Rice in Weight Loss Regime

ভাত খেলেও বাড়বে না ওজন! শুধু জানতে হবে, রান্না ও খাওয়ার সঠিক নিয়ম, বলছেন পুষ্টিবিদ

ওজন নিয়ন্ত্রণে রাখার জন্য ভাতের থেকে দূরে থাকার সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেন অনেকে। কিন্তু ওজন কমাতে গিয়ে আদপে কমে যায় আনন্দ। আর সেই সব ভাতপ্রেমীদের জন্য সুখবর দিচ্ছেন পুষ্টিবিদ রেশমী রায়চৌধুরী।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কম ডেস্ক

শেষ আপডেট: ২১ মার্চ ২০২৫ ১৬:০০
Share:

ওজন কমানোর জন্য ভাত বাদ দেওয়ার দরকার নেই। ছবি: সংগৃহীত।

ধোঁয়া ওঠা ভাত। ডাল, ভাজা, মাছ বা মাংস, যা-ই হোক না কেন, আনুষঙ্গিক পদের স্বাদ বাড়িয়ে দেওয়ার ক্ষমতা রয়েছে তার। কিন্তু ওজন নিয়ন্ত্রণের জন্য কিনা এই ভাতের থেকেই দূরে থাকার মতো কঠিন সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেন অনেকে! ওজন কমাতে গিয়ে উল্টে কমে যায় আনন্দ। আর সেই সব ভাতপ্রেমীদের জন্য সুখবর দিচ্ছেন পুষ্টিবিদ রেশমী রায়চৌধুরী।

Advertisement

ভাতও খাবেন, অথচ ওজনও বাড়বে না।

এমন একটি উপায় খুঁজে পেলে মনও ভাল থাকে, স্বাস্থ্যও। কিন্তু মাথায় রাখতে হবে কয়েকটি নিয়ম, যেগুলি মাথায় রেখে ভাত খেলেই তা আর গায়ে লাগবে না।

Advertisement

আনন্দবাজার ডট কমকে রেশমী বললেন, ‘‘ভাতে যে কার্বোহাইড্রেট, বিশেষত স্টার্চের পরিমাণ বেশি, তা নিয়ে সন্দেহ নেই। তা ছাড়া উচ্চ পরিমাণে গ্লাইসেমিক ইনডেক্স (জিআই) থাকায় ওজন এবং ব্লাড সুগার বৃদ্ধি পাওয়ার সম্ভাবনা রয়েছে। কিন্তু ভাত কী ভাবে রান্না হচ্ছে, এবং তার পর কিসের সঙ্গে খাওয়া হচ্ছে, তার উপর নির্ভর করে এই জিআই-এর অঙ্ক কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে। সেগুলি জানা খুব গুরুত্বপূর্ণ।’’

রান্নার পদ্ধতি

ভাত বসানোর আগে চাল ধুয়ে নেন সকলেই। কিন্তু তার পরেই সঙ্গে সঙ্গে গ্যাসে বসিয়ে দেন। তার বদলে আধ ঘণ্টা মতো চাল ভিজিয়ে রাখতে হবে। তার পর সেই জল ফেলে দিয়ে নতুন জলে ভাত বসালে, কিছু পরিমাণ স্টার্চ বেরিয়ে যায় প্রথমেই। অনেকেই প্রেশার কুকারে ভাত রান্না করেন। তাতে ফ্যান গেলে নেওয়ার দরকার পড়ে না। খাটনি কমানোর এই পদ্ধতি মোটেও স্বাস্থ্যকর নয়। বরং ভাতের ফ্যান গেলে নিলে অনেকখানি স্টার্চ বেরিয়ে যায়। ফলে কার্বোহাইড্রেটও কমে যায় এই ধাপেই।

ভাত সব সময় দিনে খাওয়া উচিত, রাতে নয়। ছবি: সংগৃহীত।

খাওয়ার পদ্ধতি

ডাল, শুক্তো, তরকারি, ঝোল, স্যালাড, ইত্যাদির (ভাল পরিমাণ ফাইবার এবং প্রোটিন) সঙ্গে ভাত মেখে খেলে এর গ্লাইসেমিক ইনডেক্স কমতে শুরু করে। কারণ, ভাল করে মেখে খেলে অন্যান্য খাবারের ফাইবারগুলি তাতে মিশে যায়। এতে অপকারের চেয়ে উপকার বেশি। অনেকেই কেবল নুন দিয়ে ফ্যান-ভাত খান। তাতে জিআই কমে না। ক্ষতি বেশি হয়।

খাওয়ার সময়

ভাত সব সময়ে দিনে খাওয়া উচিত, রাতে নয়। দুপুরে ভাত খাওয়ার ক্ষেত্রেও সতর্ক থাকতে হবে। খাওয়ার পর ভাতঘুম দিলে কোনও উপকারই হবে না। দিনের বেলা ভাত খাওয়া ক্ষতিকারক নয়, তার কারণ হল, তার পরে শরীরের নড়াচড়ার সুযোগ রয়েছে। বাড়ির হালকা কাজ হোক অথবা খানিক হাঁটাচলা, ভাতের পর এগুলি খুব দরকার। কিন্তু রাতে সে সবের সুযোগ তেমন থাকে না বলে কার্বোহাইড্রেট ঝরে যাওয়ার সম্ভাবনাও কম। তবে ভাত খাওয়ার সেরা সময়, জিম থেকে ফিরে বা বাড়িতেই শরীরচর্চার পর।

ভাত বসানোর আগে চাল ধোয়ার সঠিক নিয়ম জেনে নিন। ছবি: সংগৃহীত।

কত পরিমাণ খেতে হবে

ওজন কমাতে অথবা নিয়ন্ত্রণে রাখতে চাইলে দিনে ৩০ গ্রাম চালের ভাত রান্না করুন। তার পরিমাণ হবে এক কাপের সমান। এতে মোট ১৫০-১৭০ কিলো ক্যালোরি থাকে।

দিল্লির পুষ্টিবিদ সুরভি আগরওয়াল ভাতের উপকারিতার কথা জানালেন। তাঁর কথায়, ‘‘ভাত ভিটামিন বি-এর অন্যতম উৎস এবং এতে ফলিক অ্যাসিড, ম্যাগনেশিয়ামও রয়েছে। অন্ত্র এবং ত্বকের জন্যেও উপকারী। ভারতে বিভিন্ন ধরনের চাল পাওয়া যায়। যেমন, কালো চাল, যা অ্যান্টিঅক্সিড্যান্টে ভরপুর। তা ছাড়া বাদামি চাল ফাইবারে সমৃদ্ধ। এবং লাল চালে প্রদাহবিরোধী বৈশিষ্ট্য রয়েছে। এটির জন্য ভাত ক্যানসার রোধের ক্ষমতা রাখে।’’

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
আরও পড়ুন
Advertisement
Advertisement