Morning Walk

হাঁটাহাঁটির অভ্যাসকে মজাদার বানাবেন কী ভাবে?

হাঁটতে উৎসাহিত করার নানা রকম প্রক্রিয়া আছে, তবে সবার আগে দরকার নিজের ভালটা বোঝা। যদি আমরা বুঝতে পারি, কেন এই হাঁটা গুরুত্বপূর্ণ, তবে সেই বোধই আামাদের রোজ হাঁটতে উৎসাহ যোগাবে।

Advertisement

নিজস্ব সংবাদদাতা

কলকাতা শেষ আপডেট: ১১ জানুয়ারি ২০২১ ১৮:৫৮
Share:

হাঁটাহাঁটিতে একঘেয়েমি কাটানোর আছে অনেক উপায়। —ছবি: শাটারস্টক

পায়ে পায়ে এগিয়ে গেলেই পিছিয়ে পড়ে অনেক সমস্যা। কোলেস্টেরল, হৃদরোগ, রক্তে শর্করা, স্ট্রোকের মতো স্বাস্থ্যের খলনায়করা দূরে থাকে শরীর থেকে। হাঁটাহাঁটির নিয়মিত অভ্যাস যে ভাল, সে তো অল্পবিস্তর সবাই জানে। কিন্তু, সমস্যা বাধে হাঁটাহাটির অভ্যাসকে নিয়মিত ভাবে বজায় রাখার সময়েই। সকাল হোক বা সন্ধে, বাড়ির ছাদ হোক বা পার্কের রাস্তা— সময়, সুযোগ থাকলেও দেখা যায়, হাঁটার ইচ্ছেতেই হচ্ছে যত গোলমাল।

Advertisement

এক একা হাঁটা একঘেয়ে মনে হতেই পারে। কিন্তু সেটাই ভেবে বসে থাকলে, দু’দিনে মোটিভেশনে চিড় ধরবে। হার্ভার্ড মেডিক্যাল স্কুলের স্বাস্থ্য পত্রিকার পরামর্শ, হাঁটাহাঁটিকে একঘেয়ে ভাবলে চলবে না। দরকারে নিজেকেই মজাদার বানিয়ে নিতে হবে। কিন্তু, কী ভাবে?

অস্থিরোগ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক গৌতম সাহার মতে, নিজেকে হাঁটতে উৎসাহিত করার নানা রকম প্রক্রিয়া আছে, তবে সবার আগে দরকার নিজের ভালটা বোঝা। যদি আমরা বুঝতে পারি, কেন এই হাঁটা আমাদের হার্টের জন্য গুরুত্বপূর্ণ, জোরে হাঁটা বা ব্রিস্ক ওয়াক আমাদের হার্টের পেশীকে কতটা ভাল রাখতে পারে, তবে সেই বোধই আামাদের রোজ হাঁটতে উৎসাহ যোগাবে। তবে তার পাশাপাশি হাঁটার অভিজ্ঞতাকে মজাদার বানিয়ে তোলার চেষ্টা চালালে মন্দ হয় না।

Advertisement

হাঁটতে হাঁটতে ব্যায়াম

খেলাচ্ছলেই করা যায়। হালকা চালে হাঁটায় কিছুক্ষণের জন্য যোগ করুন একটু বেশি দ্রুততা। ১৫ থেকে বড়জোর ৬০ সেকন্ড। তার পর আবার ফিরে আসুন আগের গতিতে। ঘড়ির সময় ধরে এ ভাবে হাঁটতে অসুবিধা হলে আর রাস্তায় বা পার্কে হাঁটলে ঠিক করে নিতে পারেন নির্দিষ্ট একটা জায়গা। দু’টো বাড়ি বা সামনের চারটে গাছ— যা খুশি হতে পারে। ওইটুকু রাস্তা থাকুক কার্ডিও বা দ্রুতগতির ব্যায়ামের জন্য। হয়তো হাঁপিয়ে যাবেন, তাতে ক্ষতি নেই। হাঁফ ছাড়ার জন্য সময় বাড়াতে পারেন। অর্থাৎ দ্রুতগতিতে হাঁটা বা দৌড়নোর জন্য যদি ১ মিনিট বরাদ্দ করে থাকেন, তবে ধীরগতিতে ২ মিনিট বা ৪ মিনিটও রাখতে পারেন। বা দু’টো বাড়ি পর্যন্ত যদি জোরে হাঁটেন তবে সাধারণ গতিতে হাঁটতে পারেন চারটে বাড়ি পর্যন্ত। এতে একই গতিতে হাঁটাহাটির একঘেয়েমি যেমন কাটবে, তেমনই বেশি কার্যকরী হবে হাঁটার উপযোগ।

সামনে রাখুন চ্যালেঞ্জ

ছোটবেলার স্কুল রেসের কথা মনে আছে? সময় শুরু আর সময় শেষে বেজে উঠত হুইসল। প্রত্যেক দিনের হাঁটাহাঁটিকেও ভেবে নিন খানিকটা স্কুল রেসের মতোই। প্রত্যেক দিনই নতুন নতুন লক্ষ্য স্থির করুন। আর তার জন্য বেঁধে নিন একটা নির্দিষ্ট সময়। ওই সময়ে ওই লক্ষ্যে পৌঁছতে পারলে দেখবেন, নিত্যদিনের একঘেয়ে হাঁটাহাঁটি অনেক বেশি চিত্তাকর্ষক হয়ে উঠেছে।

শ্বাসের ছন্দে পা ফেলুন

নিঃশ্বাস প্রশ্বাসের সঙ্গে মিলিয়ে ফেলুন পদক্ষেপ। শ্বাস নেওয়ার সময় ৪ পা ফেলুন, শ্বাস ছাড়ার সময় আরও ৪ পা। ধীরে ধীরে শ্বাস প্রশ্বাসের লয় কমলে প্রতি শ্বাসে পদক্ষেপের সংখ্যা বাড়ান। হার্ভার্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের স্বাস্থ্য সচেতনতা সংক্রান্ত পরামর্শদাতা মাইকেল স্টানটেন জানাচ্ছেন, এই প্রক্রিয়ায় মন শান্ত থাকে। আবার যেহেতু একটা বিশেষ দিকে মনযোগ থাকছে, তাই একঘেয়েও লাগে না।

নজর আর অনুভূতি

সামনে তাকিয়ে হনহনিয়ে হাঁটা নয়। চারপাশ দেখুন। প্রাতঃভ্রমণ হলে গায়ে মুখে রোদের স্পর্শের অনুভূতি নিন। পার্কে গাছের পাতার সরসরানি, পাখির ডাক সবটুকু আত্মস্থ করুন। হালকা হাওয়া ছুঁয়ে যেতে দিন শরীরকে। একঘেয়েমি কাটতে বাধ্য।

হাঁটতে হাঁটতে কথা

কারও সঙ্গে কথা বলার থাকলে, ইনফরমাল মিটিং বা ডেটিং থাকলে একটু স্বাস্থ্যকর অভ্যাস জুড়ে দেওয়া যেতে পারে তাতে। বেঞ্চে বসে নয়, হাঁটতে হাঁটতেই গল্প করুন। বা সেরে নিন গুরত্বপূর্ণ কথা। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, হাঁটলে শরীর আরামে থাকে। মনও থাকে শান্ত। তাই গুরুত্বপূর্ণ কথাবার্তা বলার সময় হাঁটলে তা মাথা ঠান্ডা রাখতে সাহায্য করবে।

তবে এ সবের পাশাপাশি, যাঁরা একেবারেই বাড়ি থেকে বেরতে চান না, চিকিৎসক গৌতম সাহার মতে, তাঁদের জন্য দরকার উৎসাহ দেওয়ার মতো মানুষ। যাঁরা হাঁটার জন্য, হাঁটতে যাওয়ার জন্য মুখে বলে আগ্রহ জাগাবেন তাঁদের মনে।

আরও পড়ুন : কোভিড পরিস্থিতিতে বেড়ানো, কী কী বিষয় মাথায় রাখবেন

আরও পড়ুন : বার্ড ফ্লুর ভয়ে ডিম বা চিকেন খাওয়া বন্ধ নয়

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন