ্ঞানার্জন এবং চিন্তাশক্তির বিকাশের জন্য বইয়ের কোনও বিকল্প নেই।
আধুনিক প্রযুক্তির কল্যাণে এখন ই-বুক এবং অডিয়োবুকের চাহিদা বেড়েছে। বিজ্ঞানীদের একাংশের বক্তব্য, মাধ্যম যা-ই হোক না কেন, নিয়মিত বই পড়ার অভ্যাস মস্তিষ্কের সুস্থতা বজায় রাখতে সাহায্য করে। পাশাপাশি, নিয়মিত বই পড়ার ফলে স্মৃতিশক্তি আরও উন্নত হয়। ফলে অ্যালঝাইমার্সের মতো রোগের আশঙ্কা অনেকাংশে কমে যায়। কয়েকটি সহজ পদক্ষেপে নিয়মিত পড়ার অভ্যাস তৈরি করা সম্ভব।
১) ছোট লক্ষ্যমাত্রা দিয়ে শুরু করা উচিত। দিনের মধ্যে বই পড়ার জন্য ১০ থেকে ১৫ মিনিট বরাদ্দ রাখুন। এক বার পড়তে শুরু করলে, তার পর দেখবেন আরও বেশি ক্ষণ ধরে পড়ায় মনোনিবেশ করতে পারছেন।
২) প্রথমেই আকর্ষণীয় কোনও বই দিয়ে পড়া শুরু করতে পারেন। অনেক সময় একঘেয়ে কোনও বই পড়ার প্রতি আকর্ষণ তৈরি করতে পারে না। ফলে বই পড়াতেও ছেদ পড়ে। এ ক্ষেত্রে কোনও জনপ্রিয় থ্রিলার বা রোমাঞ্চকাহিনি আদর্শ হতে পারে।
৩) বই পড়ার সময় মোবাইলটি দূরে রাখুন। সঙ্গে থাকলেও নিষ্ক্রিয় করে রাখুন। তাতে মনোযোগের অভাব হবে না।
৪) বাড়ির বাইরে পা রাখলে সঙ্গে বই রাখতে পারেন। সময়মতো কয়েক পাতা পড়ে নেওয়া যায়। এ ক্ষেত্রে সঙ্গে কোনও ই-বুক রিডারও রাখা যেতে পারে।
৫) পড়ার অভ্যাস তৈরির ক্ষেত্রে বন্ধুদের নিয়ে একটি বৃত্ত তৈরি করা যেতে পারে। কে কী পড়ছেন, তা নিয়ে আলোচনা পরবর্তী বইয়ের সূত্র ধরিয়ে দিতে পারে। অনলাইনে সাম্প্রতিক চর্চিত বইয়ের খোঁজ রাখলেও নতুন বই পড়ার ইচ্ছা তৈরি হতে পারে। অনলাইনে কোনও বুক ক্লাবেও যোগদান করলে সুবিধা হবে।
৬) বছরে ১০০টি বই পড়তেই হবে। পড়ার ক্ষেত্রে লক্ষ্যমাত্রা ছোট হলে, সুবিধা হয়। এক সপ্তাহে ক’টি বই পড়লেন, তা লিখে রাখা যায়। সময়ের সঙ্গে সেই লেখা থেকে নিজের উন্নতি বোঝা সম্ভব।
৭) কোনও বই কিন্তু মাঝপথে পড়া বন্ধও করা যায়। যে বই পড়তে গিয়ে আগ্রহ বা কৌতূহল হারিয়ে যাচ্ছে, সেই বইটি পড়া বন্ধ করে দেওয়াই ভাল। পরিবর্তে অন্য বই পড়া যাতে পারে। পরবর্তী কোনও সময়ে ইচ্ছে হলে পুনরায় ফেলে রাখা বইটি পড়া শুরু করা যায়।