বাড়িতে একা, হঠাত্ হার্ট অ্যাটাক! জেনে নিন কী করবেন

হার্ট অ্যাটাক। কথাটা শুনলেই মনে জন্ম নেয় আতঙ্ক। হার্ট অ্যাটাক সম্পর্কে ভয় কাটিয়ে সচেতনতা বাড়ানোর প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গিয়েছে অনেক আগেই। সোশ্যাল নেটওয়ার্কে মাঝে মাঝে শোনা যায় বিপদ কাটাতে সেলফ CPR(জোর করে কেশে নিজেকে জাগিয়ে রাখা)-এর কথা। কিন্তু ব্যাপারটা সত্যি কতটা কার্যকর? বিশ্লেষণ করলেন খ্যাতনামা হার্ট সার্জেন ডা কুনাল সরকার এবং ইন্টারভেনশনাল কার্ডিওলজিস্ট ডা দিলীপ কুমার।

Advertisement
নিজস্ব প্রতিবেদন শেষ আপডেট: ০৪ ফেব্রুয়ারি ২০১৬ ১০:৩৮
Share:

হার্ট অ্যাটাক। কথাটা শুনলেই মনে জন্ম নেয় আতঙ্ক। হার্ট অ্যাটাক সম্পর্কে ভয় কাটিয়ে সচেতনতা বাড়ানোর প্রক্রিয়া শুরু হয়ে গিয়েছে অনেক আগেই। সোশ্যাল নেটওয়ার্কে মাঝে মাঝে শোনা যায় বিপদ কাটাতে সেলফ CPR(জোর করে কেশে নিজেকে জাগিয়ে রাখা)-এর কথা। কিন্তু ব্যাপারটা সত্যি কতটা কার্যকর? বিশ্লেষণ করলেন খ্যাতনামা হার্ট সার্জেন ডা কুনাল সরকার এবং ইন্টারভেনশনাল কার্ডিওলজিস্ট ডা দিলীপ কুমার।

Advertisement

হার্ট অ্যাটাকের উপসর্গ-

নিশ্বাসের কষ্ট বুকে পাথর চাপিয়ে দেওয়ার মতো ভারী ভাব দরদর করে ঘাম বুকের কষ্ট ক্রমশ হাত, কাঁধ ও চোয়ালে ছড়িয়ে পড়া অনেকে অজ্ঞানও হয়ে যেতে পারেন কী করবেন- এই ধরনের লক্ষণ শুরু হলে রোগীকে অ্যাসপিরিন বা সরবিট্রেট জাতীয় ওষুধ দিন। সময় নষ্ট না করে যত তাড়াতাড়ি সম্ভব কাছের হাসপাতাল বা নার্সিং হোমে নিয়ে যান। যদি মানুষটি জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন, তবে প্রথমে তার পালস দেখে নিয়ে কার্ডিও পালমোনারি রিসাসিটেশন বা CPR করতে হবে। CPR এর প্রশিক্ষণ নেওয়া থাকলে ভাল, না হলে বিশেষ পদ্ধতিতে বুকের উপর থেকে পাম্প করে মুখে ফু দিয়ে কৃত্রিম ভাবে শ্বাস-প্রশ্বাস চালু করতে হবে।

Advertisement

রোগী যখন বাড়িতে একা-

শুয়ে থাকুন- অনেকে বলেন বুকে বাথ্যা ও নিঃশ্বাসের কষ্ট শুরু হলে জোর করে কেশে কফ বার করার চেষ্টা করলে অনেক বড় বিপদ থেকে বাঁচা যায়। কিন্তু মেডিক্যাল সায়েন্স এই ব্যাপারে এখনও বিশ বাঁও জলে। দেখা গেছে কয়েকটি ক্ষেত্রে কিছুটা উপকার পেলেও ডায়াফ্রেম এ চাপ পড়ে হিতে বিপরীত ফল হবার সম্ভাবনা থাকে। বুকে ব্যথা হলে শুয়ে পড়লে কিছুটা কষ্ট কম হয়। সঙ্গে অ্যাসপিরিন বা সরবিট্রেট জাতীয় ওষুধ ব্যবহার জটিলতার ঝুঁকি কিছুটা কম করতে পারে। সতর্ক হন- অধিকাংশ মানুষই ভাবতে পারেন না যে তাঁর হার্টের কোনও অসুখ হয়েছে। অ্যাসিডিটির সমস্যা মনে করে অ্যান্টাসিড খেয়ে অপেক্ষা করেন। এতে কিন্তু জটিলতা বাড়ে। জেনে রাখুন আমাদের হৃৎপিণ্ড প্রত্যেক দিন এক লক্ষ বার পাম্প করে। এক জন ৬০ বছর বয়সী মানুষের হৃৎপিণ্ড তিনশ কোটি বার পাম্প করেছে। চোখ, কান, ফুসফুস বা কিডনির মতো আমাদের দু’টো হার্ট নেই। সেলফ মেডিকেশন- হার্টের সমস্যায় সেলফ মেডিকেশন মারাত্মক হতে পারে। হার্টের অসুবিধে হলে অবশ্যই বাড়ির কাছের চিকিৎসক বা হাসপাতালে গিয়ে প্রাথমিক চিকিৎসা শুরু করা দরকার। এই সময় নামী ডাক্তারবাবুর জন্যে অপেক্ষা করতে গিয়ে সময় নষ্ট না করাই বাঞ্ছনীয়।

কিছু প্রয়োজনীয় তথ্য-

আরামপ্রিয়তা আর পরিশ্রম বিমুখতার ফলে হার্টের অসুখ আমাদের দেশে প্রায় মহামারীর আকার নিতে চলেছে। তিরিশ ঊত্তীর্ন তরুণদের মধ্যেও আচমকা হার্ট অ্যাটাকের ঘটনা দেখা যাচ্ছে। অনেক ক্ষেত্রে হাসপাতালে পৌঁছনোর আগেই রোগীর হৃৎপিণ্ড চিরতরে থেমে যায়। অথচ একটু সতর্ক হলেই আচমকা মৃত্যু রুখে দেওয়া যায়। প্রত্যেক জেলা ও গ্রামের হাসপাতালে বা ছোট নার্সিং হোমে থ্রম্বোলিটিক থেরাপি করে তাৎক্ষণিক ভাবে পরিস্থিতি সামলে বড় হাসপাতালে রোগীকে নিয়ে গেলে প্রাণ বাঁচানো সহজ হয়। যাদের ইস্কিমিয়া আছে বা একবার হার্ট অ্যাটাক এর পর বাইপাস সার্জারি হয়েছে অনেক সময় তাদের বারে বারে হার্ট ফেলিওর হয়। এ ক্ষত্রে সি আর টি ডিভাইসের সাহায্যে রোগীদের প্রাণ বাঁচানো সম্ভব। হার্টের অসুখই হোক বা ডায়বিটিস, এ সবই বদঅভ্যাসের কারণে হয়। যে নিয়মগুলো মেনে চলা উচিত্-

ধূমপান ত্যাগ করুন

ওজন ঠিক রাখতে নিয়মিত কিছু ব্যায়াম অথবা মর্নিং বা ইভিনিং ওয়াক করুন ফাস্ট ফুডের বদলে টাটকা, বাড়িতে রান্না খাবার খান, ফল খান অকারণে টেনশন করবেন না চল্লিশ বছর পেরনোর পর বছরে অন্তত একবার রুটিন কিছু টেস্ট করিয়ে রাখুন। মন ভাল রাখুন, ভাল থাকুন।

আরও পড়ুন: হার্ট অ্যাটাকের পর নিচুতলায় থাকাই ভাল

(সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের Google News, X (Twitter), Facebook, Youtube, Threads এবং Instagram পেজ)

আনন্দবাজার অনলাইন এখন

হোয়াট্‌সঅ্যাপেও

ফলো করুন
অন্য মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement
আরও পড়ুন