বাড়ির কোনও এক অংশ সাজিয়ে নিন এ ভাবে। দু’দণ্ড বসলেই মিলবে শান্তি। ছবি: সংগৃহীত।
অফিসের কাজ, মিটিং, ডেডলাইন। কাজ শেষ হয় না বাড়িতেও। সেখানেও আছে দায়দায়িত্ব। দিনের শেষে বাড়ি এসে কি মনে হয়, সব ছেড়ে দূরে কোথাও চলে যাবেন, যেখানে রয়েছে শান্তির ঠিকানা?
সকলেই চান, দিনের শেষে এমন কোনও একটি জায়গা, যেখানে দু দণ্ড নিজের মতো বসে থাকা যাবে। যেখানে বসলেই শান্ত হবে মন। শারীরিক ক্লান্তি মিটবে। সেই জন্যই বাড়ির কোনও এক স্থানে বানিয়ে নিতে পারেন ‘জ়েন কর্নার’।
এ এক এমন স্থান, সেখানে যেমন নান্দনিকতা থাকবে, তেমনই থাকবে শান্ত আবহ। থাকবে প্রকৃতির স্পর্শ। মূলত বাড়ির কোনও কোণে বা বারান্দায় এমন স্থান তৈরি করা যায়। ‘জ়েন কর্নার’ তৈরির উদ্দেশ্যই হল বাড়িতে এমন এক পরিবেশ তৈরি করা, যেখানে থাকবে আরামের ব্যবস্থা। সেটি হতে পারে কোনও সোফা, আরামকেদারা বা গদি। সেখানে বসে যেখানে চোখ যাবে, তা মনে আনন্দের অনুভূতি জাগিয়ে তুলবে। কোলাহলহীন এমন এক স্থান হবে সেটি, যেখানে শারীরিক এবং মানসিক ধকল দূর হবে নিমেষে। সময় কাটানো যাবে নিজের সঙ্গে।
ঘরের কোণই হোক শান্তির ঠিকানা। ছবি: সংগৃহীত।
এই ভাবনার নেপথ্যে রয়েছে জাপানি পন্থা। জাপানি দর্শনের বাস্তবায়ন হল ‘জ়েন কর্নার’, যেটি সাজিয়ে তোলা হয় প্রকৃতির স্পর্শে।
স্থান নির্বাচন
প্রথমেই বাড়ির খোলামেলা কিন্তু শান্ত অংশটি বেছে নিন। প্রাকৃতিক আলো-হাওয়ার উপস্থিতি মনের উপর আলোকপাত করে। জায়গাটি কিন্তু সাজাতে হবে সুপরিকল্পিত ভাবে। গাছগাছালির বাড়াবাড়ি নয় বরং প্রাকৃতিক উপকরণ বেছে নিয়ে জায়গাটি এমন ভাবে সাজান, যাতে তা চোখের পক্ষে ক্লান্তিকর না হয়। মাটির টব, গাছের গুঁড়ির কোনও বসার জায়গা, ছোট্ট কোনও ঝর্না, মাটির পাত্রে ভাসানো ফুল দিয়ে জায়গাটি সাজাতে পারেন।
গাছ
বাড়িতে বাগান থাকলে, সেই স্থানও এমন কায়দায় সাজাতে পারেন।
লাকি ব্যাম্বু, স্নেক প্ল্যান্ট, ফার্ন, ফুলের গাছ, পিস লিলি— পছন্দমতো যে কোনও গাছই বেছে নেওয়া যায়। বাড়িতে যদি উন্মুক্ত অঙ্গনে ‘জ়েন কর্নার’ তৈরি করেন সেই সজ্জা এক রকম হবে। আবার খোলা বারান্দা কিংবা বাড়ির একটি কোণ এমন করে যদি সাজান, তার সজ্জা আর একরকম হবে। যে ভাবেই সাজান না কেন, তাতে যেন পরিপাট্য থাকে।
প্রাকৃতিক উপকরণ
জ়েন কর্নার কিন্তু যে কোনও জিনিস দিয়ে সাজানো যায় না। প্রকৃতির সঙ্গে সম্পর্কিত উপকরণই থাকতে হবে সেখানে। মাটির পাত্র, জল, নুড়ি, কাঠের অন্দরসজ্জার জিনিস, পাথর, গাছ, আয়না— এমন জিনিসই বেছে নিতে হবে স্থানটি সাজানোর জন্য। রাখতে পারেন বুদ্ধমূর্তিও।
আবহ
মন শান্ত করার আবহও তৈরি করতে হবে। রাখতে পারেন সুগন্ধী মোম, অয়েল ডিফিউজ়ার, যোগাসনের ম্যাট, রঙিন পতাকা, পদ্ম, টাটকা ফুল।