দুঃখে মরে যাচ্ছি— এই কথাটা আমরা বহু ক্ষেত্রেই শুনে থাকি।
দুঃখে মরে যাচ্ছি— এই কথাটা আমরা বহু ক্ষেত্রেই শুনে থাকি। সম্পর্ক ভেঙে যাওয়া, প্রিয়জন বিয়োগের যন্ত্রণা আমাদের সকলকেই সহ্য করতে হয়। সময়ের প্রলেপে সেই কষ্ট এক সময় কাটিয়েও উঠি আমরা। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে মানিয়ে নিলেও কিছু কিছু গভীর ক্ষত থেকেই যায় মনে। যে মানসিক কষ্ট ধরা প়ড়ে শারীরিক সমস্যার মধ্যে দিয়ে। যা মৃত্যুরও কারণ হয়ে উঠতে পারে বলে জানাচ্ছেন মনোবিদরা।
মনোকষ্টে অনেক হাই প্রোফাইল মানুষ মৃত্যুর উদাহরণও কিছু কম নয়। ২০১৬-র ডিসেম্বরে অভিনেত্রী কেরি ফিশারের মৃত্যুর কিছু দিন পরই হৃদরোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যান তাঁর মা ডেবি রেনল্ডস। নিউ ইংল্যান্ড জার্নাল অব মেডিসিনে প্রকাশিত রিপোর্ট অনুযায়ী, সম্প্রতি টেক্সাসেও এই ঘটনার উদাহরণ মিলেছে। প্রিয় পোষ্যের মৃত্যুশোকে হার্ট অ্যাটাকে মারা গিয়েছেন এক মহিলা।
আরও পড়ুন: বিয়ের আদর্শ বয়স কত জানেন? সমীক্ষা বলছে...
এই ধরনের ঘটনা ঘটার প্রবণতাকে চিকিত্সকরা তাকোতসুবো সিন্ড্রোম বা তাকুতসুবো কার্ডিওমিওপ্যাথি নামে চিহ্নিত করেছেন। জাপানি ভাষায় যার অর্থ অক্টোপাস ট্র্যাপ। অর্থাত্, যে পরিস্থিতি বা অবস্থা মানুষের হৃদপিণ্ডকে অক্টোপাসের মতো আষ্টেপৃষ্ঠে জড়িয়ে ধরে। সাধারণ ভাবে হার্ট অ্যাটাকের ক্ষেত্রে ধমনীতে ব্লাড ক্লট তৈরি হয়, যা রক্ত সঞ্চালনে বাধা দেয়। যার ফলে হৃদপিণ্ডে অক্সিজেন সরবরাহ কমে যায়। কিন্তু তাকোতসুবো সিন্ড্রোমের ক্ষেত্রে প্রচুর ব্লাড ক্লট তৈরি হয়।
এ ক্ষেত্রেও শ্বাস ছোট হয়ে আসা, উচ্চ রক্তচাপ, বুকে ব্যথার মতো হার্ট অ্যাটাকের সাধরণ লক্ষণগুলোই দেখা দেয়। ২০০৫ সালে নিউ ইংল্যান্ড জার্নাল অব মেডিসিনে এই ধরনের ১৯টি ঘটনা প্রকাশিত হয়। যার মধ্যে ১৮ জনই ছিলেন মহিলা। অতিরিক্ত ট্রমার কারণে রক্তে স্ট্রেস হরমোনের ক্ষরণ হয়। যার ফলে হৃদপিণ্ডের পেশী দুর্বল হয়ে পড়ে। এই সময় হার্ট দেখলে মনে হবে যেন নিংড়ে ছোট করে দেওয়া হয়েছে।
আরও পড়ুন: গায়ে দুর্গন্ধ কিন্তু জানান দেয় অনেক সমস্যা
তাকোতসুবো সিন্ড্রোম যে কোনও সময় যে কোনও মানুষের ক্ষেত্রে দেখা দিতে পারে। বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই রোগী কয়েক সপ্তাহের মধ্যে এই সমস্যা কাটিয়ে উঠতে পারলেও অনেক সময়ই সমস্যা ভয়াবহ হয়ে উঠতে পারে। যে কোনও বয়সেই এই সমস্যা হলেও গবেষকরা জানাচ্ছেন, মূলত বয়স্ক মহিলাদের ক্ষেত্রেই তা সবচেয়ে গুরুতর আকার ধারণ করতে পারে।